গাজীপুরের শ্রীপুরে আসামি ধরতে গিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও স্থানীয় লোকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের ১০টি পরিবার।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
পুলিশ অবশ্য দাবি করছে, আসামি ধরতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে গ্রামবাসী। ঘটনার পর থেকে ওই গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে শিশু-কিশোর এবং নারী ছাড়া কেউ নেই। নারীরা বলছেন, পুলিশের ভয়ে অধিকাংশ পরিবারের পুরুষরা গ্রাম ছেড়েছেন।
ফরিদপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের দুই কিশোরী মেয়ে জানায়, শনিবার রাত ১টার দিকে ইউনিফর্ম পরিহিত বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমে ডাকাত ভাবলেও পরে পোশাক দেখে পুলিশ সদস্য নিশ্চিত হয়।
আলমগীর হোসেনের স্ত্রীর ভাষ্য, পুলিশ দেখে গেটের তালার চাবি আনতে রুমে যাই। চাবি নিয়ে এসে দেখি পুলিশ শাবল দিয়ে গেটের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে। এরপর আমাদের মারধর করে স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়।
ওই গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়ির মনির হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, গভীর রাতে বাইরে লোকজনের চেঁচামেচি শুনে বের হই। এ সময় পুলিশ আমাদের ধাওয়া দিয়ে ঘরে যেতে বলে। রাত ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত চারবার আমাদের বাড়িতে আসে পুলিশ। গ্রামের কয়েকটি বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আলনা, ফ্রিজ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে অসুস্থ ছেলে জুবায়ের হোসেনকে (১২) বিছানা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামায়। তারা রান্না ঘরের চারটি চুলা, পানির কল ভেঙে ঘরের জিনিসপত্র ফেলে দেয়। কথা বললে আমাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, শ্রীপুর থানার এএসআই শাহীনুর ইসলাম এবং এসআই নাজমুল হক কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও তাদের সোর্স মাসুদ এবং মামুনকে নিয়ে আমার বাড়িতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ আমার বাড়িতে কোনও আসামি নেই। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
স্থানীয় লাইছুদ্দিনের বাড়িতে বেড়াতে আসা শামসুন্নাহার বলেন, পুলিশ পরিচয়ে রাত ১২টার দিকে গেটের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে ইসহাক নামে স্থানীয় এক কারখানা শ্রমিককে পিটিয়ে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে আমাদের বাড়ির সব পুরুষ এলাকার বাইরে রয়েছে। পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা।