ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’-এর বিরোধিতায় দেশটিতে বিক্ষোভ, জ্বালাও-পোড়াও, সহিংসতা চলছেই। রাজপথের প্রতিবাদ-আন্দোলন এবার গড়িয়েছে আদালতে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে তিনটি রিট মামলা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রকল্পকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক দাবি করে জনস্বার্থে এটি বন্ধের আদেশ চেয়েছেন আবেদনকারীরা। তবে আদালতে পাল্টা আবেদনও করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষ থেকে করা আবেদনে বলা হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছা কিংবা আদেশ দেওয়ার আগে কেন্দ্রের বক্তব্য শোনা হোক।

অগ্নিপথের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ভারতের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রতিদিনই নতুন নতুন নোটিশ জারি করছে। তিন বাহিনীর পক্ষে বলা হচ্ছে- এ পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার সুযোগ নেই; বরং কত দ্রুত নিয়োগ শুরু করা যায় এবং আরও কী কী সুবিধা বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির নৌবাহিনীর চিফ অব পার্সোনাল ভাইস অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপথি জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়া আজ বুধবারই শুরু করছেন। তবে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হবে ১ জুলাই। এর আগে সোমবার এই প্রকল্প সমর্থন করে নরেন্দ্র মোদি বক্তব্য দেওয়ার পর সিদ্ধান্তটি দ্রুত কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা করতে তিন বাহিনীর প্রধানরা তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানানো হয়।

ভারতের তরুণ-তরুণীদের সশস্ত্র বাহিনীতে চার বছর প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন অ্যাডভোকেট মনোহর লাল শর্মা। প্রকল্পটি বাতিল চেয়ে তিনি ‘পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন’ দায়ের করেন। এর আগে চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতার ঘটনা তদন্তে বিশেষ কমিটি গঠন এবং সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও প্রকল্পের যথার্থতা যাচাইয়ের দাবি জানিয়ে দুটি আবেদন করেন অ্যাডভোকেট বিশাল তিওয়ারি ও হর্ষ অজয় সিংহ।

চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগ ঠেকাতে আদালতের ভেতরে-বাইরে মোদি সরকার ও আন্দোলনকারীদের লড়াই চললেও এ প্রকল্পের পক্ষে সাফাইমূলক প্রতিশ্রুতির যেন পাহাড় তৈরি হচ্ছে। বিজেপি-সমর্থিত রাজ্য সরকারগুলো ছাড়াও চার বছর সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করা তরুণ-তরুণীদের চাকরির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের অঙ্গীকার করছে বেসরকারি বড় বড় প্রতিষ্ঠান।

গত ১৪ জুন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, অগ্নিপথ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের নারী-পুরুষরা চার বছরের জন্য সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীতে চাকরি পাবেন। তাঁদের মূলত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ সময় তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপি বেতন এবং চার বছর পর ১১ থেকে ১২ লাখ রুপি এককালীন অর্থ দেওয়া হবে। তাঁরা উপাধি পাবেন ‘অগ্নিবীর’। তবে ২৫ শতাংশের বেশি প্রশিক্ষণ পাওয়া তরুণের চাকরি স্থায়ী হবে না, এমনকি তাঁরা পেনশন বা গ্র্যাচুইটিও পাবেন না। সূত্র :ইয়ন নিউজ, আনন্দবাজার, জি নিউজ।

Related posts

দাওয়াতে গিয়ে ক্ষোভের আগুন জ্বাললেন সাকিবরা

News Desk

স্ন্যাপচ্যাটে স্টোরিজ দেখানোর সময় নির্ধারণের সুযোগ

News Desk

পেরুতে সারের বিকল্প এখন পাখির মল

News Desk

Leave a Comment