দেশ এবং অঞ্চল ভেদে মানুষের খাবারের তালিকায় রয়েছে হরেকরকম নাম না জানা খাবার। শাকসবজি ও শস্য থেকে শুরু করে ফল শুধু যে ক্ষুধা মেটায় তা কিন্তু নয়, শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে শরীর সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে। আম, জাম, কাঁঠালের পাশাপাশি আজ বিদেশের কিউই, স্ট্রবেরি খুব প্রিয় ও সহজলভ্য হয়ে আমাদের কাছেও।

তবে কালের পরিক্রমায় অনেক ফলই আজ শুধু ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যায়। হাজার বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ফল মেডলার নামটি জানেন? মধ্যযুগে অদ্ভুত এই ফল খুব প্রিয় ছিল ইউরোপীয়দের কাছে। পচা অবস্থায় খেতে হতো এই ফলটি। পড়েই অদ্ভুত লাগলো তাই না?

২০১১ সালে এক রোমান ধ্বংসাবশেষের শৌচাগার থেকে এই বিশেষ ফলটির বীজ পাওয়া গিয়েছিলো। প্রায় ২ হাজার বছর পুরোনো হলেও এই ফলের বীজসহ অন্যান্য আরো অনেক ফল পাওয়া গিয়েছে খননকার্যের মাধ্যমে। ৯০০ বছর আগে এটি নাকি পরিচিত ছিল ‘উন্মুক্ত পশ্চাদ্দেশ’ নামে। ফলটি রোমানরা নাকি দক্ষিণ ফ্রান্স ও ব্রিটেনে নিয়ে এসেছিল। মধ্যযুগীয় মঠ ও রাজকীয় বাড়িগুলোর পাশাপাশি সাধারণ বাড়ির বাগানেও এই ফলের গাছ দেখতে পাওয়া যেত।

সতেরো শতকের প্রথম দশকে ফলটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ১০৫০ এর দশকে আচমকা ফলটি যেন হারিয়র যায়। মধ্যযুগে শীতকালে চিনির উৎস কম থাকায় এই ফলটিকে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার চল ওঠে। গাছ থেকে পাড়ার পর মিহি কাঠের গুঁড়া বা খড়ের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ রেখে দেওয়া হলে সেটি ধীরে ধীরে কালো ও শক্ত হয়ে যায়। এ সময় মূলত ফলের এনজাইমগুলো জটিল কার্বোহাইড্রেটকে ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ জাতীয় সরল শর্করা হিসাবে ভেঙে যায়। মেডলার পরিণত হয় অদ্ভুত স্বাদযুক্ত মিষ্টি ফলে।

অভিজাতদের খাবার টেবিলে পনিরের সঙ্গে এটিকে পরিবেশন করা হতো। মেডলারকে বেক করে জ্যাম, জেলি বানানো যেত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই মানুষের চাহিদা থেকে হারিয়ে যেতে থাকে মেডলার ফল। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা যায় যে কলা ও আনারসের মতো গ্রীষ্মকালীন ফলগুলো সস্তা হয়ে যায় এবং সারা বছর ধরে এর চাষ হতে শুরু হয়।

Related posts

রংধনু কী? কেন রংধনু সৃষ্টি হয়?

News Desk

আমরা হাই তুলি কেন?

News Desk

ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং কি? কিভাবে ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং করবেন?

News Desk

Leave a Comment