কিছু মানুষের কাছে বাড়ি মানে চার দেয়ালে ঘেরা আবাস। আবার কিছু মানুষ আছেন, যারা বেশ শৌখিন। সুযোগ আর অর্থ পেলেই নিজের বাড়িটিকে অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা করে তৈরি করেন। এত সাধের আর স্বপ্নের একটি বাড়ি বানানোর পর, সবচেয়ে বেশি চিন্তায় থাকে বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে। কারণ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি না বলে-কয়েই সুন্দর বাড়ি দেখলে হানা দেয়। তারপর নিজের মনে করে জিনিসপত্র নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়! তাই রাখতে হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আবার কিছু মানুষ আছেন যাদের বাড়িগুলো অন্য দশটা বাড়ির মতো নয়। এসব বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ির মালিকরা মোটামুটি এলাহি কাজকারবারের আয়োজন করেন! গল্প-সিনেমায় এরকম ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায়। দক্ষ ডাকাতদের লক্ষ্যই থাকে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে এমন বাড়িতে প্রবেশ করা। তারপর দামি কোনো সম্পদ নিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যাওয়া। বাস্তবেও এমন ঘটনা খুব বিরল নয়। তবে এরকম মানুষগুলো অবশ্যই সমাজের উঁচু শ্রেণীর কিংবা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যার কারণে নিরাপত্তার ব্যাপারগুলোতে তাদের বাড়তি সতর্কতা। তবে আজকের লেখায় রাষ্ট্রীয় প্রধানদের বাদ দিয়ে কেবল ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িগুলো সম্পর্কেই জানবো।

১. ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি ম্যানশন :

আমেরিকার সবুজে ঘেরা কলোরাডো অঙ্গরাজ্যটি পাহাড় আর বর্ণিল গাছগাছালিতে ভরা। এরই একটা কোণে দাম্ভিকতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক অতিকায় বাড়ি। মোট বত্রিশ একর জুড়ে গড়ে তোলা এই বাসস্থানটি তৈরি করতে সর্বমোট নয় বছর সময় লেগেছিল। যার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এর নামের মতো করে সাজানো হয়েছে। ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য নামটাই এক সতর্কবার্তা।

বাড়ির মূল দরজাটি ৬৫০ পাউন্ড ওজন বহন করে এক দুর্ভেদ্য দেয়াল তৈরি করেছে, যেটি যেকোনো বড় হামলা সামাল দিতে প্রস্তুত! আক্ষরিক অর্থেই, দরজাটি বোমা কিংবা ব্যালাস্টিক হামলার পরও টিকে যাবে। বাড়ির ভেতর-বাইরে সবখানে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক ক্যামেরা। যেগুলো সার্বক্ষণিক আশপাশে নজর রাখছে। এছাড়া একটি নির্দিষ্ট সীমানার ভেতর মানুষের উপস্থিতি পেলে হিট সেন্সর সচল হয়ে যাবে। কেউ যদি বাড়ির ভেতর প্রবেশ করেও, তার জন্য আকস্মিক চমক হিসেবে গ্যাসের ব্যবস্থা রয়েছে, যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে আগুন্তুককে পথভোলা করে দিতে সক্ষম।

ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি ম্যানশন
বাড়ির ভেতরের দৃশ্যটা বেশ মনোরম; ছবি : thedenverchannel.com

তবে নামের মতো বাড়ির নির্মাণশৈলী এতটা রুক্ষ নয়। বরং রুচিশীল চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আবাস্থলের আনাচে-কানাচে। চারদিক খোলামেলা থাকায় বাড়ির ভেতরে সবসময় সজীবতা বিরাজ করে। পাহাড়ের চূড়া ছুঁয়ে আসা রোদ প্রতিদিনই ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি ম্যানশনের বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। ফলে এমন একটি ‘সেফ হাউজে’ বাস করে ঝুট-ঝামেলা থেকে দূরে থাকা যাবে, এমন ভাবনাই স্বাভাবিক।

২. ফেয়ার ফিল্ড এস্টেট :

পৃথিবীতে এমন প্রচুর মানুষ পাওয়া যাবে, যারা মনের মতো অবসর কাটাতে দু’হাত ভরে অর্থ খরচ করেন। তেমনই একটি অবসর যাপন কেন্দ্র হলো ‘ফেয়ার ফিল্ড স্টেট’। তবে আমেরিকার হ্যাম্পটনে অবস্থিত এই এলাকায় ঢুকতে হলে আপনাকে অবশ্যই আমন্ত্রিত অতিথি হতে হবে! বিলিয়নিয়ার রেনার্ডের মালিকানাধীন এই জায়গায় রয়েছে আমেরিকার সবচেয়ে বড় বাড়িটি, যেটি তৈরি করতে ২৪৮ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।

ফেয়ার ফিল্ড এস্টেট
অনেকগুলো অংশ নিয়ে বিশাল এক বাড়ি; ছবি : businessinsider.com

শিল্পের প্রতি বিশেষ ঝোঁকের কারণে রেনার্ড নিজের বাসস্থানটি সাজিয়েছেন তার সংগৃহীত শিল্পগুলো দিয়ে, যেখানে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের চিত্রকর্ম রয়েছে, তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তো অন্য সবার চেয়ে আলাদা হবেই। এখানকার পুরো এলাকাটি বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। প্রবেশদ্বারটি এমনভাবে তৈরি করা, যাতে কেবল কাঙ্ক্ষিত অতিথি ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে না পারে। বাড়িতে ব্যবহৃত জানালার কাচগুলো সব বুলেটপ্রুফ। তাছাড়া বিশালাকার বাড়িটির সবখানেই পর্যাপ্ত ক্যামেরা বসানো আছে। সেগুলো পর্যবেক্ষণ এবং এলাকাটির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, দক্ষ লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা সবরকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত।

৩. জম্বি বাঙ্কার :

পৃথিবী যদি কখনো জম্বি আক্রমণের শিকার হয়, তবে মানুষ সর্বপ্রথম নিরাপদ জায়গারই খোঁজ করবে। যদিও রূপান্তরিত মানুষদের পৃথিবী দখলের ব্যাপারটা এখনো স্রেফ গল্প-সিনেমাতেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই জম্বি আক্রমণকে উদ্দেশ্য করে নিরাপদ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে! ‘জম্বি বাঙ্কার’ বলা হলেও বাস্তবে এটি একটি পোলিশ স্থাপত্য নির্মাণ কার্যালয়, যার পুরোটাই শক্ত কংক্রিটের পুরু আস্তরণে ঢাকা। চারকোণা আকৃতির গঠন জুড়ে কোনো শৈল্পিকতার ছোঁয়া নেই, যা দেখে সহজেই আন্দাজ করা যায়, কোন ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিয়ে এমন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে!

জম্বি বাঙ্কার
বাহির আর ভেতরের দৃশ্যে অনেক তফাৎ; ছবি : scmp.com

বাইরের দিকটা দেখতে যতোই বিরক্তিকর হোক, ভেতরের দৃশ্য বেশ আলাদা। দ্বিতল বাড়িটিতে রয়েছে অসংখ্য জানালা। তাছাড়া উন্মুক্ত বারান্দা আর প্রশস্ত করিডোরের কল্যাণে ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস আসা-যাওয়া করে। কংক্রিটের অংশগুলো বাদে পুরো স্থাপনাটি স্বচ্ছ কাচে ঢাকা। কাচের বাইরের প্রতিটি অংশে আবার কংক্রিটের ব্লক রয়েছে। যেগুলো যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সরানো যায় প্রয়োজনে। এগুলো নামিয়ে দিলে পুরো স্থাপনাটিই কচ্ছপের খোলসের মতো অভেদ্য হয়ে পড়ে। জম্বিরা এসে পড়লে বেরসিক কচ্ছপের খোলসে আঘাত করেই খুশি থাকতে হবে। নয়তো বাজুকা দিয়ে কংক্রিটের দেয়াল ধসাতে হবে তাদের!

৪. বিল গেটসের বাসভবন :

সামাজিকভাবে প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব বিল গেটস একজন নম্র, ভদ্র আর মিশুক মানুষ হতে পারেন। কিন্তু তার বাড়ির সদর দরজা দিয়ে ঢুকে, যখন-তখন তার সঙ্গে হাত মেলানোর সুযোগ নেই। কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বাড়িগুলোর ভেতর তার বাড়িটিও যে রয়েছে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, পুরো বাড়ির প্রায় সবকিছু সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। পৃথিবীর আর কোনো বাসস্থানে এত ব্যাপকভাবে সফটওয়্যারের ব্যবহার নেই। জানাডু-২.০ সিরিজের বিশেষ ডিজাইনের তৈরি এমন বাড়ি পৃথিবীতে একটাই রয়েছে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুরো বাড়ির তাপমাত্রা, আলো-বাতাস, আর্দ্রতাসহ অসংখ্য কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

বিল গেটসের বাসভবন
বিল গেটসের সবুজে ঘেরা বাড়ি; ছবি : priceypads

বিল গেটসের বাসস্থানের আশপাশের পুরো এলাকাজুড়ে কেবল বিভিন্ন জাতের গাছের সারি। আর বিদ্যুতায়িত বেড়ার পাহাড় ডিঙিয়ে কেউ আসতে চাইবে না সহজে। বাড়ির চারদিকে মানুষ আর ক্যামেরা শনাক্তকারী যন্ত্র বসানো আছে। ফলে আমন্ত্রিত অতিথি বাদে বিল গেটসের বাসস্থানে কেউ ভুলেও উঁকি মেরে দেখতে আসবে না। ২০০৪ সালে ন্যাশনাল গভর্নর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানে একটি পার্টি আয়োজন করা হয়েছিলো এই বাড়িতে। যে পার্টিতে অতিথিদের লেকের পথ ধরে স্পীড বোটে করে আসতে হয়েছিল!

৫. কোর্বি পরিবারের বাসভবন :

কোর্বি নিজে একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। মানুষের নিরাপত্তার উপায় নিয়ে যিনি ভাবেন, তার ঘুমানোর জায়গাটাই বা কেন অনিরাপদ থাকবে! তাই তো ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে পাহাড়ের উপর তিনি গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নের বাসভবন। বাসস্থান হলেও বাস্তবে বাড়িটি একইসঙ্গে একটি ‘সেফ হাউস’। তাই অনেকেই একে গোয়েন্দা কার্যালয় ভেবে ভুল করে!

কোর্বি পরিবারের বাসভবন
নিজের বাড়ির বর্ণনা দিচ্ছেন কোর্বি; ছবি : youtube.com

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাড়ি-ঘরের মতো কোর্বি পরিবারের বাড়িটিও ভূমিকম্প সহনীয়, যার ভিত প্রায় ৩০ ফুট গভীর। এখানে এমন সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যেগুলো শত্রু তো বটেই, ছোটখাট ব্যক্তিগত সেনাবাহিনীকেও প্রচণ্ড ভোগাতে পারে। বাড়িটির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করার জন্য কোনো চাবির ব্যবস্থা নেই। চাবি দিয়ে তালা খোলার বদলে এখানে রয়েছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। তাছাড়া চারপাশে নজর রাখার জন্য বিশেষ যন্ত্রাংশ বসানো আছে। যেগুলো এক মাইল দূরে অবস্থান করা সশস্ত্র ব্যক্তিদেরও শনাক্ত করতে পারে।

৬. রায়ংসং রেসিডেন্স :

রাইংসং আবাস (কোরিয়ান: 룡성 관저), এটি আবাসিক নং 55  নামেও পরিচিত এবং স্থানীয় লোকেরা সেন্ট্রাল লাক্সারি ম্যানশন নামে পরিচিত North এটি উত্তর কোরিয়ার একটি রাষ্ট্রপতি প্রাসাদ এবং নেতা কিম জং-উনের প্রধান বাসভবন।আবাসটি উত্তর পিয়ংইয়াংয়ের রায়ংসং জেলায় অবস্থিত, কিম ইল-সাং স্কয়ারের উত্তর-পূর্বে। পুরো নেতৃত্বের কমপ্লেক্সের আকার প্রায়। কিম জং-ইল-এর প্রাক্তন দেহরক্ষী লি ইয়াং-কুকের মতে, পিয়ংইয়াংয়ের বাইরে উত্তর কোরিয়ার অন্তত আট নেতার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।এই যৌগটি একটি কোরিয়ান পিপলস আর্মি নির্মাণ ব্রিগেড দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং ১৯৮৩ সালে কিম ইল-সাংয়ের শাসনামলে সম্পূর্ণ হয়েছিল। এটি পরে কিম জং-ইল, তাঁর বোন কিম কিং-হুই এবং তার শ্যালক জাং সুং-তাইক ব্যবহার করেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা হিসাবে তিনি তাঁর পিতার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পরে, কিম জং-উন তার প্রধান আবাস হিসাবে রাইংসং আবাসকে ব্যবহার করেছেন ।

রায়ংসং রেসিডেন্স
কিম জং-উনের প্রধান বাসভবন রায়ংসং রেসিডেন্স; ছবি : dreamstime

প্রচলিত প্রচলিত অস্ত্রের দখলে কমপ্লেক্সটির চারপাশে অবস্থিত সদর দফতর রক্ষার জন্য অসংখ্য সামরিক ইউনিট রয়েছে। এই অঞ্চলটি চারপাশে একটি বৈদ্যুতিক বেড়া, খনি ক্ষেত্র এবং অনেকগুলি সুরক্ষা চৌকি রয়েছে। সদর দফতরটি চাংগিয়ং আবাসে (আবাস নং 26) এবং অন্যান্য আবাসগুলির সাথে ভূগর্ভস্থ টানেলগুলির সাথে যুক্ত। একটি ব্যক্তিগত আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন স্টেশনও আবাসিক প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরে। বড় বড় বাড়িঘর এবং স্নেহযুক্ত উদ্যানের পাশাপাশি রয়েছে মনুষ্যনির্মিত হ্রদ এবং বিভিন্ন বিনোদনমূলক সুবিধা।

৭.হোয়াইট হাউস :

আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউস। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর নিরাপত্তাব্যবস্থা হওয়ার কথা সর্বোচ্চ মাত্রার।চারতলা এই ভবনে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রেসিডেন্টস রুম, ওভাল অফিস ও কেবিনেট রুম।আগে প্রেসিডেন্টস রুমে সেক্রেটারি দপ্তর ও প্রেসিডেন্টের দপ্তর ছিল। বর্তমানে এই কক্ষ ডাইনিং রুম বা খাবার ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।ওভাল অফিসটি বর্তমানে প্রেসিডেন্টের প্রধান দপ্তর। ডিম্বাকৃতির এই কক্ষের জানালাগুলো বুলেটপ্রুফ কাঁচ দিয়ে তৈরি। কক্ষটির অন্দরসজ্জা ও আসবাব প্রেসিডেন্টের পছন্দ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।

হোয়াইট হাউস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউস; ছবি : ittefaq

ওভাল অফিসের বাইরে ডান দিকে হোয়াইট হাউস রোজ গার্ডেন। এটি বিশেষ অনুষ্ঠান এবং বিশেষ অতিথিদের জন্য ব্যবহার করা হয়। কেবিনেট রুমে প্রেসিডেন্ট তাঁর মন্ত্রীসভার সঙ্গে বৈঠক করেন। হোয়াইট হাউসের রীতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট সব সময় টেবিলের মাঝখানে বসেন।গ্রাউন্ড ফ্লোরে আছে সিচুয়েশন রুম। ৫ হাজার বর্গফুটের এই ঘরে প্রেসিডেন্ট আসেন সমস্যার মুখোমুখি হলে। এখানে তিনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেন। সিচুয়েশন রুম চালান ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কর্মীরা।হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিং রুম। এখান থেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট।

১. হোয়াইট হাউস দাঁড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি শহরের ১৬০০ পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউতে।
২. পুরো ভবনটি মূলত তিনটি আলাদা ভাগে বিভক্ত—ওয়েস্ট উইং, ইস্ট উইং ও এক্সিকিউটিভ রেসিডেন্স।
৩. ভবনের মোট আয়তন প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুট।
৪. ১৩২টি কক্ষ, ৩৫টি শৌচাগার ও ৩টি রান্নাঘর আছে এতে।
৫. থিয়েটার হল, সুইমিং পুল, টেনিস কোর্ট, গলফ কোর্ট ও জগিং ট্র্যাকও আছে।
৬. এর দরজার সংখ্যা ৪১২ এবং জানালা ১৪৭টি।
৭. ওঠানামার জন্য আছে ৮টি সিঁড়ি এবং ৩টি লিফট।
৮. ভবনগুলোর বাইরের পুরো অংশ রং করতে প্রায় ৫৭০ গ্যালন রং লাগে।

৮.বাকিংহাম প্রাসাদ :

বাকিংহাম প্রাসাদ ব্রিটিশ রাজ পরিবারের লন্ডনের বাসস্থান এবং বর্তমানে পৃথিবীতে বিদ্যমান বৃহত্তম রাজকীয় প্রাসাদ।প্রসাদটি রাজ পরিবারের বিভিন্ন রাজকীয় অনুষ্ঠান অবসরকালীন বিনোদনের জন্য নির্মিত হয়েছিল, বর্তমানে এটি একটি পর্যটক আকর্ষন। নির্মাণ কালে প্রাসাদটির নাম ছিল বাকিংহাম হাউজ। এটি ১৭০৩ সালে বাকিংহামের ডিউক জন শেফিল্ডের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল, পরবর্তীতে রাজা তৃতীয় জর্জ ১৭৬২ সালে তার ব্যক্তিগত বাসভবন হিসেবে এটি অধিকৃত করেন।

বাকিংহাম প্রাসাদ
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের লন্ডনের বাসস্থান বাকিংহাম প্যালেস; ছবি : itibritto

এই রাজকীয় প্রাসাদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের একটি স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয় যেমন – রাষ্ট্র দর্শন ও অভিষেক যেখানে প্রতি বছর 50,000 এরও অধিক মানুষ বিভিন্ন ভোজনসভায় অতিথি হিসেবে এই প্রাসাদ পরিদর্শন করতে আসে।মূল অট্টালিকায় অভ্যর্থনার জন্যে কোন প্রশস্ত কক্ষ ছিল না।মহারানী ভিক্টোরিয়ার একটি অগ্রণী প্রচেষ্টার কারণে 1853 সালে একটি অনন্য নৃত্যশালা (বলরুম)যা 18 মিটার প্রশস্ত এবং 13.5 মিটার উঁচু, ও 36.6 মিটার লম্বা তৈরি হয়েছিল।

বাকিংহাম প্যালেসের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘কুঈন’স গার্ডেন পার্টি’। জাঁকজমকপূর্ণ এই পার্টিতে প্রায় আট হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ করা হয়। পার্টিতে চা ও স্যান্ডুইচ পরিবেশন করার জন্য অনেকগুলো ছোট ছোট তাবু খাটানো হয়। অতিথিরা সবাই জড়ো হলে রানী রাজকীয়ভাবে প্রবেশ করেন। বাউ রুম থেকে বেরিয়ে তিনি সোজা চলে যান নিজের ব্যক্তিগত চায়ের তাবুর দিকে। এ সময় তিনি পূর্ব নির্ধারিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

Related posts

জেনে রাখুন: সাপ বিষয়ক কিছু ভুল ধারনা

News Desk

কম্পিউটার প্রকৌশল কি? কেন পড়বেন?

News Desk

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কি এবং কেন হয়?

News Desk

Leave a Comment