Image default
প্রযুক্তি

ভোটের সময় আঙুলে লাগানো হয় কালি? কি সেই কালির অজানা ইতিহাস

ভোট দিতে যাচ্ছেন নিশ্চয়ই? ভোট দেওয়া আমাদের প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট দিতে গেলেই আঙুলে একধরণের কালি লাগানো হয়। এই ভোটের কালিটিকে বাংলায় বলে ‘অমোচনীয় কালি’ আর ইংরাজীতে ‘Indelible Ink’। এর থেকেই বোঝা যায় যে, আপনি ভোট দিয়েছেন। কিন্তু ভোটে ব্যবহৃত এই কালি সম্বন্ধে কী কী জানেন আপনি?

আঙুলে ভোটের কালির ইতিহাস :-

আঙুলে লাগানোর সময় কালো। আর পরক্ষণেই বেগুনি। ভোটের দিন বেশ ভারিক্কি মেজাজই থাকে ভোটের কালির। থাকবেই না বা কেন ? এই একটা দিন বুথে ভোটসংখ্যার পরিসংখ্যান দেখাতে তার জুড়ি মেলা যে ভার। আসুন জেনে নিই এই কালির ইতিহাস।

কেন আঙুলে কালি ?

ভুয়ো ভোট আটকাতে, ভূতুড়ে ভোট থামাতে, এক ব্যক্তির একাধিক ভোট এড়াতে এবং প্রত্যেকের ভোট নিশ্চিত করতে ভোটের কালির গুরুত্ব অনেক। দিন দশেক আঙুলে অস্তিত্ব জাহির করে ভোটের কালি। পরে আস্তে আস্তে মুছে যায়।

ভোটের কালির অজানা ইতিহাস
ছবি সংগৃহিত: bongodorshon.com

কবে শুরু ?

তথ্য বলছে, ১৯৬২ সালে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয় সরকার। নির্বাচন কমিশন, আইন মন্ত্রক, ন্যাশনাল ফিজ়িক্যাল ল্যাবরেটরি অফ ইন্ডিয়া এবং ন্যাশনাল রিসার্চ ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন একযোগে একটি চুক্তি করে। চুক্তি হয় মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড বার্নিশ লিমিটেডের। চুক্তি মোতাবেক, মুছে যায় না, এমন বিশেষ ধরনের কালি তৈরির বরাত পায় এই কোম্পানি। যে কোনও ভোটে ভোটের কালি তৈরির বরাত একমাত্র এদের এক্তিয়ারেই।
মাইসোর পেইন্টস তৈরি হয় ১৯৩৭ সালে। প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার IV। শুধু ভারত নয়, না না করে ২৫ টি দেশে ভোটের কালি সরবরাহ করে এই কোম্পানি। বিশ্বাস, এই কালি তৈরি হয় গোপনে। এতে নাকি থাকে সিলভার নাইট্রেট।

নিয়ম অনুযায়ী, বুথে নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ভোট কর্মী প্রত্যেক ভোটারের বাঁ হাতের তর্জনীতে ভোটের কালি লাগাবেন। নখের শুরু থেকে আঙুলের প্রথম গিঁট পর্যন্ত কালি লাগানো হবে। ভোটার ভোট দেওয়ার আগে কন্ট্রোল ইউনিটের ইন-চার্জ যিনি, তিনি পরীক্ষা করে নেবেন কালি ঠিকমতো লাগানো হয়েছে কি না।

ভোটের কালি ঘিরে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি অজানা তথ্য। জেনে নিন সেগুলি কী –

১) এই কালি প্রস্তুতকারী প্রধান সংস্থার নাম পেন্টস অ্যান্ড ভার্নিশ লিমিটেড (MPVL)।
২) এই কালি খোলা বাজারে বিক্রি হয় না।
মহীশূরে ১৬ একর জায়গা নিয়ে ১৯৩৭ সালে কাজ শুরু করে এই কালি প্রস্তুতকারী সংস্থা।
৩) এই সংস্থা কালি ছাড়াও মোম তৈরি করে। ব্যালট বক্স সিল করার সময়ে এই মোম ব্যবহার করে হতো।
৪)তবে শুধু ভারতেই নয়। আফগানিস্তান, নেপাল, তুরস্ক, ফিজি, ডেনমার্ক, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা-তেও এই সংস্থা কালি রফতানি করে।
৫) ২০০৬ সাল থেকে ভোটের কালির চাহিদা সবচেয়ে বাড়ে। আগে ভোটারের তর্জনী আর নখের মাঝখানে আড়াআড়ি ভাবে কালির দাগ দেওয়া হতো। ২০০৬ সাল থেকে নতুন নিয়ম আনে নির্বাচন কমিশন। সেই নিয়ম অনুযায়ী তর্জনীর প্রথম গাঁট থেকে নখের উপর র্পযন্ত কালির দাগ টানতে হবে।
৬) এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে এই কালি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। ৮১ কোটি ভোটারের জন্য সেবার ১০ মিলিলিটারের ২২ লক্ষ কৌটো কালি খরচ হয়।
৭) ভোটের কালি সাধারণত সিলভার নাইট্রেট , রং ও অ্যালকোহোল জাতীয় তরল দিয়ে তৈরি হয়।
৮)ভোটের কালি একই রকম থাকে টানা ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা। কিন্তু তার পরেও এর ছাপ ২ থেকে ৪ সপ্তাহ আঙুলে বা নখের পাশে থেকে যায়।

তথ্য সূত্র: তারাঙাবারটা, জিনিউস, এইবাংলায়

Related posts

দেশজুড়ে অপো’র ফ্রি হোম ডেলিভারি সেবা চালু

News Desk

Android, iOS এর মধ্যে চ্যাট ইতিহাস স্থানান্তর করার ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ

News Desk

চলে গেলেন অ্যাডোবির সহপ্রতিষ্ঠাতা চার্লস গেসকি

News Desk

Leave a Comment