Image default
খেলা

জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে ৩০ পয়েন্ট বাংলাদেশের

সমীকরণ বদলে গেছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজগুলো এখন কেবল আর জয়-পরাজয়ে সীমাবদ্ধ নেই। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে পয়েন্টের হিসাবের ছক কষে দিয়েছে আইসিসি। দলগুলোকে এখন সেটি অনুসরণ করেই চলতে হচ্ছে। যেখানে প্রতিটি ম্যাচই মহা গুরুত্বপূর্ণ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের আগের দুটি জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলেও সফরকারী বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য ছিল তিনটি ম্যাচই জেতা। এতে নিজেদের খাতায় যোগ হবে ৩০ পয়েন্ট।

মাঠের পারফরম্যান্সে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে টাইগাররা। আজ (মঙ্গলবার) হারারেতে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে ওপেনার তামিম ইকবালের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে তিন ম্যাচ জয়ের কল্যাণে পূর্ণ ৩০ পয়েন্টই নিজেদের নামের পাতায় যোগ করেছে অধিনায়ক তামিমের দল। এতে ১২ ম্যাচে ৮ জয়ে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ।

এই ম্যাচ জিতে প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের অর্জন আছে আরও। ম্যাচটি জয়ের ফলে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ দিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এনিয়ে ১৪ বারেরর মতো প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশ। এতে অবশ্য আক্ষেপ মিটল দীর্ঘদিনের। ২০০৯ সালের পর দেশের বাইরে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করা হয়ে উঠছিল না। এক যুগ পর সেই স্বাদ পেল বাংলাদেশ দল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই অর্জন ষষ্ঠবারের মতো। সবে মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের ২৯তম ওয়ানডে সিরিজ জয়।

এদিন আগে ব্যাট করে বাংলাদেশি বোলারদের শাসন করে স্কোর বোর্ডে ২৯৮ রানের পুঁজি জমা করে জিম্বাবুয়ে। ২৯৯ রানের টার্গেট সহজ সমীকরণ নয়। এর আগে এতো রান তাড়া করে বাংলাদেশ দলের জেতার নজির ছিল মোটে ৪ বার। সংখ্যাটা চার থেকে পাঁচে নিয়ে গেলেন তামিম-সোহানরা। তামিমের অনবদ্য ১১২ রানের ইনিংসের পর শেষদিকে দলের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন প্রায় ৫ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামার নুরুল হাসান সোহান। তাকে নিয়ে কেন এতো আলোচনা সেটি বোঝালেন অপরাজিত ৪৫ রানের সাবলীল ব্যাটিংয়ে।

উদ্বোধনি জুটিতে তামিম-লিটনের ব্যাটে ভালো শুরু পায় সফরকারীরা। তাদের জুটি থেকে আসে ৮৮ রান। লিটন ৩২ রানে আউট হলেও সেঞ্চুরির আগে থামানো যায়নি তামিমকে। গত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যাট হাতে সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সাকিব, তবে ৩০ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। যদিও নিজের আউট নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তয় খুশি হননি তিনি। তার ৪২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১টি করে চার ও ছয়ের মার।

সাকিবের বিদায়ের পর তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান তামিম। বাংলাদেশের ইনিংসের ৩০তম ওভারে টেন্ডাই চাতারার করা প্রথম বলটি ছিল ফুল লেংথের। সেটি সজোরে ড্রাইভ করেন এই বাঁহাতি ওপেনার, ফিল্ডারের ভুলে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। তামিম পৌঁছে গেলেন মাইলফলকে। এতে ১১ ম্যাচ পর শতকের দেখা পেলেন তামিম। এর আগে নিজের সবশেষ সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১৯ সালের মার্চে। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি।

পরে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৯৭ বলে ১১২ রান করে আউট হন তামিম। ডোনাল্ড টিরিপানোর পরের বলেই আউট হয়ে শূন্য হাতে ফেরেন নিজের ২০০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেখান থেকে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন নুরুল হাসান সোহান। মিঠুনের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৬৪ ও ষষ্ঠ উইকেটে আফিফ হোসেনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ৩৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জেতান তিনি। যেখানে মিঠুন আউট হন ৩০ রান করে।

সোহান অপরাজিত থাকেন ৪৫ রানে। ৩৯ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চারের মারে। আফিফের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২৬ রান। এতে ১২ বলে হাতে রেখেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। সঙ্গে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট পেল বাংলাদেশ।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুটা খুব ভালো হয়নি। ইনিংসের নবম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান, ফেরান ৮ রান করা তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে। অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে ৩৬ ও ডিওন মায়ার্সের সঙ্গে ৭১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে টেনে তোলেন রেগিস চাকাভা। টেলর ২৮ ও মায়ার্স আউট হন ৩৪ রান করে। পরে ওয়েসলে মাধেভেরে ৩ রান করে আউট হলে বিপাকে পড়ে স্বাগতিকরা।

দলকে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখানো চাকাভা কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির দিকে ছুঁটছিলেন। ব্যক্তিগত ৭৮ রানের মাথায় তাসকিন আহমেদকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছান ৮৪ রানে। তাসকিনের পরের বলটি ফুল লেংথে পড়ে সোজা যায়, বাজেভাবে ক্রস ব্যাটে ফ্লিকের মতো করার চেষ্টা করেন চাকাভা। ব্যাটের ধারেকাছে ছিল না বল, উপড়ে যায় স্টাম্প। শেষদিকে সাইউদ্দিনের উপর চড়াও হন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ১১২ রান।

৪৯ বলে ফিফটির স্বাদ পাওয়া রাজা ৫৪ বলে ৫৭ ও ৩৮ বলে অর্শধতক করা বার্ল ৪৩ বল খেলে ৫৯ রানে আউট হলে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা স্কোর বোর্ডে তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি। এতে অল-আউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে ২৯৮ রানের পুঁজি পায়। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শিকারও সমান ৩ উইকেট। তবে বল হাতে লজ্জার রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছেন তিনি। এদিন ৮ ওভার বল করে ৮৭ রান সাইফউদ্দিন, যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড।

Related posts

Shedeur Sanders draft slide timeline: NFL executives cause media meltdown by rejecting polarizing prospect

News Desk

দেখুন কিভাবে স্টিফেন এ. ভেঙে পড়ে। স্মিথ যখন জুলিয়াস র‌্যান্ডেলের অস্ত্রোপচার লাইভ প্রকাশ করেন

News Desk

বড়ি বনাম যথাযথ প্রোপস: এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপ পছন্দ, সেরা বেটস

News Desk

Leave a Comment