Image default
খেলা

হোয়াইটওয়াশ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে বড় হার বাংলাদেশের

ম্যাচ শেষের আগেই অধিনায়ক তামিম ইকবাল হয়তো অনুমান করতে পেরেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি বের হয়ে যাচ্ছে হাত থেকে। বাংলাদেশের ইনিংসের তখন দশম ওভার। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারলেন না তামিম। তার আউট নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও টিভি আম্পায়ারের চোখে মনে হয়েছে লঙ্কান উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে তামিমের ব্যাট ছুঁয়ে গেছে বলটি।

তামিম মাঠ ছাড়লেন বিরক্তি নিয়ে, শারীরিক অঙ্গভঙ্গিতে হতাশা আর আক্ষেপের ছাপ স্পষ্ট। আইসিসির সুপার লিগের অংশ এই সিরিজ। প্রতি ম্যাচেই পয়েন্টের খেলা। ২০২৩ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে গেলে ১৩ দলের মধ্যে ৮ নম্বরে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। বর্তমানে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে টাইগাররা। সুযোগ ছিল লঙ্কানদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ জিতে বাকিদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান বাড়ানোর। সেটি আর হলো না।

ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল তামিম ইকবালের দল। ৩ ম্যাচ থেকে পূর্ণ ৩০ পয়েন্টে চোখ ছিল স্বাগতিকদের। তবে সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আগের দুই ম্যাচ থেকে ২০ পয়েন্ট অর্জন করলেও এবার আর পেরে উঠল না বাংলাদেশ। ৯৭ রানে ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। সঙ্গে ধবল ধোলাইয়ের লজ্জাও এড়াল সফরকারীরা।

সিরিজ শেষে ৯ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে আগের সুপার লিগে অবস্থানে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতে সুপার লিগে নামের পাশে ১০ পয়েন্ট যোগ করল লঙ্কানরা।

ম্যাচে আগে ব্যাট করে অধিনায়ক কুশল পেরেরার সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সামনে ২৮৭ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় সফরকারীরা। পাহাড় সমান টার্গেট টপকাতে নেমে চাপে পিষ্ট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে তুলতে পারে ১৮৯ রান। ফলে ৯৭ রানে হারে ম্যাচ। যদিও তিন ম্যাচ সিরিজের শুরুর দুটি জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছেন তামিমরা।

তরুণদের পারফরম্যান্স এ ম্যাচেও প্রশ্নবিদ্ধ। আগের দুই ম্যাচে মুশফিক, তামিম, রিয়াদরা রান করে দলকে জিতিয়েছেন। এ ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি তারা। রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন ফিফটির স্বাদ পেলেও তরুণ নাঈম, আফিফ ও মিরাজরা ছিলেন নিষ্প্রাণ।

লিটনের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন তামিম। লিটন শেষ ম্যাচে ২৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, আজ নাঈমের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। শুরুর দিকে বল হাতে ছড়ি ঘোরালেন লঙ্কান পেসার দুসমস্থ চামিরা। নিজের প্রথম স্পেলে ৬ ওভার বল করে মাত্র ১১ রান খরচ করে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি।

নাঈমের পর কাটা পড়েন সাকিব ও তামিম। ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ব্যর্থ সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। তামিম আউট হন ১৭ রান করে। ২৮ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুশফিক ও মোসাদ্দেক। মুশফিক ২৮ রান করে আউট হলে চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রানের জুটি ভাঙে দুজনের।

পরে রিয়াদের সঙ্গে ৪১ রানের পার্টনারশিপ গড়ার পথে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন মোসাদ্দেক। ফেরেন ৫১ রান করে। ৭২ বলের ইনিংসটি সাজান ৩টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। পরে রিয়াদ দলের হাল ধরলেও তাকে সঙ্গে দিতে পারেননি কেউ। আফিফ ১৬ রান করলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ আর তাসকিন আহমেদ। তাসকিনকে ফিরিয়ে ম্যাচে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান চামিরা।

রিয়াদ শেষ চেষ্টা চালালেও লাভ হয়নি তাতে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে ফিফটি হাকিয়ে খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। সেটি বীরচিত হতে পারতো, যদি তিনি ম্যাচ জিতিয়ে ফিরতে পারবেন। তাতে পাপ মোচনও হতো খানিক, ৯৯ রানে থাকা কুশল পেরেরার সহজ ক্যাচ ছেড়ে সেঞ্চুরির সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। রিয়াদ পারেননি, শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৫১ রান করে। এতে ১৮৯ রানে থামে স্বাগতিকদের ইনিংস। ফলে ৯৭ রানে ম্যাচ জেতে শ্রীলঙ্কা।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাত্মক শুরু করেন শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরা ও ধানুষ্কা গুনাথিলাকা। উদ্বোধনী জুটিতে ৮২ রান যোগ করেন দুজন। ইনিংসের ১২তম ওভারে লঙ্কান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন তাসকিন। তার শিকারে ৩৯ রানে ফেরেন গুনাথিলাকা। খালি হাতে সাজঘরের পথ ধরেন পাথুম নিসাঙ্কা।

এরপর কুশল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় সংগ্রহ বাড়িয়ে নেন পেরেরা। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। এতে অবশ্য বাংলাদেশি ফিল্ডারদের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে উপায় নেই পেরেরার। ব্যক্তিগত ৯৯ রানের সময় জীবন পান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্যাচ ফসকালে। সেঞ্চুরির পথে ছুটতে আরও দুই বার জীবন পান পেরেরা। ব্যক্তিগত ৬৬ রানের সময় মুস্তাফিজের কাছ থেকে সুযোগ পান তিনি। ৭৯ রানের সময় পেরেরার ক্যাচ ফেলেন আফিফ।

মেন্ডিসকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান তাসকিন। দলীয় ২১৬ রানের সময় পেররার উইকেট তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। এবার ভুল করেননি মাহমুদউল্লাহ। ১২০ রানে থামে পেরেরার ইনিংস। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ১২২ বলের ইনিংসটি সাজান ১১টি চার ও ১টি ছক্কার মারে। পেরেরার আউটের পর দলের হাল ধরেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। অর্ধশতক হাঁকানো সিলভা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে। সঙ্গে হাসারাঙ্গার ১৮ রানের সুবাদে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানের সংগ্রহ পায় লঙ্কানরা।

Related posts

How Diana Taurasi’s fiery competitive streak ignited a women’s basketball revolution

News Desk

পান্ট-পান্ডিয়া নৈপুণ্যে ভারতের ইংলিশ বধ

News Desk

প্রাক্তন এনবিএ খেলোয়াড়রা ইউকন এনবিএ প্লেঅফ করতে পারে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ইএসপিএন হোস্টে ছিঁড়েছে: ‘ফুল অফ —‘

News Desk

Leave a Comment