আফতাব আহমেদ- সবাই তাকে চেনে ড্যাশিং উইলোবাজ হিসেবে; কিন্তু খেলা ছেড়ে আফতাব যে এখন পুরোদস্তুর কোচ, তা জানেন ক’জন? ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে বছর তিনেক মোহামেডানের সহকারি কোচের দায়িত্ব পালন করা আফতাব গত ২০১৯ -এর লিগে লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের হয়ে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে প্রথম হেড কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
প্রথম বছরেই সাফল্যের প্রায় দোরগোড়ায় চলে গিয়েছিলেন। শেষ ম্যাচে গিয়ে শিরোপা হাতছাড়া হয়। না হয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছিল আফতাবের দল। গত লিগেও আফতাব ছিলেন লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের প্রশিক্ষক।
এবার যেহেতু খেলোয়াড় ও কোচ রদবদল হয়নি তাই চট্টগ্রামের এ সদা হাস্যোজ্জ্বল ও বিনয়ী সাবেক ক্রিকেটার এবারও পুরনো শিবিরেই রয়ে গেছেন। ৩১ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রিমিয়ার লিগকে সামনে রেখে তার দল লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। ক্লাব কোচিংয়ে পুরোপুরি মনোযোগি আফতাব উন্মুখ হয়ে আছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রিয় জাতীয় দলের ওয়ানডে সিরিজ দেখতে।
জাগো নিউজের সাথে আলাপে তার পছন্দের একাদশও সাজিয়ে দিয়েছেন আফতাব। খেলোয়াড়ী জীবনে স্টাইলিশ ফ্রি স্ট্রোক মেকার আফতাব শ্রীলঙ্কার সাথে জাতীয় দলের একাদশ সাজানোর আগে উইকেটকে মানদন্ড ধরেই আগানোর পক্ষে।
তার ধারনা প্রচন্ড গরম আর শ্রীলঙ্কায় যেহেতু কয়েকজন খুব ভাল মানের স্পিনার আছেন, তাই হয়ত স্বাগতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট ব্যাটিং সহায়ক উইকেটই বেছে নেবে।
আফতাবও ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি পিচে খেলা হবে- তা ধরেই নিজের পছন্দের একাদশ সাজিয়েছেন। পছন্দর দল সম্পর্কে কোচ আফতাবের ব্যাখ্যা হলো, ‘যদি ব্যাটিং সহায় উইকেটে খেলা হয়, তাহলে আমি ৬ জন প্রতিষ্ঠিত উইলোবাজ খেলানোর পক্ষে। আমার ওই ৬ ব্যাটসম্যান হলেন, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ মিঠুন আর মোসাদ্দেকের মধ্য থেকে যে কোন একজন। এ দুজনার ভিতরে কে এখন ভাল শেপে আছে সেটা কোচ, ক্যাপ্টেন ও নির্বাচকরা ভাল বলতে পারবেন। তারাই বেষ্ট অপশন বেছে নেবেন।
এর বাইরে আমি আর প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান খেলানোর পক্ষে নই। বরং একজন করে স্পিনার কাম ব্যাটসম্যান ও পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে নিতে চাই।
তারা কারা? আফতাবের ব্যাখ্যা, আমি পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে সাইফউদ্দীনকে খেলানোর পক্ষে। আর স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ শেখ মেহেদি। কেন মেহেদি হাসান মিরাজ কিংবা সৌম্য সরকার নয় কেন?
আফতাবের ব্যাখ্যা, ‘আমি আসলে সৌম্যকে নিচে মানে ছয় বা সাত নম্বরে খেলানোর পক্ষে না। আমি সব সময় বিশ্বাস করি সৌম্য ব্যাসিক্যালি টপ অর্ডার। ওপরেই ভাল খেলে। সেটাই তার আসল জায়গা। নীচে নয়।’
‘হ্যাঁ তারপরও আমি তাকে নিচে মানে ছয় বা সাত নম্বরে খেলানোর পক্ষে যুক্তি দিতাম, যদি এটা টেস্ট হতো। কারণ টেস্টে ৮০ ওভারের পর নতুন বল মোকাবিলার জন্য একজন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান দরকার পড়ে, যে নতুন বল সামাল দিতে পারে। সেখানে আমি সৌম্য সরকারকে খেলাতে চাইতাম; কিন্তু ওয়ানডেতে না। তাই আমি সৌম্যকে নিচের দিকে খেলানোর বিপক্ষে।
‘আর শেখ মেহেদিকে খেলানোর পক্ষে আমার যুক্তি হলো, সে নিচের দিকে বিগ হিট নিতে পারে। সীমিত ওভারের খেলায় শেষ দিকে হাত খুলে খেলার মত পারফরমার লাগে। শেখ মেহেদির সে ক্ষমতা আছে। সে বড় ছক্কা হাঁকাতে পারে। আর তার অফস্পিন বৈচিত্র্যটা কাজে লাগানোর মত।’
‘কারণ সে নতুন বলেও বল করতে পারে। বিশেষ করে প্রতিপক্ষর বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে শেখ মেহেদির বোলিংটা অতি কার্যকর। তাই আমি মিরাজকে রেখে তাকে খেলানোর পক্ষে।’
আর আমার শেষ কথা হলো উইকেট যদি ব্যাটিং সহায়ক হয়, তাহলে কোন স্লো মিডিয়াম খেলোনোর ফায়দা নেই। তারচেয়ে বরং পুরোদস্তুর দ্রুত গতির বোলার খেলানো যুক্তিযুক্ত। তাই আমি বাঁ-হাতি মোস্তাফিজের সাথে দুই এক্সপ্রেস বোলার তাসকিন ও শরিফুলকে বেছে নিতে চাই।
আফতাবের পছন্দের একাদশ :
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন/মোসাদ্দেক হোসেন, শেখ মেহেদি হাসান, সাইফউদ্দীন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।

