Image default
খেলা

পাকিস্তানের উত্থান : ২০০৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের গল্প

একে তো ফাইনালে পরাজয়, তার উপর আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে। কোনও পাকিস্তানির পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন ছিলো। কিন্তু পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা খুব দ্রতই সে ক্ষতে প্রলেপ দিলেন। দুই বছর পর ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ডে যখন দ্বিতীয় টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয় তখন পাকিস্তানকে কেউ ফেভারিট ধরেনি। কিন্তু পাকিস্তান তার চিরায়ত অনিশ্চয়তা বজায় রেখে জিতে নেয় টুর্ণামেন্ট। ইউনুস, আফ্রিদিরা পরিণত হোন জাতীয় নায়কে। আজকে আমরা ২০০৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের গল্পই শুনবো।

পাকিস্তান বিশ্বকাপ শুরু করেছিলো বিশাল ব্যবধানে হার দিয়ে। প্রথম ম্যাচেই তারা ইংল্যান্ডের কাছে শোচনীয় পরাজয় মেনে নেয়। পরের ম্যাচে নেসারল্যান্ডকে হারিয়ে সুপার এইট রাউন্ডে ওঠে তারা। এই রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেও তারা হেরে যায় শ্রীলংকার কাছে। পরের দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় তারা। শ্বাসরুদ্ধকর সেমি ফাইনালে দক্ষিন আফ্রিকাকে হারিয়ে তারা ফাইনালে পৌছে যায়। ফাইনালে তারা মুখোমুখি জয় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শ্রীলংকার। শ্রীলংকা প্রথম রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সুপার এইটে ওঠে। সেখানে তারা পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়। একপেশে সেমি ফাইনালে লংকানরা গুড়িয়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ফাইনালে মুখোমুখি হয় পাকিস্তানের যাদেরকে সুপার এইটের মাচে ১৯ রানে হারিয়েছিলো তারা। ফলে দুরন্ত ফর্মে থাকা শ্রীলংকাই ছিলো ফেভারিট। কিন্তু তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিলো পাকিস্তানকে, যাদের সামনে কোনও পুর্ব সমীকরণ কাজ করে না।

ক্রিকেটের জন্মভুমিতে ২য় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম লর্ডসে। ফাইনালে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলংকান অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। মোহাম্মদ আমিরের করা প্রথম ওভারেই শূন্য রানে আউট হয়ে যান পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলা তিলকরত্নে দিলশান। পরের ওভারে জিহান মোবারক আউট হয়ে গেলে শ্রীলংকার স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ২ রান। সেখান থেকে জয়সুরিয়া এবং সাংগাকারা ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ২৬ রানে জয়সুরিয়া এবং ৩২ রানে মাহেলা জয়াবর্ধনে আউট হয়ে যান। এরপর অলরাউন্ডার আব্দুল রাজ্জাকের বোলিং তোপে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে শ্রীলংকা তোলে মাত্র ৩৪ রান। সাংগাকারা একাই লড়াই চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন। সঙ্গে শেষের দিকে এঞ্জেলো ম্যাথিউসের ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংসে ১৩৮ রানের সাদামাটা পুঁজি পায় শ্রীলংকা। পাকিস্তানি অলরাউন্ডার আবদুর রাজ্জাক পান ৩০ রানে ৩ উইকেট। আমির, আফ্রিদি এবং উমার গুল পান একটি করে উইকেট।

১৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার কামরান আকমল ও শাহ্জাইব হাসান ভালো শুরু এনে দেন পাকিস্তানকে। ৪৭ রানে প্রথম উইকেট ও ৬৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়লে সেখান থেকে হাল ধরেন শহীদ আফ্রিদি এবং শোয়েব মালিক। আফ্রিদির ৪০ বলে ৫৪ ও মালিকের ২২ বলে ২৪ রানে ভর করে হেসেখেলেই লক্ষ্যে পৌছে যায় পাকিস্তান। ৮ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখে সহজ জয় পায় পাকিস্তান এবং সেইসাথে প্রথম আসরের দুঃখ ভুলে প্রথমবার শিরোপা ঘরে তোলে তারা। ম্যাচ সেরার পুরুষ্কার পান শহীদ আফ্রিদি।পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ৩ ফিফটিতে ১৪৪.৭৪ স্ট্রাইক রেটে ৩১৭ রান করা তিলকরত্নে দিলশান হন টুর্নামেন্টে সেরা।

এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান – ভারত মুখোমুখি হয়নি। তাই হয়তো পাকিস্তানের অর্জনের গল্পে একটু খামতি থেকে গেছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ বছর পর কোনও বৈশ্বিক টুর্ণামেন্ট জয় পুরো পাকিস্তানকে ভীষণভাবে যে উদ্বেলিত করেছিলো সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। ২০১১ সালের টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের গল্প জানতে চোখ রাখুন বাংলা ডায়েরিতে।

Related posts

Fanatics Sportsbook NC Promo Code: Bet and Get up to $1,000 in Bonus Bets!

News Desk

মেসির জোড়া গোলে রেসে টিকে থাকল বার্সা

News Desk

জমি ধসে কোচের হাত থেকে মালাক রাইস আল -হাফিজ

News Desk

Leave a Comment