সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আজ আইপিএল শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন শুরু করছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আইপিএলের তৃতীয় সফলতম দল কেকেআর। গত দুই মৌসুমে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ নাইটরা। দু’বারই নেট রানরেটের ভিত্তিতে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে তারা। এবারে ভাগ্য বদলাতে মরিয়া শাহরুখ খানের দল বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানকে সোয়া ৩ কোটি রুপিতে নিয়ে দলকে শক্তিশালী করেছে। সাকিবের ব্যাটিং-বোলিং দলটাকে ভারসাম্য এনে দিয়েছে।
ইউয়েন মরগানের দলে আছে নতুন ৮ জন ক্রিকেটার। পুরনো দলের ১৭ জন ক্রিকেটারকে ধরে রেখেছে কেকেআর, যাদের মধ্যে ১১ জন ভারতীয় এবং ৬ জন বিদেশি। মরগ্যান, আন্দ্রে রাসেল, সুনিল নারিন, লকি ফার্গুসন, প্যাট কামিন্স, টিম সেইফার্টের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেন কাটিং আর সাকিব। আইপিএলে একটি ম্যাচে সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলতে পারেন এক দলে। অধিনায়ক মরগ্যানের সঙ্গে রাসেল মোটামুটি নিশ্চিত প্রথম একাদশে। এটা বলে দেওয়াই যায়, সাড়ে ১৫ কোটি রুপির অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্সও দলের পেস বিভাগের মূল দায়িত্ব সামলাবেন গত বছরের মতো। বাকি ৫ জনের মধ্যে মূল একাদশে যিনি খেলবেন, তার মধ্যে সাকিব থাকবেন কি না তা নির্ভর করবে দলের কম্বিনেশনের ওপর। স্পিনার হিসেবে সাকিব ছাড়াও আছেন সুনিল নারিন, অভিজ্ঞ হরভজন সিং আর বরুন চক্রবর্তী।
ক্রিকেট ভাষ্যকর হার্শা ভোগলের মতে, সাকিব অবশ্যই খেলবেন কলকাতার মূল একাদশে। এমনকি তাকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানোর পরামর্শও তার। যুক্তি দেখিয়েছেন, বাঁহাতি অলরাউন্ডার তিন নম্বরে কতটা বিধ্বংসী হতে পারেন তা দেখিয়েছেন ২০১৯ বিশ্বকাপে। আট ম্যাচের মধ্যে সাতটিতেই ছিল পঞ্চাশ ছাড়ানো স্কোর। হার্শার মতে, নারিনকে সরিয়ে গিলের সঙ্গে রানাকে ওপেনিংয়ে পাঠালে শুরুতে ডানহাতি-বাঁহাতি রসায়নও বজায় থাকে, তিনে সাকিব নামলে টপ অর্ডারও অপেক্ষাকৃত বেশি স্থিতিশীল হয়। তিনে সাকিবের উপস্থিতি চার-পাঁচ ও ছয় নম্বরে যথাক্রমে মরগ্যান, দিনেশ কার্তিক ও আন্দ্রে রাসেলদের আরও বেশি হাত খুলে খেলতে সাহায্য করবে, যা টপ থেকে শুরু করে মিডল অর্ডারকে আরও শক্তিশালী করবে।
কলকাতার ম্যাচের ভেন্যুও সাকিবকে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন হার্শা। এবার কলকাতা নিজেদের বেশির ভাগ ম্যাচ খেলবে চেন্নাইয়ের ভি চিদাম্বরম স্টেডিয়াম, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম, মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে ও বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। ধীরগতির পিচে সাকিবের ঘূর্ণিজাদু প্রতিপক্ষের চিন্তার কারণ হতে পারে বলে হার্শার ধারণা।
যদি আজ একাদশে থাকেন সাকিব, তবে প্রথম ম্যাচেই ছেড়ে আসা ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে সানরাইজার্সের চেয়ে এগিয়ে কেকেআর। ১৯ ম্যাচের ১২টি জিতেছে তারা। ৭টি জিতেছে হায়দরাবাদ। আজ কী হয় সেটাই দেখার।
সাকিবের এটা নবম আইপিএল আসর। ২০১১ সালে প্রথমবার তিনি খেলা শুরু করেন কলকাতার হয়ে। সব মিলিয়ে আইপিএলে মোট ৬৩ ম্যাচে ২১.৩১ গড়ে ৭৪৬ রান করেছেন সাকিব। সর্বচ্চ ৬৬*। স্টাইকরেট ১২৬.৬৫। আইপিএলে ৫৯ উইকেটও নিয়েছেন সাকিব। সেরা বোলিং ১৭ রানে ৩ উইকেট। ২০১৯ এর আইপিএলে সাকিব মাত্র ৩ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। গতবার আমিরাতের আইপিএলে খেলা হয়নি নিষিদ্ধ থাকায়। এবার সব মিলিয়ে সাকিবকেই কলকাতার ‘এক্স ফ্যাক্টর’ মানছেন হার্শা ভোগলে।

