Image default
খেলা

উপভোগের মঞ্চে থাইল্যান্ড-চমক

‘আমরা খুশি। খুব খুব খুশি। কারণ, দলটা পাকিস্তান, ওরা টপ ক্লাস দল।’ বাক্যগুলো দীর্ঘ হচ্ছিল না থাইল্যান্ড নারী দলের অধিনায়ক নারুয়েমল চাইওয়াইয়ের। তবে চোখেমুখে আনন্দ ঠিকরে পড়ছিল ঠিকই। পাকিস্তানের মতো দলকে হারানোর তৃপ্তি তাঁর শরীরী ভাষায় স্পষ্ট। ভাষাগত জটিলতায় সে আবেগই শুধু কথা হয়ে বের হচ্ছিল না। কিন্তু চাইওয়াই আজ খুশি, থাইল্যান্ড নারী দল খুশি—সেটা ভাষায় প্রকাশ না পেলেও বোঝা যাচ্ছিল ঠিকই।

থাইল্যান্ড নারী দলের জন্য ক্রিকেটটা এমনিতেই একটি উদ্‌যাপনের উপলক্ষ। হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় ঠাসা দলটা গত দুই বছরে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত দলগুলোর একটি। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার পর থেকেই বিশ্ব ক্রিকেটে থাই মেয়েদের উত্থান নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।

এরপর গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশকে হারিয়েছে তারা। এবার নারী এশিয়া কাপে হারাল পাকিস্তানকে। থাই মেয়েদের ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই হওয়ার কথা সবচেয়ে বড় সাফল্য। চাইওয়াইকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে যে উত্তর দিলেন, তাতে অবশ্য ইতিহাস গড়ার তাৎপর্যের ইঙ্গিত পাওয়া গেল না, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আনন্দের জন্য খেলা। আমরা খেলছি, আনন্দ করছি। এটাই আসল। ফল অটোমেটিক আসবে।’

আনন্দের জন্য খেলার কথাটা বলছিলেন পাকিস্তান-বধের কারিগর নাত্তাখান চান্থামও। আজ ৫১ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে তিনিও বললেন, ‘আজ আমি শুধু উপভোগ করতে চেয়েছি। সামনে যে লক্ষ্য ছিল, সেটা নিয়ে ভেবেছি। দলের জন্য কাজ যা দরকার, সেটা করতে চেয়েছি। আমার জন্য খেলাটা উপভোগ করাই আসল। বাকিটা এমনিতেই আসবে।’

থাইল্যান্ডের সবচেয়ে পুরোনো ক্রিকেট ক্লাব ব্যাংকক সিটি ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯০ সালে। এশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো ক্রিকেট ক্লাবগুলোর একটি এটি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের পরিচয় মূলত থাই মেয়েদের হাত ধরেই। দেশটির ক্রিকেটীয় উত্থানের গল্পের অনেকটাই লিখেছেন মেয়েরা।

থাইল্যান্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান রবি সেহগল আইসিসির ওয়েবসাইটে শুনিয়েছিলেন গল্পটা, ‘আমি একবার একটা কলেজে মেয়েদের খেলা দেখতে গিয়ে দেখি, অনেক মেয়ে সফটবল খেলছে। তখন আমার মনে হলো, সফটবলের তেমন কোনো ভবিষ্যৎ নেই। কিন্তু এখানে যারা আছে, তারা ভালো অ্যাথলেট। তাদের কেন আমি ক্রিকেট শিখিয়ে ক্রিকেটার বানাচ্ছি না! এরপর তো খুব দ্রুতই সব বদলে গেল।’

একটা সময় থাইল্যান্ডের মাত্র তিনটি রাজ্যে মেয়েদের ক্রিকেট হতো। ১০ বছর পর এখন ১৪টি রাজ্যে ছড়িয়েছে মেয়েদের ক্রিকেট। থাই ক্রিকেটের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার শান কাদের যেমন বলছিলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করিনি। ধীরে ধীরে ক্রিকেটারের সংখ্যা বেড়েছে। লক্ষ্য ছিল, যদি স্থানীয় লোকজন ক্রিকেটটাকে গ্রহণ করে, তবেই থাইল্যান্ডে ক্রিকেট সফল হবে। সেই ফল আমরা এখন পাচ্ছি।’

Related posts

দ্য রেভেনস একটি আকর্ষণীয় ওটিএ পদক্ষেপে প্রাক্তন দেশপ্রেমিক কিউবি মালিক কানিংহামকে রিসিভারে রূপান্তরিত করছে

News Desk

আমরা লেটনের পাশে আছি: শান্ত

News Desk

পাইজ স্পিরানাক “রক্ষণশীল” গল্ফ কাপড়ের সমালোচকদের কাছে দোলায়

News Desk

Leave a Comment