ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কতটা প্রভাব ফেলে—এই আলোচনা এখন পুরোনো। পাকিস্তান সুপার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ—এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো প্রভাব ফেলে কি না, তা নিয়ে তেমন কিছু বলেননি সুনীল গাভাস্কার। তবে তাঁর নিজের দেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএল কিছুটা হলেও যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ‘ক্ষতি’ করছে, কিংবদন্তি ক্রিকেটার বলেছেন তেমন কথাই।
আইপিএল কীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষতি করছে, এ বিষয়ে গাভাস্কার টাইমস অব ইন্ডিয়াতে লেখা কলামে একটা ধারণা দিয়েছেন। ‘আইপিএল কাছে চলে এলে খেলোয়াড়েরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেন না’—গাভাস্কারের পর্যবেক্ষণ এ রকমই। তাঁর কেন এমন মনে হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার, আইপিএলের নিলামের আগে কোনো খেলোয়াড়ই চোটে পড়তে চান না!
সদ্য শেষ হওয়া আইপিএল ২০২২ মৌসুমের মেগা নিলাম নিয়ে গাভাস্কার বলেছেন, ‘নিলামের এক দিন আগে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজ শেষ হয়েছে। আইপিএল ২০২২-এর নিলাম ওই সিরিজের চেয়েও বেশি মজার ছিল।’ আইপিএল কোনো কোনো খেলোয়াড়কে হঠাৎ করেই যেমন কোটিপতি বানিয়ে দেয়, তেমনি আবার খেলোয়াড়দের ওপর চাপও তৈরি করে বলে মনে করেন গাভাস্কার, ‘প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সমর্থকেরাই দেখতে চান, কোনো খেলোয়াড়ের জন্য তাঁদের দল যে অর্থ ব্যয় করছে, ওই খেলোয়াড় সেটির যোগ্য কি না। এটাই খেলোয়াড়দের ওপর চাপ তৈরি করে।’
এবারের আইপিএলের ১০টি দল নিলাম থেকে ২০৪ জন খেলোয়াড় কিনেছে। এবারের আইপিএলের নিলামটা হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত ওয়ানডে সিরিজের ঠিক পরে। এই সিরিজে খেলোয়াড়দের দেখে গাভাস্কারের মনে হয়েছে, ‘নিলামটা খেলোয়াড়ের জন্য জীবন বদলে দেওয়ার মতো একটি বিষয়। এটা খেলোয়াড়দের ও তাঁদের পরিবারের ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিতে পারে। এটাই অনেক খেলোয়াড়কে নিজের দেশের হয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা না করার দিকে ঠেলে দিতে পারে। বিশেষ করে আইপিএল যখন কাছে চলে আসে।’
অনেকেই মনে করতে পারেন, আইপিএলের নিলামের আগে খেলোয়াড়েরা আরও বেশি ভালো খেলার চেষ্টা করার কথা। নিলামের আগে ভালো খেললে তো ফ্র্যাঞ্চাইগুলোর নজর কাড়া যাবে! কিন্তু গাভাস্কারের কথা, ‘আসলে খেলোয়াড়েরা নিশ্চিত করতে চায় যে তারা চোটে পড়বে না। যেটা তাদের আইপিএলের জন্য ফিট থাকার পথে বাধা হতে পারে এবং আইপিএলের চুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা করতে পারে। এ কারণেই ডাইভ দেওয়া আর স্লাইড করা বা সীমানার কাছ থেকে জোরে থ্রো করা থেকে নিজেদের বিরত রাখে।’