Image default
স্বাস্থ্য

কেন অল্প বয়সেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন? জেনে নিন মুক্তির উপায়

চোখে মুখে বয়সের ছাপ পড়ে যাওয়ার সমস্যা আজকালকার দিনে প্রায় সকলেরই হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষই বুড়িয়ে যাচ্ছেন অল্প বয়সেই। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষই পড়ছেন এই সমস্যাতে। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী হল বর্তমান সময়ের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা ও খাওয়া দাওয়া।

এটি সত্য যে আগের মতো আবহাওয়া এবং খাবারদাবার পাওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার, কিন্তু তাই বলে সকলেই তো অল্পবয়সে বুড়িয়ে যাচ্ছে না। তা হলে কিছু মানুষ কেন কম বয়সেই বুড়িয়ে যান? এর পেছনে রয়েছে তাদেরই কিছু বদঅভ্যাস। এগুলো এমনকিছু বাজে অভ্যাস, যা শরীর ও ত্বকের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ফলত, অল্পবয়সেই বুড়িয়ে যাওয়ার সমস্যায় পড়তে হয় অনেককে।

কেন অল্প বয়সেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন

আমাদের সেই বাজে অভ্যাসগুলো সম্পর্কে চলুন জেনে নিই –

১. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসঃ

আপনি কি কখনো নজর করেছেন আপনি কি খাচ্ছেন? বাইরের তেলেভাজা খাবার ফাস্ট ফুড এই সবই আপনার ত্বকের বয়স বাড়ানোর জন্য দায়ী খাবার। চিনি জাতীয় খাবার অনেক পছন্দ? তাহলে জেনে নিন এই চিনি জাতীয় খাবারের কারণেই আপনার ত্বক হারাচ্ছে ইলাস্টিসিটি। যার কারণে বুড়িয়ে যাচ্ছেন আপনি। কোমল পানীয় পানের অভ্যাস থাকলে জেনে রাখুন, নিজের হাতেই ক্ষতি করছেন দাঁত ও হাড়ের। এতে করে বার্ধক্য আসছে শরীরে।

২. ধূমপান ও মদ্যপানঃ

অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। কিন্তু ধূমপান ও মদ্যপানের ফলে আপনার দেহ ও ত্বক দুটোরই বয়স বেড়ে যাচ্ছে অনেক। গবেষণায় দেখা যায় যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তাদের প্রতিবছরে দেহের যতোটা ক্ষয় হয় তা সাধারণত ৫ বছরে হয়ে থাকে। মদ্যপানের ফলাফল প্রায় একই রকম। তাই আপনি নিজেকেই নিজে বার্ধক্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।

৩. শারীরিক পরিশ্রম না করাঃ

গবেষণায় জানা যায় প্রতিবছর ধূমপানের ও মদ্যপানের কারণে যতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন ঠিক ততো মানুষই অলসতা ও অপরিশ্রমি হওয়ার জন্য করে থাকেন। শুনতে অবাক শোনালেও এটি সত্যি। শারীরিক পরিশ্রম করার মাধ্যমে নানা রোগ ও শারীরিক সমস্যা দেহে বাসা বাঁধতে পারে না। কিন্তু দেহে অলসতা থাকলে কিংবা বসা কাজের কারণে শারীরিক পরিশ্রম না করতে দেহ বার্ধক্যের দিকে যেতে থাকে।

৪. অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেয়াঃ

ঘরে বাইরে আজকাল প্রায় সকলেরই মানসিক চাপটা একটু বেশি। কিন্তু এই মানসিক চাপের ফলে আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি করে চলেছেন আপনি নিজেই। অল্পতেই অতিরিক্ত অস্থির হয়ে পড়া, মানসিক চাপ নেয়া আপনার মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট করে যা বয়সের সাথে সাথে হয়ে থাকে।
সুতরাং একটু সর্তক থাকুন। দুশ্চিন্তা থাকবেই, সবকিছুর সাথে মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন, স্বাভাবিকভাবে নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখুন নিজেকে।

৫. অপর্যাপ্ত ঘুমঃ

মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ততা ও অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে ত্বক হয় পড়ে নির্জীব। ফলে চেহারায় সহজেই বয়সের ছাপ ধরা পড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ত্বক পুনরুজ্জীবিত হতে পারেনা। ফলে সুস্থ কোষও ধ্বংস হয়ে যায়। ফল স্বরূপ বয়সের ছাপ পড়ে। তাই ত্বক ভালো রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের বিকল্প নেই।

৬. উপুড় হয়ে ঘুমানোঃ

অনেকেরই এই অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু উপুড় হয়ে ঘুমানে মুখ বেকায়দাভাবে বালিশের উপর থাকে যা ত্বকে রিংকেল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এতে করে অল্প বয়সেই আপনাকে বেশ বয়স্ক মনে হয়। এছাড়াও খাবার হজমে সমস্যা এবং মেরুদণ্ডের ক্ষতি তো রয়েছেই। তাই সাবধান হয়ে যান এখনই।

৭. সূর্যরশ্মিঃ

সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ত্বকের যতোটা ক্ষতি করে অন্য কোনো কিছুই এতোটা ক্ষতি করতে পারে না। আপনি যদি সানস্ক্রিন না লাগিয়ে বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করেন তাহলে বয়স ৩০ পার হতে না হতেই ত্বকে দেখা দেবে বয়সের ছাপ। এছাড়াও সানগ্লাস ব্যবহার না করার কারণে দৃষ্টিশক্তিরও সমস্যা দেখা দেয় অনেকাংশে।

চেহারাতে পড়া বার্ধক্যের ছাপ থেকে মুক্তির উপায়ঃ

১. প্রতিদিন ২-৩ লিটার জল খাওয়ার চেষ্টা করুন। শরীরে জলের ভারসাম্য ঠিক থাকলে ত্বকও ভাল থাকে। ত্বকের জেল্লা বেড়ে যায়।
২. নিয়মিত যোগব্যায়াম অভ্যাস করা প্রয়োজন। তাহলে ধৈর্য বাড়ে। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি হয়, মন ভাল থাকে। হতাশা কমে যায় আর অনেক বেশি করে সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকা যায়। ফিরে আসে ত্বকের লাবণ্য।
৩. মাছের তেলে ওমেগা ৩ , ফ্যাটি অ্যাসিড, ইপিএ, ডিএইচএ থাকে। এটা ত্বক, চুল, নখকে মজবুত করে ও স্মৃতিশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে।
৪. গ্লুটাথিয়নকে দেহের মাস্টার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বলা হয়। এটা অ্যান্টি এজিংয়ের বিরুদ্ধে খুব ভাল ভাবে কাজ করে।
৫. ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এটা ত্বকের জেল্লা নষ্ট করে দেয়। ত্বককে নিস্তেজ করে দেয়, ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়।
৬. অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন। এটা ত্বকের জন্য খুবই খারাপ। ত্বককে ডিহাইড্রেট করে ত্বকের ক্ষতি করে।
৭. প্রতিদিন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগানো দরকার। এটা ত্বককে সিক্ত রাখে। চেহারাকে উজ্জ্বল করে তোলে।

Related posts

Stiff person syndrome patients share what it’s like to live with the rare disease

News Desk

চীনের জলাভূমির হাসপাতালে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার সংখ্যা বেড়েছে

News Desk

2024 সালে বিজ্ঞানীদের 5টি প্রধান আলঝেইমার আবিষ্কার

News Desk

Leave a Comment