Image default
মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালে ঈদের দিনেও কি মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল?

১৯৭১ সালে,মার্চের পর থেকে একের পর এক বিভীষিকা দেখছিল বাঙালিরা।দেখতে দেখতে ঈদ চলে এলো।নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ ঈদ এসে পরলো। কিন্তু ঈদে ঢাকায় ঘটা করে কিছুই হয়নি। কয়েক জায়গায় ছোট খাটো জামাত এ নামাজ হয়। আর আমাদের কাছে ঈদের নামাজ মনে ঈদ উদযাপন।নামাজ না হলে ঈদটাই মাটি হয়ে যায়।

পাকিস্তানি বাহিনীর যে সব গ্রামে ছিল সে সব গ্রামে ঈদ উদযাপন হয়নি বললেই চলে। প্রিয়জন হারানোর শোক ও মৃত্যু ভয় তাদের সারাক্ষণ বিচলিত রাখতো।আর যাদের ছেলেরা যুদ্ধ করছে তাদের তো উৎকণ্ঠার সীমা নেই।ছেলে বাড়ি নেই,মেয়ে পাকিস্তানি ক্যাম্পে,ভাই মারা গেছে পাক সেনাদের গুলিতে,এই সকল অবস্থায় ঈদের নামাজ বেশিরভাগেরই পড়া হয় নি।

বীর উত্তম আসফাক সামা
ছবি: bangalianaa.com

ঈদের দিন কুষ্টিয়ার ভূরুঙ্গামারীতে বীর উত্তম আসফাক সামাদ শহীদ হন।

তবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মুজিবনগরে।মুজিবনগরের ছোট্ট মাঠে বহু মুক্তিযোদ্ধা ও কমান্ডাররা ঈদের জামাত আদায় করেন।মেজর জেনারেল এম.এ.জি ওসমানী এবং তার স্টাফরাও নামাজ আদায় করেন তাদের সাথে। কলকাতা থেকে ঈদের রাতে বাংলাদেশে ঢোকেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ।তিনি ও আরো বহু নেতা কর্মী কলকাতায় নামাজ আদায় করেন।তিনি ১৯ শে নভেম্বর মুজিবনগরে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে এক বার্তায় বলেন,”এই ঈদ আমাদের প্রার্থনা হোক”।

১৯৭১ সালে ঈদের দিনে
ছবি: old.somoyjournal.com

অনেক মুক্তিযোদ্ধারা আবার সেদিন কিছু সময়ের জন্য অস্ত্রবিরতি দিয়েছিলেন।কেউ কেউ নিজেরা নিজেরাই জামাতে নামাজ পড়েন।তারপর অস্ত্র হতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এমনি এক মুক্তিযোদ্ধার কথা মনে আছে আমার।তিনি বলেন,”আমি আমার কমান্ডারকে বললাম ভাই আজ তো ঈদ।আজ কি যুদ্ধ করবো?তার কমান্ডার বলেন,”আমাদের বাবা ভাইয়েরা গুলি খেয়ে মরছে।বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছে।গ্রাম,বাড়ি ঘর ওরা জ্বালিয়ে দিচ্ছে।আজ ঈদ কিন্তু আমাদের যুদ্ধ করতে হবে।খোদা আমাদের সহায় হবেন।আমরা সেদিন ঈদ পালন করবো যেদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হবে।আর সেই দিন বেশি দূরে নাই।”

তথ্য সূত্র: সময় জার্নাল, ডেইলি ষ্টার, রাইজিং কক্স।

Related posts

কর্ণফুলীরতে একাত্তরের শহীদ সমাধিতে প্রথম বাতি জ্বললো

News Desk

‘মা-বোনেরা অস্ত্র ধরো, স্বাধীন বাংলা রক্ষা করো’ মুক্তিযুদ্ধে নারীর বীরত্ব

News Desk

আরও ১৬ বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি

News Desk

Leave a Comment