মেট্রোরেলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে
আন্তর্জাতিক

মেট্রোরেলে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে

ছবি: সংগৃহীত

যানজটের নগরী ঢাকায় বহুল আকাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে যাতায়াতের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে ঢাকাবাসীর। আর তার জেরে উজ্জ্বল হবে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর এমনটাই বলছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

বলা হয়েছে, মেট্রোরেল প্রকল্পটি ঢাকায় মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। পাশাপাশি, এর উদ্বোধন শেখ হাসিনার সরকারকে অতিপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সুবিধাও দেবে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই দক্ষিণ এশীয় দেশটি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটের মুখে পড়েছে। এর ফলে শেখ হাসিনা ও তার দল চাপের মুখে রয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্সির পরামর্শক এবং দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্টিন রামা একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ঢাকার মতো একটি শহরের জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন। আপনি যদি বিশ্বের অন্যান্য শহরগুলোর দিকে তাকান তাহলে দেখতে পাবেন মেট্রোরেলের কারণে তাদের যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে গেছে। আর নারীদের পরিবহনের জন্যও এটি একটি নিরাপদ মাধ্যম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল বাংলাদেশের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করেছে এবং এটি উন্নয়নের আরও একটি মাইলফলক।’ এদিন শেখ হাসিনা নিজেই প্রথম যাত্রী হিসেবে ট্রেনে ভ্রমণ করেন। এটি আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি জানিয়েছে, শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথ মেট্রোরেলে পাড়ি দিতে সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না। ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই পথে ৯টি স্টেশন থাকলেও উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের যাত্রী ছাড়া অন্যরা এ সুবিধা পাবেন না।

এদিকে মেট্রোরেলের টিকিটেও আধুনিকতার ছোঁয়া থাকছে। মেট্রোরেলে যাতায়াতে কোনো কাগজের টিকিট থাকবে না। মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই কার্ড কিনে যাতায়াত করতে হবে। প্রথমদিকে স্টেশনে দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে। স্থায়ী ও এক যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড। শুরুতে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে কার্ড সংগ্রহ করা যাবে। এ পথের ভাড়া ৬০ টাকা।

তবে ১০ বছর মেয়াদি স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। এই কার্ড দিয়ে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনমতো টাকা রিচার্জ করা যাবে। স্থায়ী কার্ড পেতে নিবন্ধন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ডিএমটিসিএলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের লিংক দেওয়া হবে। এদিন থেকে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন করতে নিজের নাম, মা-বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি লাগবে।

স্টেশনের টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) থেকে বিক্রয়কর্মীর সহায়তায় কার্ড কেনা যাবে। এছাড়া ভেন্ডিং মেশিন থেকে যাত্রীরা নিজেরাই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

২০১২ সালের জুলাই মাসে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রাথমিক মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। তবে পরে সেটি ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই প্রকল্পের একটি অংশ উদ্বোধন করা হলো। পুরোদমে চালু হলে মেট্রোরেল ঘণ্টায় ৬০ হাজার ও দৈনিক পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে।

মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিলোমিটার (২১,২৬ কিলোমিটার)। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার ঋণ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে।

এসএম

Source link

Related posts

৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেল বিশ্বের জনসংখ্যা

News Desk

নতুন করে আক্রান্ত আড়াই লাখ

News Desk

এবার মার্কিন সেনাদের ইউক্রেন ছাড়তে বললেন বাইডেন

News Desk

Leave a Comment