Image default
আন্তর্জাতিক

জেলেনস্কিকে ধরতে প্রেসিডেন্ট ভবনে পৌঁছেছিল রুশ বাহিনী

ইউক্রেনে হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার বাহিনী কিয়েভের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হত্যা কিংবা আটক করার খুবই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল তারা। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ দাবি করেছেন।. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি দেখে কিয়েভ পতনকে অত্যাসন্ন বলে মনে করেছিলেন অনেকে। সেই সময় দেশ ছাড়তে জেলেনস্কির জন্য হেলিকপ্টার পাঠানোরও প্রস্তাব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু জেলেনস্কি তা নাকচ করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর ৬৫ দিনে গড়িয়েছে। যুদ্ধের এত দিন পরও রুশ আক্রমণের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য ভীষণভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন জেলেনস্কি। তিনি যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, বিশ্বব্যাংক ও গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসের উদ্দেশে ভাষণ দেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তি তাঁকে দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন।

রাশিয়ার হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ইউক্রেনের ইরপিন শহরেরর একটি ভবন
রাশিয়ার হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ইউক্রেনের ইরপিন শহরেরর একটি ভবনছবি: রয়টার্স
কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভবনে টাইম ম্যাগাজিন–এর সাংবাদিক সিমন শুস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বর্ণনা করেছেন রাশিয়ান সেনারা কীভাবে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনেই (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ধরে ফেলেছিল। যদিও প্রথম কয়েক ঘণ্টার স্মৃতি অনেকটাই ‘খণ্ডিত’, তারপরও ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরের আগের মুহূর্তটি তাঁর স্পষ্ট মনে আছে।

বোমাবর্ষণ শুরুর পর জেলেনস্কি ও তাঁর স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কি তাঁদের ১৭ বছর বয়সী মেয়ে ও ৯ বছর বয়সী ছেলেকে বাড়ি থেকে পালানোর প্রস্তুতি নিতে বলেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা তাদের ঘুম থেকে উঠতে বললাম। তখন সেখানে খুবই তীব্র শব্দ হচ্ছিল। বিস্ফোরণ ঘটেছিল।’

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তখন জেলেনস্কিকে জানায়, রাশিয়ার স্ট্রাইক টিম তাঁকে হত্যা অথবা আটক করতেই বিমান থেকে কিয়েভে নেমেছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ অ্যান্ডরি ইয়ারমাক টাইমকে বলেন, ‘ওই রাতের আগে এ ধরনের ঘটনা কেবল আমরা সিনেমাতেই দেখেছি।’

আক্রমণের প্রথম দিন রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সরকারি কোয়ার্টারের চারপাশে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক শুস্টার লিখেছেন, ‘ভবনের নিরাপত্তারক্ষীরা ভেতরের বাতি বন্ধ করে দেন এবং জেলেনস্কি ও তাঁর ডজনখানেক সাহায্যকারীর জন্য বুলেটপ্রুফ ভেস্ট ও অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে আসেন।’

কিয়েভ অঞ্চলের একটি গ্রামে বিধ্বস্ত রাশিয়ান হেলিকপ্টার
কিয়েভ অঞ্চলের একটি গ্রামে বিধ্বস্ত রাশিয়ান হেলিকপ্টারছবি : রয়টার্স
মাত্র যে কয়জন সেনা কর্মকর্তা এ ধরনের অস্ত্র চালাতে পারতেন, তাঁদের একজন ওলেস্কি আরেস্তোভিচ। ইউক্রেন সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর এই কর্মকর্তা ওই পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ওই সময় বাড়িটি পাগলাগারদে পরিণত হয়েছিল। সবাই ছিলেন অস্ত্রসজ্জিত।’

টাইম-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সেনারা দুবার প্রেসিডেন্ট ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। জেলেনস্কির পরিবার তখনো ভেতরেই ছিল।

এত কিছুর পরও পরের রাতে আরও সুরক্ষিত পরিবেশের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন জেলেনস্কি। যে প্রস্তাবের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাঁকে সরিয়ে নিয়ে নির্বাসিত সরকার গঠন করা। তবে জেলেনস্কি এসব কিছুই শোনেননি। তিনি সোজা উঠে বাইরের আঙিনায় গিয়ে নিজের ফোনে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন, যা এখন খ্যাতি পেয়েছে।

ওই সময় জেলেনস্কি বলেন, তিনি যুদ্ধে নিজের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ‘আপনি বুঝতে পারছেন তারা আপনাকে অনুসরণ করছে,’ বলেন তিনি। ‘আপনি অনুকরণীয়, আপনাকে এমন আচরণ করতে হবে, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যা একজনকে করতে হয়,’ যোগ করেন তিনি।

Related posts

ন্যাটো সদস্যপদ: ইউক্রেনকে ৯ দেশের সমর্থন

News Desk

কলকাতায় শূন্যে নামল করোনায় মৃত্যু

News Desk

১২০০ অবিস্ফোরিত ইসরায়েলি গোলা ধ্বংস করেছে গাজা

News Desk

Leave a Comment