ইউক্রেনের শহরে শহরে রুশ বাহিনীর হামলা
আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের শহরে শহরে রুশ বাহিনীর হামলা

কিয়েভের কেন্দ্রস্থলে মিসাইল হামলার পর সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন একজন বাসিন্দা

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেন জুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য অনেক শহরে বেসামরিক এলাকায় আঘাত হানা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছেন, তিনিই এসব হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার তৈরি একটি সেতুর বিস্ফোরণের জন্য তিনি ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন এবং বলেছেন ঐ ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।

যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে এটি সবচেয়ে ব্যাপক হামলা। খবর বিবিসির।

সকালের ব্যস্ত সময়ে কিয়েভ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ব্যস্ত সড়ক, পার্ক এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে রুশ ক্রুজ মিসাইলগুলি আঘাত হানে। শিশুদের একটি খেলার মাঠের পাশে একটি বিশাল গর্ত দেখা যায় এবং কাছাকাছি সেতুকে লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এসব হামলায় বেশ ক’জন নিহত হয়েছে।
তিনি বলেছেন, রাশিয়া “বিশ্বের বুক থেকে ইউক্রেনকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।”

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি বিধ্বস্ত সড়ক

কিয়েভের পাশাপাশি খারকিভ, লাভিভ, দনিপ্রো এবং জাপোরিসাসহ অন্যান্য ইউক্রেনীয় শহরেও মিসাইল আক্রমণ হয়েছে। অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার এসব হামলার কড়া সমালোচনা হয়েছে।

ইইউর পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র জোসেপ বোরেল বলেছেন, এসব ঘটনায় তিনি গভীরভাবে শোকাহত।

ব্রিটেন একে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছে। ফরাসি ও জার্মান নেতারাও টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন।

ইউক্রেনের বেশ ক’টি বড় শহরে রুশ হামলা প্রমাণ করে যে তারা এখনও লক্ষ্যভেদী অস্ত্র মোতায়েন করার ক্ষমতা রাখে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহানাত বলেছেন, রাশিয়া ৮৩টি মিসাইল ছুঁড়েছে এবং ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এর মধ্যে ৪৩টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। তিনি জানান, কালিবার, ইস্কান্দার এবং কেএইচ-১০১ মিসাইলগুলি ক্যাস্পিয়ান এবং কৃষ্ণ সাগর থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।

ক্রিস প্যাট্রিস লিখেছেন, “এবছর আমরা ৯০০ কি.মি. (৫৬০ মাইল) দূরে ক্যাস্পিয়ান সাগর থেকে আসা টিইউ-৯৩ বোমারু বিমানগুলিকে পশ্চিমে লাভিভ এবং দক্ষিণে ওডেসা পর্যন্ত আক্রমণ করতে দেখেছি।”

“এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মতে, এ সপ্তাহান্তে জাপোরিসার ওপর যেসব হামলা হয় সেগুলো একাধিক টিইউ-২৩ এমথ্রি বোমারু বিমান এবং এসইউ-৩৫ স্ট্রাইক এয়ারক্রাফ্ট থেকে এসেছিল।”

রাশিয়া-ক্রাইমিয়ার মধ্যে সংযোগকারী সেতুর ওপর তেলবাহী ট্রেনের সাতটি ট্যাংকারে আগুন ধরে যায়

তিনি লিখছেন এধরনের সিরিজ হামলা আধুনিক পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা হাতে পাওয়ার জন্য ইউক্রেনের আহ্বান আরও জোরদার করবে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের তথ্য মতে, তাদের ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমসের প্রথম চালান নভেম্বরের শেষের দিকে ইউক্রেনে যাওয়ার কথা।

সর্বশেষ কয়েকমাসে কিয়েভে কোন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।

তবে ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ কিয়েভের আশেপাশে হামলা চালিয়েছিল রুশ বাহিনী। কিন্তু এবারের হামলা কিয়েভের মূল কেন্দ্রের আরো বেশি কাছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মাত্র দুইদিন আগে রাশিয়ার সাথে অধিকৃত ক্রাইমিয়াকে সংযুক্ত করা একমাত্র সেতুটি বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটলো।

Source link

Related posts

দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের বিষয়ে ইউরোপকে বার্তা ন্যাটো-যুক্তরাজ্যের

News Desk

আরেকটি মাইলফলক, এবার নিউজ রেডিও স্টেশন চালু করছে সৌদি আরব

News Desk

ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা নিহতের সংখ্যা জানালো কিয়েভ

News Desk

Leave a Comment