Image default
আন্তর্জাতিক

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কেনিয়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৯ বছর বয়সী নারী শিক্ষার্থী প্রিসিলা সিটিয়েনেইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাকে বিশ্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবীণতম শিক্ষার্থী বলে মনে করা হয়। তার নাতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, কেনিয়ায় নিজ বাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ক্লাসে হাজির হওয়ার পর প্রিসিলার স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দেয়। তিনি ও তার ১২ বছর বয়সী সহপাঠীরা বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আগামী সপ্তাহে এই পরীক্ষা শুরু হবে।

শিক্ষার প্রতি প্রিসিলার আগ্রহ একটি চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা হয়েছে এবং জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সংস্থা ইউনেস্কো তার প্রশংসা করেছে। ব্রিটিশদের দখলে থাকা কেনিয়ায় তিনি বেড়ে ওঠেন এবং কেনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেছেন।

গত বছর ইউনেস্কোকে প্রিসিলা বলেছিলেন, তরুণ মায়েদের স্কুলে ফিরে আসার জন্য তিনি তাদের উৎসাহিত করতে চান। তার ভাষায়, আমি শুধু তাদের জন্য নয়, বিশ্বের অপর মেয়েদের কাছে; যারা স্কুলে আসে না, শিক্ষা ছাড়া বেড়ে উঠছে–তাদের সামনে একটি উদাহরণ তুলে ধরতে চেয়েছিলাম যে মুরগি ও তাদের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকবে না।

২০১০ সালে প্রিসিলা লিডার্স ভিশন প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু ৬৫ বছরের বেশি সময় ধরে রিফট উপত্যকার নদালাত গ্রামে ধাত্রীর কাজ করে আসছিলেন তিনি। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কয়েক সহপাঠীর সন্তানের জন্মও হয়েছে তার হাতে।

স্থানীয়রা ভালোবেসে তাকে ‘গগো’ নামে ডাকে। স্থানীয় কালেঞ্জিন ভাষার এই শব্দের অর্থ ‘দাদি’। ২০১৫ সালে তিনি বিবিসিকে বলেছিলেন, শেষ পর্যন্ত পড়তে ও লিখতে শিখেছেন। যে সুযোগ তিনি শিশুকালে পাননি।

যেসব শিশু স্কুলে যেত না তিনি তাদের প্রায়ই পথরোধ করতেন এবং জিজ্ঞাস করতেন কেন তারা স্কুলে যায় না। প্রিসিলা বলেন, তারা আমাকে বলতো তাদের বয়স বেশি। আমি তাদের বলতাম, দেখো আমি স্কুলে যাচ্ছি, তোমাদেরও যাওয়া উচিত।

‘বেঁচে থাকবে তার বার্তা’

শুরুতে স্কুল তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু পরে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে তিনি শেখার জন্য কতটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার জীবনের ঘটনা ফরাসি চলচ্চিত্র ‘গগো’-তে তুলে ধরা হয়েছে। এই চলচ্চিত্র তাকে ফ্রান্স সফরের সুযোগ দিয়েছে এবং তিনি ফরাসি ফার্স্টলেডি ব্রিগিট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

চলচ্চিত্রটির সহ-লেখক প্যাট্রিক পেসিস টুইটারে প্রিসিলার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, মেয়েরা শিক্ষা নিলে তার বার্তা বেঁচে থাকবে।

বতর্মানে বিশ্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবচেয়ে বয়স্ক শিক্ষার্থী হিসেবে গিনেজ বুক অব রেকর্ডসে নাম রয়েছে আরেক কেনীয় নাগরিকের। তিনি প্রয়াত কিমানি মারুগ। ২০০৪ সালে ৮৪ বছর বয়সে তিনি স্কুলে ভর্তি হন এবং পাঁচ বছর পর মৃত্যুবরণ করেন।

Related posts

‘ভুল’ সংশোধনে একদিনে ভারতে মৃত্যু ৬ হাজার ১৩৮

News Desk

ইউক্রেনকে ৬০ কোটি ডলার সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের

News Desk

আমাকে নিরাপদে সরানোর দরকার নেই, দরকার গোলা

News Desk

Leave a Comment