Image default
আন্তর্জাতিক

চীনা বিশ্ববিদ্যালয়বিরোধী বিক্ষোভ হাঙ্গেরিতে

হাঙ্গেরিতে চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রতিবাদে দেশটির রাজধানী বুদাপেস্টে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ জনতা। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে অবিলম্বে এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসার দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

দাবির পক্ষে তাদের যুক্তি— এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে একদিকে হাঙ্গেরির নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে দেশটিতে চীনের প্রভাব বাড়বে; যা কখনও তাদের কাম্য নয়।

ফুদান বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সবচেয়ে সম্মানজনক ও প্রভাবপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হাঙ্গেরিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের বিষয়ে সম্প্রতি দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।

চুক্তিতে হাঙ্গেরিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনবাবদ মোট ব্যায় ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার; যা ২০১৯ সালে হাঙ্গেরিরর উচ্চশিক্ষা খাতে অর্বানের নেতৃত্বাধীন সরকারের বরাদ্দ করা অর্থের চেয়েও বেশি।

হাঙ্গেরির অনুসন্ধানী পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সিংহভাগ— ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারই ঋণ হিসেবে আসবে চীনের একটি ব্যাংক থেকে।

চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যাল ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজ শেষ হবে। যদি এমন হয়, সেক্ষেত্রে হাঙ্গেরি হবে ইউরোপের প্রথম দেশ, যেখানে চীন তার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ধিত ক্যাম্পাস খুলতে যাচ্ছে।

শনিবার হাঙ্গেরির হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের জন্য সরকারের অধিকৃত স্থানে সমবেত হন। তারপর মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দেশের পার্লামেন্ট ভবনে সামনে গিয়ে সমাবেশ করেন।

সমাবেশে অংশ নেওয়া হাঙ্গেরির একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র জোনজা র‌্যাডিকস বলেন, ‘অর্বান ও তার রাজনৈতিক দল নিজেদেরকে সবসময় কমিউনিস্টবিরোধী হিসেবে জাহির করতে চায়, কিন্তু সত্য হচ্ছে, কমিউনিস্টরাই তাদের বন্ধু।’

প্যাট্রিক নামে আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘সরকারের উচিত চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনের পরিবর্তে আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ উচ্চশিক্ষার মান ও কাঠামো উন্নয়নে মনযোগ দেওয়া।’

হাঙ্গেরির থিঙ্কট্যাঙ্ক সংস্থা রিপাবলিকন ইনস্টিটিউট তাদের সাম্প্রতিক জরিপে জানিয়েছে, হাঙ্গেরির মোট জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশই দেশে চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনের বিরোধী।

এই তালিকায় আছেন বুদাপেস্টের মেয়র গার্গলে ক্যারাকসনি; যিনি সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন বুদাপেস্টের বিভিন্ন সড়কের নাম চীন সরকারের হাতে নির্যাতিত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীদের হাতে রাখা হবে।

ইতোমধ্যে কয়েকটি সড়কের নাম রাখাও হয়ে গেছে। এগুলো হলো ফ্রি হংকং রোড, দালাই লামা স্ট্রিট, উইঘুর মারটেয়ার্স রোড প্রভৃতি।

রাজনৈতিকভাবে ডানপন্থার অনুসারী ভিক্টর অর্বান চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্য তার নিজের দেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত। চলতি মাসর শুরুর দিকে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের নিপীড়ণের নিন্দা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে নিন্দা প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে স্বাক্ষর করেনি হাঙ্গেরি।

Related posts

অবশেষে দলের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

News Desk

লকডাউন শিথিলের বিষয়ে সতর্ক করল ডব্লিউএইচও

News Desk

আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ

News Desk

Leave a Comment