Image default
আন্তর্জাতিক

কথিত নরবলি দিয়ে দুই নারীকে করা হয় টুকরা টুকরা

ভারতের কেরালায় ভ্রান্ত ধারণা থেকে কথিত নরবলির নামে দুই নারীকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কেরালা পুলিশ দুই নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর হত্যায় জড়িত সন্দেহে এক দম্পতিসহ তিনজনক গ্রেপ্তার করে। আর্থিক সমৃদ্ধির আশায় কুসংস্কার থেকে কয়েক মাস আগে ওই দুই নারীকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ ধারণা করছে।

পুলিশ বলছে, হত্যার আগে দুই নারীর ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে দুই নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজ্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

কোচির পুলিশ কমিশনার সি এইচ নাগারজু বলেছেন, চার মাস আগে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। ‘মানুষকে বলি দিলে আর্থিক সমৃদ্ধি হবে’—এমন একটি কুসংস্কার থেকে তাঁদের হত্যা করা হয়। তিনি আরও জানান, গতকাল পাথানামথিট্টা জেলায় ভগবল সিংয়ের বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে দুই নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সেটা শুধু অনুমান করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই এর তদন্ত করা হবে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার দুই নারীর নাম পদ্মা ও রোজলি। পদ্মা (৫২) কেরালা সীমান্ত লাগোয়া তামিলনাডু রাজ্যের বাসিন্দা। তিনি কোচিতে থাকতেন। রোজলি (৪৯) কেরালার ত্রিশুর জেলার বাসিন্দা। তিনি থাকতেন কালাডি শহরে। পদ্মার ছেলে গত মাসে থানায় একটি অভিযোগ করে জানান, তাঁর মাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

কেরালায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভারতীয় জাতীয় সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে এ হত্যার ঘটনা।

পুলিশ বলেছে, হত্যায় অভিযুক্ত তিনজন হলেন ভগবল সিং, তাঁর স্ত্রী লায়লা ও মোহাম্মদ শাফি। এর মধ্যে ভগবল সিং হলেন বৈদ্য। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে ‘ভণ্ড বাবা’ বলে বর্ণনা করছে। ইদুক্কি জেলার মোহাম্মদ শাফি ভগবলকে ‘গুরু’ মানতেন। তাঁরা তিনজন মিলে ওই দুই নারীকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করেন।

আজ বুধবার কোচি শহরের একটি আদালত গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তিকে তিন সপ্তাহের বিচারিক হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতের কিছু অংশের মানুষ এখনো ‘কালাজাদু’ চর্চা করেন। লোকেরা বিশ্বাস করে, এর মাধ্যমে মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা আসে, নিঃসন্তান নারীরা সন্তানের জন্ম দিতে পারেন, বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মেলে, এমনকি ‘কালাজাদু’ করার মাধ্যমে বৃষ্টিও নামানো যায়। কালাজাদুর কারণেই এ হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছে পুলিশ।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডে বিবেকবান মানুষ হতবাক। কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এভাবে অপহরণ ও হত্যার ঘটনা কেরালার মতো একটি রাজ্যে কল্পনাতীত।

উল্লেখ্য, ভারতের কেরালাকে দেশটির সবচেয়ে প্রগতিশীল রাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

Related posts

সুদানের দারফুরে সংঘর্ষে নিহত ১৬৮, আহত ১০০

News Desk

বিশ্বকে করোনার টিকা উপহার দেবে জি-৭

News Desk

মডার্নার টিকার অনুমোদন দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

News Desk

Leave a Comment