Image default
আন্তর্জাতিক

উত্তর কোরিয়ার ‘দর্পচূর্ণ’ করতে একজোট যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশ

নতুন বছরেই শুরুতেই উপর্যুপরি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমের ‘বিশ্বকে কাঁপিয়ে’ তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ হওয়ার মতো একমাত্র দেশ বলে এক বিবৃতিতে দম্ভের সঙ্গে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার এই দর্পচূর্ণ করতে এক জোট হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।

হনলুলুতে একদিনের বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুং ইউই-ইয়ং ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা এক যৌথ বিবৃতিতে চলতি বছরে উত্তর কোরিয়ার সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ‘অস্থিতিশীল’ বলে মন্তব্য করেছে।

বিবৃতিতে তারা জানায়, পিয়ংইয়ংকে তার বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে এবং এর বদলে সংলাপে বসতে হবে।

ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করে ব্লিংকেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ডিপিআর উসকানির একটি পর্যায়ে রয়েছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে অন্য তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সঙ্গে ছিলেন।

এ সময় উত্তর কোরিয়ার আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর অতি সম্প্রতি আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ডিপিআরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার উপায় খুঁজতে আমরা কাজ করে যাবো।

এ সময় তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমগ্র কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনা ফের শুরু করার জন্য তারা প্রস্তুত বলেও জানান।

উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষার উপর জাতিসংঘের একটি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দেশটির উপর জাতিসংঘের কঠোর অবরোধ রয়েছে। তবে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি নিয়মিত এসব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আসছে। কারণ দেশটির নেতা কিম জং উন সামরিকভাবে দেশটিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

উত্তর কোরিয়া দ্রুত একটি কার্যকর পারমাণবিক প্রতিরোধকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক একজন নৌ কমান্ডার প্রফেসর কিম ডং ইয়ুপ বলেন, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই হওয়ার কথা ছিলো। আমি অবাক হচ্ছি, কারণ আমরা উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিকে ছোট করে দেখেছি। আসলে উত্তর কোরিয়া তার সামরিক সক্ষমতা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

গত ৫ ও ১০ই জানুয়ারির পরীক্ষার পর পিয়ংইয়ং দাবি করেছিল যে তারা সফলভাবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

কারণ এর মানে হলো উত্তর কোরিয়া এমন প্রযুক্তি তৈরি করছে, যা ওই অঞ্চল জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ব্যয়বহুল ও জটিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে হারিয়ে দিতে পারে।

তবে দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হামলা হলে প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে কার্যকর প্রতিরোধকে রূপান্তর থেকে বহু দূরেই আছে উত্তর কোরিয়া। যদিও দেশ দুটি বারবার বলেছে উত্তর কোরিয়া বর্তমান শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাতের বা হামলার কোনো লক্ষ্য তাদের নেই।

তার পরও ছোট এই দেশটি কেন তার জিডিপির এক চতুর্থাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে চলেছে সেটিই মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ব্যাপারে, বিশ্লেষক অঙ্কিত পান্ডা বলেন, যে এমনও হতে পারে যে উত্তর কোরিয়া মনে করে যে নিজেকে রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র এখনো তাদের নেই।

তিনি বলেন, কিম জং উন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমার মনে হয় তিনি চীন বা রাশিয়াসহ কাউকেই বিশ্বাস করেন না। সে কারণেই হয়তো মনে করছেন যে তার সক্ষমতাকে অনেক বাড়াতে হবে।

Related posts

করোনামুক্তির ৪ দিনের মাথায় ফের আক্রান্ত বাইডেন

News Desk

‘ভুল’ সংশোধনে একদিনে ভারতে মৃত্যু ৬ হাজার ১৩৮

News Desk

কাতার বিশ্বকাপে ফিফার সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড

News Desk

Leave a Comment