Image default
আন্তর্জাতিক

হিজাব–বিতর্কে প্রভাষকের পদত্যাগ, বললেন এটা আত্মসম্মানের বিরুদ্ধে

দক্ষিণ ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য কর্ণাটকে হিজাব-বিতর্কের সূত্রপাত। তবে এ বিতর্ক পদুচেরি, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানসহ অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে, ছড়াচ্ছে উত্তেজনাও। এরই মধ্য পদত্যাগ করেছেন কর্ণাটকের একটি কলেজের ইংরেজির একজন প্রভাষক। কেন তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, চিঠিতে তা–ও জানিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

কর্ণাটকের জৈন পিইউ কলেজের ইংরেজির প্রভাষক চাঁদনি। তিন বছর ধরে তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাস করান। হিজাব পরার ওপর বিধিনিষেধের বিরোধিতায় পদত্যাগ করলেন তিনি। হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে একজন শিক্ষিকার পদত্যাগ আরও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

চলমান হিজাব-বিতর্কের মধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষে কর্ণাটক হাইকোর্টের শুনানিতে রাজ্যটির অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) প্রভুলিঙ্গ নভরগি বলেন, ইসলাম ধর্মে হিজাব পরা অত্যাবশ্যকীয় ধর্মীয় প্রথা বা আচার নয়। তাই হিজাব পরতে মানা করলে তাতে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হবে না।

কর্নাটক হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছেন, আপাতত কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় কোনো পোশাক পরে যাওয়া যাবে না। এই নির্দেশের পরই জৈন পিইউ কলেজের অধ্যক্ষ নাকি সব শিক্ষককে ডেকে পাঠান। অধ্যক্ষ নাকি সব শিক্ষককে বলেন যে এর পর থেকে আর এমন কোনো পোশাক পরে কলেজে আসা যাবে না, যার সঙ্গে ধর্মের যোগ আছে। আর এই নির্দেশের পরই চাঁদনি নামক সেই শিক্ষিকা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন তিনি। এটি এখন ভাইরাল হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘হিজাব ছাড়া কলেজে যাওয়া আমার আত্মসম্মানের বিরুদ্ধে। তিন বছর ধরে আমি জৈন পিইউ কলেজের প্রভাষক। এই তিন বছরে আমার কোনো অসুবিধা হয়নি। আমি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করেছি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সকালে আমাদের অধ্যক্ষ স্যার আমাদের ডেকে বললেন, আমাদের হিজাব পরা উচিত নয়। কোনো ধর্মীয় প্রতীকের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত নয় এবং তাঁদের কাছে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা এসেছে।’

ইংরেজির এই প্রভাষক সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমি হিজাব পরে ক্লাস করাচ্ছি। এটা (নিষেধাজ্ঞা) আমার আত্মসম্মানের বিরুদ্ধে ছিল তাই আমি পদত্যাগ করেছি। আমি ওই কলেজে হিজাব ছাড়া কাজ করব না। তিনি তাঁর পদত্যাগপত্রে হিজাব নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে মন্তব্য করেছেন।’

হিজাব পরার জন্য শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। গত বছরের ডিসেম্বরে কর্ণাটক রাজ্যের উদুপি জেলায় সরকারি গার্লস পিইউ কলেজের ছয় শিক্ষার্থী এমন অভিযোগের পর মুসলিম ছাত্রীরা এর প্রতিবাদ শুরু করেন। রাজ্যটিতে হিজাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় স্কুল-কলেজ। এরপর তাঁরা কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এ মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের আদেশে স্কুল খুললেও বিতর্ক কমেনি।

Related posts

চীনের কাছ থাকে আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা উপহার পাচ্ছে বাংলাদেশ

News Desk

শ্রীবরদীতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার

News Desk

সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব

News Desk

Leave a Comment