Image default
আন্তর্জাতিক

হামলার পাশাপাশি আলোচনায় বসতে আগ্রহী রাশিয়া

ইউক্রেনে গতকাল মঙ্গলবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বৈদ্যুতিক অবকাঠামো লক্ষ্য করেই বেশি হামলা চালানো হয়। একই সঙ্গে সংকটের কূটনৈতিক সমাধানও খুঁজছে রাশিয়া। পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউক্রেনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগ্রহের কথা জানিয়েছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নতুন করে রাশিয়ার হামলা ও কূটনৈতিক সমাধানের প্রস্তাবের মধ্যে সামরিক সাহায্য পেতে গতকাল ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭-এর নেতাদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি তাঁদের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছেন।

 

রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী ক্রিমিয়ার কার্চ সেতুতে গত শনিবার বিস্ফোরণ হয়। দুদিন পর গত সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ কয়েকটি অঞ্চলে ৮৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জন হয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত চারটি প্রদেশের ৩০০ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি।

ওই দিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেনের সামরিক, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালাতে তিনিই নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাদিঝিনস্কা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী লিভিভ শহরে আবারও হামলা চালানো হয়। সেখানে বৈদ্যুতিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। শহরের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা এখনো বিদ্যুৎহীন। লিভিভে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা নিশ্চিত করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকা জাপোরিঝঝিয়ায় কয়েক দিন ধরে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। গত সোমবার দিবাগত রাতে সেখানে ১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের পাভ্লোগ্রাদ ও কামিয়ান জেলায় বৈদ্যুতিক অবকাঠামোয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। সেখানকার বৈদ্যুতিক অবকাঠামোগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গতকাল সকালে ইউক্রেনের কিয়েভ, খামেলনিৎস্কিসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে হামলা চালানো হয়। যুদ্ধবিমান থেকে এসব এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেন, রুশ বাহিনীর হামলার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, তারা কৌশল পরিবর্তন করেছে। রুশ বাহিনীর এখন প্রধান লক্ষ্য বৈদ্যুতিক অবকাঠামো।

আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চায় ইউক্রেন
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে হামলা শুরুর পরপরই পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। পশ্চিমা বিশ্ব তখন সাড়া দেয়নি। তবে গত সোমবার রুশ বাহিনীর ব্যাপক হামলার পর বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে।

গতকাল ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭-এর নেতাদের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে বলা হয়েছে, এ বৈঠকে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চাইলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

গতকাল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি অবশ্য আগেই বলেছেন, ইউক্রেনের আকাশসীমা নিরাপদ করতে সাহায্য করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে আধুনিক কোনো আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ইউক্রেনকে দেওয়া হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াও ইউক্রেনকে আরও সামরিক সাহায্যের বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা।

বৈঠকে বসতে চায় রাশিয়া
ইউক্রেনের চার অঞ্চল খেরসন, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়াকে রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করার পর আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। কিন্তু সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন। এরপরও আলোচনায় বসার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া।

গতকাল রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাশিয়া সব সময়ই প্রস্তুত। তবে আমলে নেওয়ার মতো এখনো কোনো প্রস্তাব তারা পায়নি। এ ছাড়া আসছে আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে জো বাইডেনের সঙ্গে পুতিনের বৈঠকে বসার কথা বলেনতিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বৈঠকে বসার ব্যাপারেও আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। এ লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পুতিন ও এরদোয়ান কাজাখস্তানে বৈঠক করবেন।

Related posts

সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে মালদ্বীপ ছাড়লেন পলাতক গোতাবায়া

News Desk

অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলের আরও কাছে ঘূর্ণিঝড় অশনি

News Desk

চীন-সৌদির সমঝোতা স্মারক সই

News Desk

Leave a Comment