কাজ কমিয়ে পরিবারের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন এ আর রাহমান
বিনোদন

কাজ কমিয়ে পরিবারের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন এ আর রাহমান

এক সময় এ আর রাহমানের কাছে কাজই ছিল সব। রাত দিন ডুবে থাকতেন স্টুডিওতে। তবে এখন জীবনযাপনে খানিকটা বদল এনেছেন এই বিশ্ববিখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ আর রাহমান জানিয়েছেন, বছরের পর বছর নিরলস পরিশ্রমের পর, এখন তিনি কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছেন। গুরুত্ব দিচ্ছেন পরিবারকে।

সাফল্যের শিখরে থেকেও আত্ম সন্ধানী অস্কারজয়ী এই সুরকার অকপটে স্বীকার করেন, কর্মজীবনের শুরুতে কাজের পেছনে ছুটতে ছুটতে জীবনের অনেক মূল্যবান অনুভূতি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এ আর রাহমান বলেন, ‘আগে আমি যেন এক উন্মাদ ছিলাম, দিন-রাত কাজ করতাম। অতিরিক্ত কাজ করলে কখনো কখনো জীবনের আসল স্বাদ মিস হয়ে যায়।’

কনসার্টে এ আর রাহমান। ছবি: সংগৃহীত

এখন তিনি সেই ছুটে চলা থামিয়ে দিয়েছেন। গুরুত্ব দিচ্ছেন নতুন কিছু শেখার, অনুভব করার এবং পরিবারের সঙ্গে জীবন উপভোগ করাটাকে। কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছেন রাহমান।

নিজের টিম নিয়ে মাঝে মাঝে সিনেমা দেখতেও যান এ আর রাহমান। এতে করে সংগীত নিয়ে তাঁর সারাক্ষণের যে ব্যস্ততা, তা থেকে খানিকটা অবসর মেলে। রাহমান বলেন, ‘মাঝে মাঝে সিনেমা দেখতে যাই দলবল নিয়ে। মার্ভেলের সিনেমা দেখি। ২০-৩০ জন একসঙ্গে যাই। আমার টিমের পরিবারের সদস্যরাও থাকে সঙ্গে। আমরা পেছনের দিকের সিটে বসি। পপকর্ন খাই। মজা করি। দুই তিন মাস পরপরই এমন আয়োজন থাকে।’

মার্ভেলের সিনেমা যে তাঁর খুবই পছন্দের, তা নয়। তবে হলিউডের সিনেমায় সাউন্ডের ব্যবহারটা বুঝতেই এ ধরনের সুপারহিরোকেন্দ্রীক সিনেমা বেশি দেখেন তিনি। রাহমান বলেন, ‘শিল্পী মন হওয়ায় এসব এমনিতেই চোখে পড়ে। কীভাবে গান ব্যবহার করা হয়েছে, মিউজিকে নতুনত্ব আছে কিনা, আরও ভালো করা যেত কিনা— সিনেমা দেখতে দেখতে এসব ভাবি। ঠিক যেভাবে মানুষ আমার সংগীতের সমালোচনা করে’, হাসতে হাসতে বলেন রাহমান।

বিশ্বজোড়া খ্যাতি তাঁর। ২০০৯ সালে অস্কার পাওয়ার অনেক আগে থেকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন ব্যস্ততম সংগীত পরিচালক। একের পর এক সিনেমা মুক্তি পেত তাঁর। তবুও ওই সময় তিনি উদ্বিগ্ন থাকতেন, এর পর কী হবে! আর কোন সিনেমার কাজ আসবে!

কনসার্টে এ আর রাহমান। ছবি: সংগৃহীতকনসার্টে এ আর রাহমান। ছবি: সংগৃহীত

এ অনিশ্চয়তা এখনো তাঁকে তাড়া করে মাঝে মাঝে। নিজের বিশ্বাস আর ধৈর্য দিয়ে মোকাবেলা করেন সে পরিস্থিতি। রাহমান বলেন, ‘অনেক সময় পরিকল্পনা করেও বাতিল হয়ে যায়। কখনো কখনো সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন আমি স্রোতের সঙ্গে চলি। পানির মতো। পানি যেমন যে পাত্রে রাখা হয়, তার আকার ধারণ করে। কাজও আসে নিজের ছন্দে, নিজের নিয়মে। তবে সৃষ্টিকর্তা আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আমাকে অনেক ভালো সময় উপহার দিয়েছেন।’

এ কথাগুলো যেন তাঁর সৃষ্টিশীলতার অন্তর্নিহিত দর্শন—যেখানে তিনি নিজেকে সময়ের হাতে সঁপে দেন, স্রষ্টার ইচ্ছায় ভেসে চলেন।

সর্বশেষ মণি রত্নমের ‘থাগ লাইফ’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছেন এ আর রাহমান। তাঁর হাতে আছে ‘রামায়ণ: পার্ট ওয়ান’, ‘তেরে ইশক ম্যায়’, ‘পেড্ডি’, ‘মুন ওয়াক’, ‘গান্ধী টকস’সহ কিছু সিনেমার কাজ।

Source link

Related posts

‘পাঠান’ ঝড়ে কি চাপা পড়ছে দক্ষিণের দুই সুপারস্টারের সিনেমা

News Desk

ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতায় থাকছে যেসব সিনেমা

News Desk

সালমান খানের পর সোনু সুদও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন

News Desk

Leave a Comment