ভারতের গোয়া শহরটি দুটি কারণে পরিচিত। প্রথমত সমুদ্র ও সৈকতের জন্য, দ্বিতীয়ত সিনেমার জন্য। প্রতি বছর এখানেই অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া’। চলতি বছরের আয়োজন গত ২০ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ২৮ নভেম্বর। এতে বাংলাদেশের চারটি ছবিও অংশ নিয়েছে। সেই সুবাদে ঢাকার শোবিজের বেশ কয়েকজন তারকার পা পড়েছে গোয়া উৎসবের লাল গালিচায়।
ঢাকা থেকে গোয়ায় যাওয়া একটি ছবি ‘নকশীকাঁথার জমিন’। আকরাম খান পরিচালিত ছবিটি উৎসবে প্রথমবার প্রদর্শিত হয়েছে, সেই সঙ্গে লড়েছে ইউনেস্কো গান্ধী পুরস্কারের জন্যও। এই সিনেমায় জয়া আহসানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন দিব্য জ্যোতি ও সৌম্য জ্যোতি। তারা দুজন তারকা দম্পতি শাহনাজ খুশি ও বৃন্দাবন দাসের যমজ পুত্র।
পুত্রদ্বয়ের প্রথম সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী, খুশি-বৃন্দাবন সামনে বসে দেখবেন না, তা কী করে হয়! তাই ছেলেদের সঙ্গে তারাও উড়াল দিয়েছেন সমুদ্র তীরের শহর গোয়ায়। যদিও মনের ভেতর আরও একটি ইচ্ছে পুষে রেখেছিলেন খুশি, তা হলো এশিয়ার অন্যতম এই উৎসবে সিনেমা ঘিরে জমজমাট আয়োজন নিজ চোখে দেখা।
গোয়া উৎসবের অভিজ্ঞতার কথা বাংলা ট্রিবিউনের কাছে শুনিয়েছেন খুশি। তার ভাষ্য, ‘একটা শহর, যেখানে শুধু সিনেমা দেখানো হয়! ১৫-২০টা ভেন্যু, পুরো শহরটিকে আলোকসজ্জিত করা হয়েছে, বিভিন্ন সিনেমার ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন হলে ছাত্রছাত্রীরা এসে সিনেমা দেখছে, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দর্শক, শিল্পী, নির্মাতার পদচারণায় শহরটা মুখর।’
2211
বৃন্দাবন দাস ও খুশির সঙ্গে তাদের দুই পুত্র
নিজেকে ভাগ্যবান দাবি করে খুশি বলেন, “এ আর রহমান, অক্ষয় কুমার, আল্লু অর্জুন, প্রসেনজিৎ, দেব, অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আড্ডা দিয়েছি। সবাইকে একটা হোটেলে রাখা হয়েছিল। সকাল ৯টা থেকে শো শুরু হতো, রাত অব্দি চলতো। মজার ব্যাপার হলো, ভেন্যু থেকে কেউ ফেরে না। সারাক্ষণ সিনেমা কেন্দ্রিক আলোচনা-আড্ডায় মেতে থাকে। আমি অনেক ভাগ্যবান মা কিংবা মানুষ যে আমার ছেলেদের প্রথম সিনেমা ‘নকশীকাঁথার জমিন’-এর সুবাদে আমিও সেখানে যেতে পেরেছি।”
খুশি জানালেন, তিনি ও বৃন্দাবন ছেলেদের সঙ্গে গেলেও মূলত নিজ খরচে গিয়েছেন। বললেন, ‘দিব্য, সৌম্যই মূলত আমন্ত্রিত ছিল। কিন্তু একদিকে ওরা একা একা কোথাও সেভাবে যায় না। আবার আমরা যেহেতু এই অঙ্গনের মানুষ, সিনেমা ঘিরে এত বড় আয়োজনের সাক্ষী হওয়ার লোভও ছিল মনে। তাই বৃন্দাবন ও আমার আলাদা রেজিস্ট্রেশন করে নিজের খরচে গিয়েছি আমরা।’
প্রথমবার ছেলেদের বড় পর্দায় দেখে আপ্লুত শাহনাজ খুশি। তার বক্তব্য, ‘আমার ছেলেদের প্রথমবার বড় পর্দায় দেখলাম এবং এত বড় পর্দা; আমাদের দেশে নেই। সাউন্ড, প্রজেকশন প্রত্যেকটা জিনিস অসাধারণ। শো দেখলাম, আপ্লুত হলাম। দিব্য, সোম্যকে আলাদা করে বক্তব্য দিতে দেওয়া হলো, ওই মুহূর্তের সাক্ষী হলাম। এরপর ওরা সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর নিমন্ত্রণে ডিনার অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। দিব্য, সৌম্য আসলে আগে স্থায়ীভাবে মিডিয়ায় কাজ করতে চাইতো না। শখের বশে কাজ করতো। তবে ওখানে যাওয়ার পর সিনেমার এই পরিবেশ দেখে বিষয়টা নিয়ে খুব আগ্রহী হয়ে উঠেছে।’