Image default
বই ও সিনেমা

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় – এর “পথের পাঁচালী” বুক রিভিউ

বই: পথের পাঁচালী
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশক: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
মুদ্রিত মূল্য: ২৫০/=
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২২৪

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: সংগৃহিত

নিশ্চিন্দিপুরের এক ছোট্ট ভিটের স্বপ্নময় জীবনের গল্প পথের পাঁচালী। যেখানে নানা জাগতিক জটিলতায় জীবন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকলেও ভালোবাসার কমতি নেই। সংসারের টানাপোড়নে সর্বজয়ার মন কাঁদে বাচ্চাদের মুখে একটু ভালো মন্দ তুলে দেবার জন্য। শরীকরা ফিকির করে বাগানটাও দখল করে নিয়েছে। বাড়ির কর্তার এদিকে দোলচাল নেই। তিনি আছেন তার জগত নিয়ে।

দস্যি দূর্গা সারাদিন বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়, ফল চুরি করে এনে পিসীকে দেয় আর ওদিকে বিচার যায় মায়ের কাছে। উত্তম মধ্যম পড়ার পরও কমে না তার দস্যিপনা। অপু দূর্গার একনিষ্ঠ ভক্ত। দিদির ফল পাকুড়ের ভাগ নেওয়া থেকে শুরু করে বড় মাঠের ওধারে রেলগাড়ি খুঁজতে যাওয়া সবকিছুর সঙ্গী সে। পাঠশালায় সবচেয়ে ছেলেমানুষ কিন্তু পড়াশোনায় বেশ। মিষ্টিওয়ালার পিছু নেয়া, দিদির চড়ুইভাতির সঙ্গী হওয়া সবকিছুতেই অপু কেমন মুখচোরা। তবে দূর্গার জন্য মায়াটা তার প্রচণ্ড। এই নিস্তরঙ্গ জীবনেও একদিন ঢেউ ওঠে। দূ্র্গার অসুখ ভালো হবার নাম নেই। সংসারে আয় রোজগার নেই। ভাগ্যের অন্বষণে শুরু হয় আরেক যাত্রা। সেখানে ফড়িং জীবন পিছনে ফেলে হাঁটতে হয় বাস্তবতার কঠিন পথে। আম আটির ভেপুঁ, ভাটফুল, আর বৈচির ঝোপ আর হাতছানি দিয়ে ডাকে না। হরিহরের চাঁদের হাট সংসারে ধেয়ে আসে কালো মেঘ। জীবনের সহজ সরল আনন্দময় মুহূর্তগুলোর পাশাপাশি উঠে এসেছে চরম সত্য কিছু বাস্তবতা। যা না চাইলেও মেনে নিতে মানুষ বাধ্য হয়। সামাজিক অবস্থান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় নিজের অক্ষমতাকে। আবার আপনপরের হিসেব নিকেশ একপাশে রেখে বড় হয়ে উঠে মনুষ্যত্বের পরিচয়।

এই বই পড়ে এমন কেউ নেই যে প্রকৃতির প্রেমে পড়বে না। সাধারণ একটা দৃশ্যেরও অসাধারণ বর্ণনা করেছেন লেখক। বইটা সবসময় আমার কাছে ‘কষ্টে মোড়ানো ভালোবাসা’ হয়ে থাকবে। একই সাথে ভালোলাগা আর হৃদয়ে রক্তক্ষরণের অনুভূতি দেয় ‘পথের পাঁচালী’।

Related posts

বইমেলায় অভিনেত্রীকে জরিমানা, ভিডিও সরানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট

News Desk

একুশে বইমেলা ১৫-২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে

News Desk

রাবি ছাত্রের মৃত্যুতে চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ, আন্দোলনে সহপাঠীরা

News Desk

Leave a Comment