১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা
বাংলাদেশ

১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা

উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ১৫ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো বন্যার কবলে পড়েছেন জেলার মানুষজন। প্রথম দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই নতুন করে বন্যার কবলে পড়ে দিশেহারা অবস্থা তাদের।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রবিবার রাত থেকে সোমবার বিকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সুরমা, চলতি যাদুকাটা, রক্তি বৌলাই, পাটলাই পিয়াইন, কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে সদর, তাহিরপুর, বিশম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বেড়ে তাহিরপুর ও বিশম্ভরপুর সড়কে উঠেছে। এতে শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর অংশ তলিয়ে যাওয়ায় তাহিরপুরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়া সুরমা নদীর পানি উপচে এই সড়কের লালপুর এলাকা ডুবে গেছে। যাদুকাটা নদীর পানি বেড়ে লাউড়েরগড় সড়ক ও রক্তি নদীর পানি বেড়ে তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। রক্তি নদীর পানি বেড়ে সাচনা-সুনামগঞ্জ সড়ক নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা বড়ছড়া চারাগাঁও, বাগলী রজনীলাইন, লাকমাছড়া, লালঘাটছড়া দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।

সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ির ঘাট, তেঘরিয়া, নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, মল্লিকপুর, বড়পাড়া, পশ্চিম নতুনপাড়া, পূর্ব নুতানপাড়া, শান্তিবাগ, পাঠানবাড়ি, হাছনবসত, কালীপুর, হাছনবাহার এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।

১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা

সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের সুলতানপুর, চানপুর, কেজাউড়া, গুজাউড়া, দরিয়াবাজ, আব্দুল্লাহপুর, ইছাঘড়ি, লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর, গোয়াচুড়া, বাহাদূরপুর, নীলপুর গোবিনপুর, নোয়াগাঁওসহ ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৭০ মিলিমিটার ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া মহাশিং আক্তাপাড়া, নলজুর জগন্নাথপুর, পাটলাই, সোলেমানপুর, ঝালোখালী, মুসলিমপুর, সুরমা, ছাতক ও যাদুকাটা শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে পানি বেড়েছে। যাদুকাটা শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

১৫ দিনের ব্যবধানে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে পানি আরও বাড়বে। আগামী দুদিন পানি বাড়তে পারে। মেঘালয়ে এখনও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের সেই পানি সিলেটের পানির সঙ্গে মিশে সুরমা নদী দিয়ে মেঘনায় পতিত হয়। সেসব পানি সুনামগঞ্জের নদীতে পড়ে বন্যা দেখা দেয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার, নগদ টাকা ও জিআর চাল মজুত রয়েছে। বন্যাকবলিত লোকজনকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় নৌযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতির দিকে বিশেষ নজর রাখছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

Source link

Related posts

‘নারায়ণগঞ্জ হবে স্মার্ট সিটি, চলবে তিনটি মেট্রোরেল’

News Desk

ছয় দিন বিরতির পর সংসদ অধিবেশন শুরু

News Desk

দা-বঁটিতে চলছে শাণ, ঈদ পেরোলেই সুনসান

News Desk

Leave a Comment