শিক্ষক বাবার ৫ সন্তানই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ

শিক্ষক বাবার ৫ সন্তানই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

লক্ষ্মীপুরের প্রত্যন্ত চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক ছায়েদ উল্লাহ এবং তার স্ত্রী শামীমার পাঁচ সন্তানের সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। সর্বশেষ এই দম্পতির ছোট সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌস ২০২১-২২ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। একে একে তাদের পাঁচ ছেলেমেয়ের দেশসেরা বিদ্যাপীঠে ভর্তি হওয়া নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা। মেধাবী এই সন্তানদের নিয়ে গ্রামবাসীও খুশি।

শিক্ষক ছায়েদ উল্লাহ নোয়াখালীর সুবর্ণচরের দক্ষিণ ওয়াপদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা করে বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। সন্তানদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, শুরুটা হয় ২০০৭ সালে। তার বড় ছেলে শামসুল আলম দিপু ২০০৭-০৮ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ভালো ফল করে উত্তীর্ণ হয়ে ৩৫তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন দিপু। পরে ওই চাকরি ছেড়ে যোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকে। বর্তমানে তিনি সরকারের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

দ্বিতীয় ছেলে শাজাহান সিরাজ আল মামুন ২০১০-১১ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করের তিনি। বর্তমানে মামুন কর্মসংস্থান ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

তৃতীয় ছেলে আশরাফুল ইসলাম শহীদ ২০১১-১২ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হয়ে ২০১৭ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

চতুর্থ ছেলে শরীফুল ইসলাম বিজয় ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত রয়েছেন।

আর চলতি বছর শিক্ষক ছায়েদ উল্লাহর একমাত্র মেয়ে ২০২১-২২ শিক্ষা বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছেন।

ছায়েদ উল্লাহ বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ে জজ হতে চায়। আমি দীর্ঘ ৩০ বছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি। আমি অন্যের ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, পাশাপাশি আমার ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষিত করার জন্য সর্বদাই সচেষ্ট ছিলাম। আমার সব সন্তান এখন দেশের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।’

নিজ উপজেলার এমন মেধাবী পরিবারের বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মো. ইব্রাহীম বলেন, ‘শিক্ষক ছায়েদ উল্লাহ স্যারের সব ছেলেমেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় এলাকাবাসী আনন্দিত।’

স্থানীয় উদয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, ‘আমার ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসসহ ছায়েদ স্যারের সব ছেলেমেয়ে অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র।’

Source link

Related posts

জাতীয় পুরস্কার পেলেন গরিবের ডাক্তার লুৎফর রহমান

News Desk

ময়মনসিংহে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭৬৮৭ জন 

News Desk

কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত পানিবন্দি হাজারো মানুষ

News Desk

Leave a Comment