বিএনপি কর্মী পরিচয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাকরখানির দোকান
বাংলাদেশ

বিএনপি কর্মী পরিচয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাকরখানির দোকান

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করে বাকরখানির দোকান বসানো হয়েছে। বিএনপির কর্মী পরিচয়ে দোকানটি বসানো হয়। রবিবার (২০ এপ্রিল) রাতে শহরের দুই নম্বর রেলগেট এলাকার দলীয় এ কার্যালয়ে বাকরখানি তৈরি ও বিক্রি করতে দেখা যায়। 

সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সমনের অংশে দোকান বসিয়ে বাকরখানি বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের পেছনের অংশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙাচোরা প্রতিকৃতি দেখা গেছে। সেখানে অনেকগুলো পোস্টার লাগানো হয়েছে। ভবনের ভেতরে প্রবেশের পথ টিন দিয়ে আটকে দেওয়া রয়েছে। জুম্মান ও সুমন মিয়া নামে দুজন বিএনপি কর্মী পরিচয়ে গত তিন দিন আগে কার্যালয়ের সামনের অংশে বাকরখানির দোকান বসিয়েছেন বলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে বাকরখানি দোকানের কারিগর মনা মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি দোকানের কারিগর, টাকার বিনিময়ে দোকানে কাজ করি। গত তিন দিন আগে সুমন ও জুম্মান ভাই দোকানটি বসিয়েছেন। তারা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। দোকানে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার বাকরখানি বিক্রি হয়। 

জানতে চাইলে দোকান মালিক মো. সুমন মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্টের পরে কার্যালয়টি আবর্জনার ডাস্টবিন হিসেবে পড়ে ছিল। মাদকসেবীরা রাত্রিযাপন করতো। সেই স্থানটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) জেলার এক নেতা এখানে দোকান বসিয়ে দিয়েছেন। তবে নেতার নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন। 

স্থানীয় ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর এটি আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে কার্যালয়টি ফের ভাঙচুর করা হয়। ওই সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। সেই থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। উচ্ছৃঙ্খল লোকদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়। এ ছাড়া এর চারদিকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হতো। সম্প্রতি বিএনপির কিছু লোকজনের চোখ পড়ে কার্যালয়ে। পরে জাসাসের জেলার এক নেতার মদতে দোকান বাসিয়ে বাকরখানি বিক্রি শুরু হয়। জুম্মান ও সুমন নিজেদের বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। এ ছাড়া দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও মিছিলে তাদের দেখা যায়। তবে তারা দলীয় কোনও পদে নেই বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা।

পাশের ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকানের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দেখভাল করতেন মো. সবুজ মিয়া। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে দলের নেতাকর্মীরা সবাই আত্মগোপনে চলে যান। ভাঙচুর করা কার্যালয়টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। এ অবস্থায় বিএনপির লোকজন এসে বাকরখানির দোকান বসিয়েছেন। এখন এ নিয়ে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। আমি প্রতিবাদ করলে উল্টো নানা ঝামেলায় পড়তে হবে। আর আমি কোনও দলের লোক নই। 

তবে বিএনপির কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয় উল্লেখ করে  নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কার্যালয়টি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। তাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে অনেকে সেখানে ময়লা ফেলেছেন। এখন শুনছি কে বা কারা সেখানে দোকান বসিয়েছে। তবে আমাদের দলের কেউ দোকান বসায়নি। জুম্মান ও সুমন দলের কোনও পদে নেই।

Source link

Related posts

বৃষ্টির আশায় ‘নগর বিয়ে’

News Desk

ইজিবাইকে বাসচাপা, একই পরিবারের পাঁচ জনসহ নিহত ৭

News Desk

পূজামণ্ডপে অঘটন ঘটানো সেই ইকবাল কোথায়?

News Desk

Leave a Comment