বাণিজ্য মেলায় সহজে যাবেন যেভাবে, ভাড়া ৩৫ টাকা
বাংলাদেশ

বাণিজ্য মেলায় সহজে যাবেন যেভাবে, ভাড়া ৩৫ টাকা

এবার শুরু থেকেই জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। প্রতিদিন কয়েক হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থী মেলায় আসছেন। ১ জানুয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের ৪ নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বসেছে বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর।

রাজধানীর বাইরে হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়ার ভয়ে অনেকে মেলায় আসতে চাচ্ছেন না। সেটি বিবেচনায় রেখে অন্যান্য বছরের মতো এবারও যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছে মেলা কর্তৃপক্ষ। বাণিজ্য মেলায় আসতে বিশেষ করে চারটি স্থান থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিসি) দুই শতাধিক বাস চলাচল করছে। উবারের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ ছাড়ে মেলায় যাত্রী পরিবহন করা হয়। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি ও বিভিন্ন পরিবহনে মেলায় আসতে পারবেন। তবে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আসা যায় সহজে।

যেসব স্থান থেকে মেলায় আসছে বাস, ভাড়া কত

মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেলায় আসা-যাওয়ার জন্য বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির ২০০টির বেশি ডেডিকেটেড শাটল বাস চলছে। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বাসের সর্বশেষ ট্রিপ ছেড়ে যাচ্ছে রাত ১১টায়।

বিআরটিসি সূত্রে জানা যায়, কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশে বিআরটিসি বাস ছেড়ে আসছে। মেলা শেষে নির্দিষ্ট রুটগুলোতে যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছে বিআরটিসি। এর মধ্যে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা, ফার্মগেট থেকে মেলা পর্যন্ত ভাড়া ধরা হয়েছে ৭০ টাকা। নারায়ণগঞ্জ থেকে মেলা পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০ টাকা, নরসিংদী থেকে মেলা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৯০ টাকা। এ ছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়া ৮০ টাকা এবং গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ভাড়া ৪৫ টাকা জনপ্রতি। এ ছাড়া উবারের মাধ্যমে বিশেষ ছাড়ে মেলায় যাত্রী পরিবহন করা হয়।

মেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, মেলায় যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ, গুলিস্তান ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির বাসগুলো চলাচল করছে। মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বাসের সর্বশেষ ট্রিপ ছেড়ে যাচ্ছে রাত ১১টায়। ফলে যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। 

যেভাবে আসবেন মেলায়

কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটারের একটু বেশি। রাস্তা ফাঁকা থাকলে বিশ্বরোড থেকে মেলায় পৌঁছাতে সময় লাগবে ৪৫ মিনিট। আর যানজট থাকলে এক ঘণ্টা লাগবে। তাই এখান থেকে আসা সবচেয়ে সহজ। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এলে পার্কিংয়ের ঝামেলায় পড়তে হবে না। মেলায় পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসংবলিত দ্বিতল কার পার্কিং ভবন রয়েছে। এ ছাড়া মেলা কেন্দ্রের বাইরে আছে ছয় একর জমিতে পার্কিংয়ের আলাদা ব্যবস্থা।

বিআরটিসি বাস ছাড়াও অন্যান্য যাত্রীবাহী বাসে বাণিজ্যমেলায় আসতে জনপ্রতি গুনতে হবে ৪০ টাকা। নামতে হবে কাঞ্চন ব্রিজে। সেখান থেকে ১০-২০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে মেলায় আসা যাবে।

এ ছাড়া বিমানবন্দর, মিরপুর, টঙ্গী, বনানী, গুলশান, বারিধারা, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, নদ্দা, রামপুরা, বনশ্রী, জয়দেবপুর, গাজীপুর এলাকার বাসিন্দারা কুড়িল ফ্লাইওভার ব্যবহার করে তিনশ ফিট দিয়ে মেলায় আসতে পারবেন। মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর থেকেও গণপরিবহনযোগে মেলায় আসতে পারবেন। যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মান্ডা, সবুজবাগ, খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড ও নারায়ণগঞ্জ থেকে যারা মেলায় আসবেন, তারা গুলিস্তান থেকে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড হয়ে গাউছিয়া কিংবা কাঞ্চন ব্রিজ পার হয়ে মেলায় আসতে পারেন। তবে কাঞ্চন ব্রিজসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় সময় যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয় মেলায় আসা দর্শনার্থীদের। 

কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিআরটিসি বাসে করে মেলায় এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল আমিন শেখ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিআরটিসি বাস সার্ভিস খুবই ভালো। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাড়া কমানো উচিত। এ ছাড়া সড়কে যানজট ছিল। বিশেষ করে বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে যানজটের তীব্রতা একটু বেশি মনে হয়েছে। তবে মেলা এখনও পুরোপুরি জমেনি। আরও কিছুদিন পর পুরোপুরি জমে উঠবে।’

নারায়ণগঞ্জ থেকে গণপরিবহনে করে মেলায় এসেছেন চাকরিজীবী আমান খান। তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে বাসে করে মেলায় এসেছি। তবে পূর্বাচলের সড়কে অনেক যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ফলে অনেক সময় যানজট দেখলে এক গাড়ি ছেড়ে অন্য গাড়িতে করে আসা ভালো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ডিজিএম আবু বকর সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, সংসদ ভবন, গুলিস্তান, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির দুই শতাধিক বাস চলাচল করছে।’ 

বিআরটিসির পরিচালক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘যাত্রী বাড়লে বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। যাত্রী সুবিধার কথা চিন্তা করেও অনেক সময় যাত্রী কম থাকলেও বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।’

মেলায় যাচ্ছে বিআরটিসির দুই শতাধিক বাস

বাণিজ্য মেলার পরিচালক বিবেক সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেলায় যাতায়াতে কোনও ভোগান্তি নেই। বিআরটিসির দুই শতাধিক বাস প্রতিদিন চলাচল করছে। এ ছাড়া উবারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তারা ৫০ শতাংশ ছাড়ে যাত্রীদের নিয়ে আসবেন বাণিজ্য মেলায়।’ 

টিকিটের দাম কত

মাসব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকছে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

৩৬২ প্যাভিলিয়ন ও স্টল

মেলায় ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। বাকি ১১টি স্টল ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়ার। দেশীয় বস্ত্র, যন্ত্রপাতি, কার্পেট, প্রসাধনসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্য, আসবাব, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি সামগ্রী, চামড়া, আর্টিফিশিয়াল চামড়া, জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, খেলার সামগ্রী, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামিন, পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, ফাস্ট ফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, গৃহসজ্জার উপকরণ ইত্যাদি মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রি হচ্ছে।

Source link

Related posts

‘সৌর প্যানেল থেকে এক লাখ ৯১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব’

News Desk

সাতকানিয়া গ্রামে হাতির আক্রমণে রোহিঙ্গা যুবক নিহত

News Desk

রাতে বিয়ে সকালে আত্মহত্যার চেষ্টা গৃহবধূর

News Desk

Leave a Comment