বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ
বাংলাদেশ

বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ

টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে জেলা শহরের সড়ক থেকে গলি, বাড়ি থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। হাঁটুপানি জমেছে শহরের অধিকাংশ এলাকায়। এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে সবজিক্ষেত ও আমন বীজতলা।

বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশের এলাকা, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ অনেক জায়গায় হাঁটুপানি জমে আছে।

এ ছাড়া, অনেক দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। রাস্তা-ঘাটে পানি জমে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।

শুধু বাগেরহাট জেলা সদর নয়, নয়টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে জানা গেছে। বিশেষ করে, উপকূলের উপজেলা মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল ও মোংলার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে ছোট ছোট মাছের ঘের ও পুকুর।

বাগেরহাট শহরের চাল ব্যবসায়ী ঋষিকেশ পাল জানন, বৃষ্টিতে তার দোকানে দুদিন ধরে পানি উঠেছে। এতে দোকানে রাখা অনেক চাল নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি চাল রক্ষার জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

শহরের খারদ্বর এলাকার গৃহবধূ জুলিয়া বেগম জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। এতে শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। জরুরি প্রয়োজনে দোকান ও বাজারে যাতায়াতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। রিকশাচালক কবির হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একশ টাকাও আয় হয়নি। পানিতে রিকশা চালানো যাচ্ছে না। যাত্রীও কম।’

শহরের বাসিন্দা স্বপ্না আক্তার বলেন, ‘বাড়ির ভেতরে পানি উঠে গেছে। চুলায় আগুন ধরানো যাচ্ছে না। ছোট ছেলেটা পানিতে ভিজে সর্দি-জ্বরে ভুগছে।’

স্থানীয় সাংবাদিক মামুন আহমেদ ও আহমেদ তারিক জানান, বাগেরহাট পৌরসভার পাশে তাদের অফিসে হাঁটু পানি জমেছে।  এ ছাড়া রাস্তাঘাট জলমগ্ন রয়েছে। বাসা থেকে বের হওয়াই যাচ্ছে না।

বাগেরহাট পৌরসভার একাধিক বাসিন্দা জানান, সরকারি খাল প্রভাবশালীরা দখল করে নেওয়ায় এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি নামতে পারছে না। তারা অবিলম্বে সরকারি খাল দখলমুক্ত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে বাগেরহাট পৌরসভার প্রশাসক ডা. ফখরুল হাসান বলেন, ‘পৌর শহরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে, দৃশ্যমান হলে জনভোগান্তি কমবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।’

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আলহাজ মোতাহার হোসেন জানান, টানা বর্ষণে বাগেরহাটের ১ হাজার ৮ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে ২২২ সেক্টর আমন বীজতলা, ১৭০ হেক্টর সবজি, চার হেক্টর পান ও সাত হেক্টর মরিচক্ষেত রয়েছে।

এই মুহূর্তে বৃষ্টির পানি নেমে গেলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে না বলেও জানান তিনি।

Source link

Related posts

আজ থেকে কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু

News Desk

ছেলের কারণে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা

News Desk

চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ছে

News Desk

Leave a Comment