বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমারের দুই বিজিপিসহ ৩১ রোহিঙ্গা
বাংলাদেশ

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমারের দুই বিজিপিসহ ৩১ রোহিঙ্গা

এবার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের দুই বিজিপিসহ ৩১ রোহিঙ্গাকে বহনকারী একটি নৌকা অনুপ্রবেশ করেছে। মূলত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে তারা এপারে ঢুকে পড়েছে। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) ভোরে ৩৩ জন যাত্রীবোঝাই একটি ট্রলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর গোলারচরে ভিড়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) দুই সশস্ত্র সদস্য ও ৩১ জন রোহিঙ্গা। এর মধ্যে ১০ জন নারী, ১০ পুরুষ ও ১১ শিশু রয়েছে। আর দুই জন মিয়ানমার বিজিপির কর্মকর্তা।

দ্বীপে মিয়ানমারের যাত্রীবাহী একটি নৌকা ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের বিজিপি সেন্টমার্টিনে আশ্রয় নিয়েছে। শুনেছি, ভারী বৃষ্টিতে নৌকার ইঞ্জিন খারাপ হয়ে এদিকে ঢুকে পড়েছে। তাদের বিষয়ে সেদেশে আমাদের বিজিবি ও কোস্ট গার্ড কাজ করছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মো. আমিন বলেন, ভোরে বৃষ্টির মধ্য সৈকতে যাত্রীবাহী নৌকা তীরে ভিড়ে। সেখানে শিশুসহ রোহিঙ্গা নারী রয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্রসহ দুই সেদেশের বিজিপি সদস্য আছে।

স্থানীয়দের মতে, কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার বাসিন্দারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।  এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি মংডু শহর থেকে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে করে সিটওয়ে শহরে যাত্রা করতে রওনা করে। মাঝপথে নৌকাটি জালের সঙ্গে আটকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। পরে বৃষ্টি ও ঝড়ের কবলে পড়ে সেন্টমার্টিনের উত্তর পশ্চিম সৈকতে চলে আসে আশ্রয় নেয়। পরে স্থানীয়রা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। এরপর তাদের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের বহনকারী একটি নৌকা ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে এখানে ঢুকে পড়েছে। নৌকায় রোহিঙ্গার পাশাপাশি সেদেশের দুই বিজিপি সদস্য রয়েছে। তারা এখন বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের হেফাজতে রয়েছে।

তবে সেন্টমার্টিনে অনুপ্রবেশের বিষয়ে টেকনাফের বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। যার ফলে সীমান্ত মানুষের মাঝে আতঙ্ক কমেনি।

এখনও সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরে চলমান মিয়ানমারের যুদ্ধ এখনও চলছে। ফলে এপারে বিকট শব্দ ভেসে আসছে। এর কারণে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মাঝে ভয় ভয়ভীতি কমেনি।

এদিকে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল বৃদ্ধি করেছে। সেটি চলমান। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবসময় প্রস্তুত সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

তবে সীমান্ত অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ।

Source link

Related posts

টিকটকের জন্য ভিডিও ধারণ শেষে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

News Desk

ঈদের আগে ফেরানো যাচ্ছে না এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকদের?

News Desk

গাইবান্ধায় ‘জাতীয় বাজেট: আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠী’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

News Desk

Leave a Comment