বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে, চালু হতে পারে ডিসেম্বরে
বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে, চালু হতে পারে ডিসেম্বরে

টাঙ্গাইলে উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বারে যমুনা নদীর ওপর দেশের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর কাজ ৯৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। আর বাকি রয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ কাজ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটি শেষ করে উদ্বোধনের পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ।

জাপান এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে চার দশমিক আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নির্মাণাধীন এই সেতুতে সব কটি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুটির টাঙ্গাইলের অংশের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও কাজ শেষের দিকে। ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ এ রেলসেতুর সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে যমুনার দুই প্রান্তে দুটি ভাগে কাজ হচ্ছে। টাঙ্গাইল প্রান্তে ২৭ পিলার এবং সিরাজগঞ্জ প্রান্তে ২৩ পিলারসহ ৫০ পিলারের নির্মাণকাজ দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী আর কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে চলছে। এ ছাড়াও সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুটি চালু হলে ডাবল লাইনে। এ সেতু দিয়ে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরে এর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয়ও বৃদ্ধি করা হয়। পরে ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ।

এদিকে, যমুনা নদীর ওপর দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পর এবার রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা হচ্ছে। রেলসেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে একদিকে যেমন গোটা দেশ রেল যোগাযোগের একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হবে। অপরদিকে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ খাতে সড়কপথের পাশাপাশি রেল যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন ঘটবে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই রেলসেতু চালু হলে বাড়বে যাত্রীসংখ্যাও। পণ্য পরিবহনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে রেলসেতুর কাজ প্রায় ৯৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে সেতুর পশ্চিমপাড়ের স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের কিছু কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সেতুর ওপরে পশ্চিমপাড়ের অংশে কিছু লেভেলিং অ্যালাইমিং ও ট্র্যাক বসানোর কাজ রয়েছে। কাজগুলো শেষ হলে টেস্টিং করার পর কমিশনিংসহ ট্রেন চালু করার কিছু নিয়ম শেষ করে ডিসেম্বরের দিকে উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু (যমুনা সেতু) চালুর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ চালু হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে ট্রেন চলাচলে সময়ক্ষেপণসহ শিডিউল বিপর্যয়ে যাত্রীরা প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়েন। এরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা সামনে আসে। পরে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Source link

Related posts

আবারও ট্রাকের চাকার স্লাবে শুল্ক আদায়, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

News Desk

বাবাকে বের হতে বারণ করে নামাজে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলো ছেলে

News Desk

ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা

News Desk

Leave a Comment