ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টি, ডুবে গেছে শহর
বাংলাদেশ

ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টি, ডুবে গেছে শহর

এক রাতের টানা বৃষ্টিতেই পানির নিচে তলিয়ে গেল ফেনী শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। শহীদ কায়সার সড়ক, নাজির রোড, পাঠান বাড়ি রোড, পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার, মিজান রোড, জেল রোডসহ অনেক সড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে গেছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা দুই দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই বৃষ্টির পানিতে বাসাবাড়ি, দোকানপাট, রাস্তাঘাট—সবখানেই জলাবদ্ধতা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাড়িপুর, রামপুরাসহ নিচু এলাকা ও প্রধান সড়কগুলোতে পানি জমে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বর্ষায় একই দৃশ্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থা বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে আছে, কোনও স্থায়ী সমাধান নেই।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিকল্পিত নগর উন্নয়ন, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব—এই তিনটি কারণেই ফেনীর জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

ফেনী পৌরসভার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নতুন কিছু ড্রেন নির্মাণ করা হলেও পুরাতন ড্রেনগুলোর কোনও সংস্কার হয়নি বহু বছর ধরে। নালা-নর্দমা পরিষ্কারের নিয়মিত কার্যক্রমও অনুপস্থিত।

জলাবদ্ধতার কারণে আজ শহরের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বাজারের দোকানপাটে পানি ঢুকে পণ্য নষ্ট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টি, ডুবে গেছে শহর

দোকানি সাইফুল বলেন, দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে পুরো দোকান পানিতে তলিয়ে গেলো। কেউ দেখার নেই, সাহায্য তো দূরের কথা।

ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এক নাগরিক লেখেন, ফেনী শহর বৃষ্টি হলেই ডুবে যায়। এটা কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার ফল।

জনসাধারণ বলছেন, এ সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান নয়, প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও বাস্তবভিত্তিক নগর উন্নয়ন।

ফেনী পৌর প্রশাসক আব্দুল বাতেন বলেন, জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ড্রেন পরিষ্কারের পাশাপাশি পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য একটি আধুনিক ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নাধীন রয়েছে। সেটি বাস্তবায়ন করা গেলে এ ধরনের জলাবদ্ধতা ভবিষ্যতে আর থাকবে না।

Source link

Related posts

সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই, হারিয়ে যাচ্ছে ২০০ বছরের পুরনো নীলকুঠি

News Desk

তালায় ভুয়া এনএসআই কর্মকর্তা মুজাহিদ আটক

News Desk

জিলাপিতে তরমুজ-আমের মিশ্রণ, মানবদেহের জন্য ক্ষতির আশঙ্কা

News Desk

Leave a Comment