চাঁদপুর মতলব উত্তরের পাঁচআনী গ্রামের খুদে মেসি খ্যাত শিশু সোহান ও তার পরিবারের সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) চাঁদপুরের মতলব উত্তরে শিশুর সোহানের বাড়িতে এসে এ ঘোষণা দেন বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা শিশু সোহানের বল কন্ট্রোলের ক্ষমতা দেখেছি। সোহান যে প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তা বিকশিত করে ভবিষ্যতে যেন বাংলাদেশ দলে খেলতে পারে তেমন করে তৈরি করা।
বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক এই গোলকিপার আরও বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজকে আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। সোহানের পড়াশোনা থেকে শুরু করে তার খেলাধুলা এবং পরিবারের সব দায়িত্ব তারেক রহমান নিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি, আজহারুল হক মুকুল, মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বশির আহমেদ খান, সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক জিতুসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, সোহানের বয়স মাত্র ৬, পড়ছে প্রথম শ্রেণিতে। নেই ভালো বল, নেই একজোড়া জুতাও, তবু চোখে বড় স্বপ্ন একদিন দেশের জার্সি গায়ে খেলবে, হবে মেসির মতো একজন তারকা ফুটবলার।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সোহানের ফুটবল খেলার ভিডিও। বল পায়ে তার ড্রিবল, পাস, কিংবা গোল করার স্টাইল যেন প্রমাণ করে প্রতিভা শুধু শহরের একাডেমি থেকেই জন্মায় না, গ্রামীণ ধুলোমাটিতেও জন্ম নেয় রত্ন।
সোহানের বাবা সোহেল প্রধান পেশায় সাইকেল মেকানিক। দিনমজুরির টাকায় কোনোরকমে চলে সংসার। জুতা তো দূরের কথা, কোচিংয়ের খরচ চালানোই অসম্ভব। তবু সন্তানের চোখে ফুটবল খেলার স্বপ্ন দেখে দিনশেষে কষ্ট ভুলে যান এই বাবা।
জুতা কিনে দিতে পারি না, তবু স্বপ্ন দেখি—আমার ছেলে দেশের হয়ে খেলবে, আবেগভরা কণ্ঠে বললেন বাবা সোহেল প্রধান। তিনি বলেন, আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণে আমি একা কিছু করতে পারবো না, সোহানের জন্য সবার এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমার আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।
সোহানের ভাষায়, আমি দেশের হয়ে খেলতে চাই। মেসির মতো ফুটবলার হতে চাই। ছেলেটার কথা বলার ভঙ্গি আর চোখের জ্বলে ওঠা আত্মবিশ্বাসে বোঝা যায়—স্বপ্নটা মিথ্যে নয়।
স্থানীয়রা বলছেন, সোহান কেবল সাড়ে পাঁচআনী গ্রামের নয়, সে পুরো দেশের সম্পদ। একটু সাপোর্ট পেলে যেতে পারে অনেক দূর।
স্থানীয় মোবারক হোসেন বলেন, সোহানের বাবার সামর্থ্য নেই ছেলেকে ভালো একটি ক্লাবে ভর্তি করাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত সোহানকে ভালোভাবে পড়াশোনা ও খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। তাহলেই তার প্রতিভাটা টিকে থাকবে এবং একদিন বড় খেলোয়াড় হবে।