ফরিদপুরে দ্রুত বাড়ছে পদ্মার পানি, নিম্নাঞ্চলের মানুষ পনিবন্দি
বাংলাদেশ

ফরিদপুরে দ্রুত বাড়ছে পদ্মার পানি, নিম্নাঞ্চলের মানুষ পনিবন্দি

ভারি বর্ষণ এবং উজান থেকে আসা পানিতে ফরিদপুরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চর অধ্যুষিত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পদ্মা ছাড়াও বাড়ছে জেলার মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ও কুমার নদের পানি। এতে ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বিপৎসীমার এক মিটার নিচ দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হলেও আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তা অতিক্রম করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার মাসুদ সরদার বলেন, ‘সাত-আট দিন ধরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে দুই দিন ধরে হু হু করে পানি বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে অনেক বাড়িতে পানি উঠবে।’

একই ইউনিয়নের কাইমুদ্দিন ডাঙ্গী এলাকার বৃদ্ধা হাজেরা খাতুন (৭০) বলেন, ‘দুদিন ধরে যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে ভয়ে আছি। কী যে হয়!’

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান মুস্তাক বলেন, ‘গত দুদিনে আমার ইউনিয়নে প্রায় এক ফুট পানি বেড়েছে। নিম্নাঞ্চলে বসবাস করা কমপক্ষে ৫০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাদামসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’

চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সাইফুল ইসলাম আজম বলেন, ‘হঠাৎ পানি বাড়ায় এই ইউনিয়নের অধিকাংশ বাদামক্ষেত তলিয়ে গেছে। এভাবে পানি বাড়লে কয়েকদিনের মধ্যে পাট ও তিলক্ষেত তলিয়ে যাবে।’ চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের কমপক্ষে সাড়ে ৪০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থপ্রতিম সাহা জানান, ফরিদপুরে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬ সেন্টিমিটার।

তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। তবে এ মুহূর্তে ৭.৫২ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দুই-তিন দিনে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।’

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণের মতো বন্যা এখনও হয়নি। তবে বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার নয়টি উপজেলার ইউএনও’কে সাত টন করে ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের ১৫০ টনের বেশি ত্রাণ মজুত রয়েছে। বন্যা হলে মোকাবিলায় তেমন কোনও সমস্যা হবে না।’

 

 

Source link

Related posts

এমপি আনোয়ারুল আজিম খুন: যা বলছেন স্থানীয় নেতারা

News Desk

রাজশাহী অঞ্চলে দ্বিগুণ বেড়েছে আম রফতানি

News Desk

ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা: সাক্ষী দিতে ২ তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব 

News Desk

Leave a Comment