পাহাড়ের জাতিগত সহিংসতা সরকার ও জতিসংঘ উদ্যোগের আহ্বান
বাংলাদেশ

পাহাড়ের জাতিগত সহিংসতা সরকার ও জতিসংঘ উদ্যোগের আহ্বান

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা নানা আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাসব্যাপী নির্জন আশ্রমে বাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে লোকারণ্যে ফিরে আসেন। একে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে সকাল থেকেই পঞ্চশীল গ্রহণ, প্রার্থনা, বুদ্ধ সংগীত, মোমমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্বালন করেছেন। এরপর অষ্টপরিষ্কার দান, অষ্টশীল গ্রহণ, বুদ্ধপূজা প্রভৃতি আচার শেষে দেব-মানবের তথা সব প্রাণীর হিতার্থে ধর্মদেশনা দেওয়া হয়।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মতে ভিক্ষুরা আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত, এই তিন মাস বর্ষাব্রত পালন করেন। আর এই বর্ষাব্রত পালন শেষে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথিতে তারা প্রবারণা করেন। স্বাভাবিক সসময়ে প্রবারণা পূর্ণিমার পর দিন থেকে পরবর্তী এক মাস বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত হয় কঠিন চীবরদান। তবে পর্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক ঘটনা প্রেক্ষাপটে এবার হচ্ছে কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান। তবে পুণ্যার্থীদের আশা, আগামী বছর সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে এবং সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিরাপদ করার আশার কথা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে বনভান্তের উদ্ধৃতি দিয়ে, একে-অপরের প্রতি হিংসায় লিপ্ত না হয়ে সৎ চিন্তা ও সৎ কুশলকর্ম সম্পাদনপূর্বক নিজেকে আত্মসংযম রেখে বুদ্ধের নিয়ম-নীতি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ ও আবাসিক প্রধান ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় আরও ধর্মদেশনা প্রদান করেন রাজবন বিহারের সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির।

পুণ্যার্থী জ্ঞান লতা চাকমা বলেন, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই তিন মাস বর্ষাব্রত পালন শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে লোকারণ্যে ফিরে আসেন। এই দিন অতিতের ভুল ভ্রান্তির জন্য একে অপরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। এমন পূর্ণময় অনুষ্ঠানে ভক্তকূলের প্রাথর্না সব সম্প্রদায়ের মৈত্রীময় সহবস্থানেরর পাশাপাশি দেশ ও জাতির শান্তি মঙ্গল কামনা।

রাঙামাটি রাজবন বিহারে উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সহ-সভাপতি নিরুপা দেওয়ান বলেন, একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা থাকবে। এক ধর্মের মানুষের অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে এই প্রত্যাশা নিয়ে আজ প্রর্থনা করবো। বাংলাদেশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বিশ্বে সুখ শান্তি বিরাজ করে।

চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এই তিন মাস বর্ষাব্রত শেষে আগামী এক মাসের মধ্যে কঠিন চীবরদান হওয়ার কথা। তবে আমি শুনেছি, চলমান পরিস্থিতির কারণে এ বছর ভিক্ষুরা এই চীবরদান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে ভিক্ষু সংঘের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাইনি। তবে এটাও শুনেছি, কঠিন চীবরদান করতে হলে কিছু শর্ত, অবস্থা ও প্রেক্ষিত আছে- তার পূরণ করতে হয়। সে কারণগুলো বিবেচনা করেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যে বিশষে পরিস্থিতিতে ভিক্ষুরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- যাতে ভবিষ্যতে এমন না হয়, সেজন্য সরকার ও জতিসংঘ এমন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করুক যাতে জাতিগত সহিংস ঘটনা বন্ধ হয়। আগামীতে যাতে কঠিন চীবরদানসহ সব ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিরাপত্তার সঙ্গে পালন করতে পরে সেই প্রত্যাশার কথা বলেন চাকমা সার্কেলের এই চিফ।

Source link

Related posts

ভুমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গড়তে কাজ করছে সরকার : দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী

News Desk

উন্নয়ন না, দুর্নীতির জোয়ারে ভাসছে দেশ

News Desk

কয়েল থেকে লাগা আগুনে পুড়লো ৩ লাখ টাকার মালামাল

News Desk

Leave a Comment