নুরাল পাগলার দরবার ধ্বংসস্তূপ, ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি আসলে কারা?
বাংলাদেশ

নুরাল পাগলার দরবার ধ্বংসস্তূপ, ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি আসলে কারা?

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দরবারের ভেতর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। যেন ধ্বংসস্তূপ। ঘটনার পর থেকে দেখতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোকের এ হামলায় একজন নিহত ও অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। পরে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘তৌহিদী জনতা’, ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ ইত্যাদি নামে মাজার, দরগায় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন অনেকে। পাশাপাশি এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধে সরকারকে পদক্ষেপ দাবি জানিয়েছেন তারা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তৌহিদী জনতা’, ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ আসলে কারা?। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরাল পাগলাকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে বেদি তৈরি করে দাফন করা হয়েছে দাবি করে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করেছিল উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। সেইসঙ্গে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিল। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি গোয়ালন্দ পৌর জামায়াতের আমির। এ কমিটির সদস্যসচিব উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আইয়ুব আলী খান। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন খন্দকার আবদুল মুহিত, গোয়ালন্দ পৌর বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম মণ্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন, সাইদুল সরদার, সাবেক অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত, প্রিন্সিপাল আমিনুল ইসলাম কাসেমীসহ বিএনপি এবং জামায়াতের নেতারা।

ওই দিন সংবাদ সম্মেলনে জালাল উদ্দিন প্রামাণিক বলেছিলেন, নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করায় তীব্র আন্দোলনের মুখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন নুরুল হক। দীর্ঘদিন পর আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তাকে পুনর্বাসন করেছে একটি কুচক্রী মহল। গত ২৩ আগস্ট তার মৃত্যুর পর ব্যাপারটা ঘনীভূত হয়। মৃত্যুর আগে নুরুল ১২ ফুট উঁচু বেদি তৈরি করেন। সেই বেদির ওপর তাকে কবর দেওয়া হয় এবং পবিত্র কাবার আদলে রং করা হয়। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিক্ষুব্ধ হন। উত্তেজনা প্রশমনে প্রশাসন তাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছে। আলোচনায় প্রথমে নুরুলের পরিবার এক সপ্তাহ সময় নিলেও এ ব্যাপারে অগ্রগতি নেই। তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। দুদিন আগে জেলা প্রশাসককে কমিটি স্মারকলিপি দিলেও কোনও উত্তর পাননি।

রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াস মোল্লা বলেছিলেন, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে নুরুল হকের কবর সমান না করা হয় এবং অন্যান্য দাবিদাওয়া পূরণ না হয়, তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে? প্রশাসন আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যেই এর সমাধান করবে বলে তাদের বিশ্বাস। অন্যথায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পরে ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।

একই সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব ও উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আইয়ুব আলী খান বলেছিলেন, নুরুল পাগলের কবর নিচু না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে। এটিকে ঠেকাতে যারা কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজ বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন নুরুল হক। আশির দশকের শেষ দিকে নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করলে জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ মুচলেকা দিয়ে এলাকা ছাড়েন। কয়েকদিন পর আবার দরবারে ফিরে কার্যক্রম শুরু করেন। গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়। ওই দিন রাতে দরবারে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা ও ভক্তদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে বিশেষ কায়দায় তাকে দাফন করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় লোকজন। তাদের আন্দোলনের মুখে ইতিমধ্যে কবরের রং পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে কবর নিচে নামানো হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে নুরুল হকের ছেলে মেহেদী নূর জিলানী বলেন, ‘আমার বাবা ইমাম মাহদির দ্বীন প্রচারক ছিলেন। তিনি কখনও নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করেননি। বাবার মৃত্যুর পর তার ওসিয়ত মোতাবেক কিছুটা উচুঁ করে ইসলামের বিধান মেনে দাফন করা হয়েছে। বাইরে খোলা জায়গায় ঝামেলা হওয়ার আশঙ্কা থাকায় দরবারে জানাজা পড়া হয়। এখানে ১২ ফুট উচুঁ করার অভিযোগ সত্য নয়। তিন থেকে চার ফুট উঁচু হতে পারে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হয়েছে।’

বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়

এদিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার জুমার নামাজের পর আনসার ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। বেলা ২টার পর থেকে আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শত শত মানুষ। বেলা আড়াইটার দিকে হাতুড়ি, শাবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে একদল লোক মিছিল নিয়ে আসে। এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি মঞ্চে জমা দিতে বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে বক্তব্য চলাকালে কিছু লোক পুলিশের ওপর হামলা করে দুটি গাড়ি এবং ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন।

বিকাল ৩টার দিকে মঞ্চ থেকে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক, সদস্যসচিব বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী খান সবাইকে সমাবেশে থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু উত্তেজিত লোকজন মিছিল নিয়ে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা করেন। ভেতর থেকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নুরাল পাগলার ভক্তরা। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। এ সময় কিছু লোক দরবারের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেন এবং মালামাল লুটপাট করেন। একপর্যায়ে বিকাল ৫টার দিকে নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে গোয়ালন্দ পদ্মার মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর নিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসা মাঠে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। সম্মেলনে নেতারা বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা শহরের আনসার ক্লাব মাঠে শুধুমাত্র বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে দোয়া মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শেষ করেন। কিন্তু সমাবেশে আসার পথে পুলিশ বাধা দিলে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বিক্ষুব্ধ জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে নুরাল পাগলের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালান। এই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জালাল উদ্দিন প্রামাণিক, বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী খান, আবুল কাশেম, সাবেক অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত প্রমুখ। 

তবে সেদিন সমাবেশে আসার পথে লোকজনকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি।’

পুলিশ জানায়, সেদিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ওসি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের করা মামলায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। দরবারে হামলা ও একজনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহতের পরিবার থানায় মামলা করলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, জুড়ান মোল্লা পাড়ায় দরবারের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দরবারের ভেতর একটি তিনতলা এবং একটি দুইতলা ভবন। উৎসুক জনতা দেখতে আসছেন। হামলার পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে নুরাল পাগলার দরবার। ভবন থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে তার আস্তানা। সেখানে একটি টিনশেড ঘরে বসে ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটাতেন তিনি। মৃত্যুর আগে টিনশেড ঘরসহ সমতল ভূমি থেকে কয়েক ফুট উঁচু করে বেদি তৈরি করা হয়। বেদির ওপর একপাশে টিনশেড ঘরে সময় কাটাতেন। অপরপাশে মৃত্যুর পর তাকে কবর দেওয়া হয়। দরবারের ভেতর-বাইর এখন ধ্বংসস্তূপ। ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও ধোঁয়া বের হচ্ছে। কেউ কেউ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ থেকে চাল-ডালসহ জিনিসপত্র কুড়িয়ে নিচ্ছেন। পুলিশ মাঝেমধ্যে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দিচ্ছে। 

রাজবাড়ীর মাটিপাড়া থেকে দেখতে এসেছেন আসমত শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘নুরাল পাগলার দরবারে হামলার খবরটি দেখে আর থাকতে পারলাম না। কী হয়েছে দেখতে দরবারে এসেছি। তবে তার কাজ বিতর্কিত ছিল, তাই বলে লাশ কবর থেকে তুলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।’

সংঘর্ষে নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আমজাদ মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবে নুরাল পাগলার ভক্ত। রাসেল শুক্রবার সকাল থেকে বাড়িতেই ছিল। জুমার নামাজের পর বিক্ষুব্ধ মানুষজনকে মিছিল নিয়ে আসতে দেখে দরবার শরিফের গেটে অবস্থান নেয়। ভেতর থেকে গেট আটকে রাখে। বিক্ষুব্ধ লোকজন ধাক্কাধাক্কি করলেও গেটের দরজা খোলেনি। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে রাসেলকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করেন। এরপর দরবার শরিফে হামলা-ভাঙচুরের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করেন। ওদিকে রাসেলের অবস্থা গুরুতর দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। আমি ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।’ 

কবর থেকে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শরিফ ইসলাম জানান, গতকাল দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে ২২ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। এর মধ্যে ১৯ জনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথিমধ্যে রাসেল মারা যান। পরে বাকি তিন জনও নিরাপত্তার স্বার্থে স্বেচ্ছায় ওই হাসপাতালে চলে যান। আমাদের এখানে আহত কেউ নেই। 

হামলার বিষয়ে যা বলছেন তারা

হামলার বিষয়ে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নুরালের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দের তৌহিদী জনতা আন্দোলন করে আসছিল। শুক্রবারও আমাদের শান্তপ্রিয় সমাবেশ চলছিল। হঠাৎ প্রশাসন জনতার ওপর আক্রমণ করে। অনেক স্থানে মিছিলে বাধা দেয়। আনসার ক্লাবে বাধা দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আমরা সেটা আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সমাবেশ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ করে দিই। তারপরে কী হয়েছে সে ব্যাপারে আমরা অবগত নই। আমরা দরবারের দিকে যাইনি। যে যার বাড়িতে চলে যাই।’ 

রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুক্রবার নুরাল পাগলের কবর পরিদর্শন করেছি। আমরা প্রত্যেকটি মসজিদে বলে দিয়েছি, সংক্ষিপ্ত মিছিল হবে। আলোচনা হবে। কিন্তু কোনও ভাঙচুর হবে না। তবে মরদেহ মাটি থেকে তুলে পোড়ানো আমার জীবনে কখনও শুনিনি। এ ঘটনাকে আমি ধিক্কার জানাই। কোনও মানুষের লাশ পোড়ানো বা বাড়িঘর লুট করা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিক।’

কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আসলাম মিয়া বলেন, নুরাল পাগলের কবর নিয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। দেশ এবং বিদেশে এটি নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা দেখেছি। আজ আমরা জেলা বিএনপি ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের সঙ্গে মিটিং করেছি। তারা আমাদের অনুরোধ করেছেন পরবর্তীতে আর যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। তবে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে আগুনে পোড়ানো অত্যন্ত ন্যক্কারজন হয়েছে।’

Source link

Related posts

আটক করা হয়েছে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চকে ধাক্কা দেওয়া সেই কার্গো জাহাজটি

News Desk

লকডাউন দেওয়ার পরিকল্পনা আরও ৩ জেলায়

News Desk

লালমনিরহাটে এসআইয়ের ২ বছরের কারাদণ্ড

News Desk

Leave a Comment