নিকট অতীতে এমন বন্যা দেখেনি খাগড়াছড়ি, পানির স্রোত-পাহাড়ধসে ভেঙেছে ঘরবাড়ি
বাংলাদেশ

নিকট অতীতে এমন বন্যা দেখেনি খাগড়াছড়ি, পানির স্রোত-পাহাড়ধসে ভেঙেছে ঘরবাড়ি

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৯ উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দীঘিনালা, মাটিরাঙা, খাগড়াছড়ি সদর, মহালছড়ি ও পানছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। পানির স্রোতে ও পাহাড়ধসে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। সেতু ও রাস্তা ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা।

আক্রান্ত লোকজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। বিভিন্ন রাস্তায় তাঁবু বানিয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে গবাদিপশুগুলোকে। খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীর তীরবর্তী গঞ্জপাড়া, বাঙ্গালকাঠি, বটতলী, চাকমাপাড়া, মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, রুইখই চৌধুরীপাড়া, খবং পুড়িয়াসহ কমপক্ষে ২০ গ্রামের হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের উদ্ধারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও কাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। 

একই অবস্থা দীঘিনালার ১৫-২০, পানছড়ির ১৮, মাটিরাঙার প্রায় ৩০ এবং মহালছড়ির ১৮-২০ উপজেলার নিম্নাঞ্চলীয় গ্রামগুলোর। এ ছাড়া মহালছড়ি উপজেলার সঙ্গে মুবাছড়ি ইউনিয়নের সিঙ্গিনালা গ্রামের কাপ্তাইপাড়া এলাকায় একমাত্র সংযোগ সড়কটি ভেঙে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালের পরে এটিই খাগড়াছড়ি জেলার জন্য সবচেয়ে বড় বন্যা। এর আগে কখনও এত পানি দেখেনি পাহাড়ি এলাকা খাগড়াছড়ি জেলা। পুকুর, নদী, খাল-বিল ভরে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। মাছচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বললেও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি খাগড়াছড়ি ইউনিটের সেক্রেটারি মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ জানান, সংস্থাটির স্বেচ্ছাসেবকরা সরকারি ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করছেন। রেড ক্রিসেন্ট সদর দফতরে জরুরি ত্রাণ বরাদ্দের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।  

খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. শাহ আলম জানান, গত তিন দিনে খাগড়াছড়ি পৌরসভায় প্রায় ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, বন্যা ও পাহাড়ধসে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের জন্য খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৮টিসহ পুরো জেলায় ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের লোকজন আশ্রয় ‍নিয়েছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৪১২ মেট্রিক টন খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় সকলের সহযোগিতা চান জেলা প্রশাসক।

Source link

Related posts

‘স্বপ্ন দেখে’ স্ত্রী-সন্তানকে খুন করেছেন হিফজুর, আদালতে স্বীকারোক্তি

News Desk

‘আর কতদিন পানিত থাকবো, কী খাবো?’

News Desk

আগে টিকা পাবেন বয়স্ক, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা

News Desk

Leave a Comment