নদীর গতিপথ বন্ধ করে বালুর ট্রাকের জন্য রাস্তা
বাংলাদেশ

নদীর গতিপথ বন্ধ করে বালুর ট্রাকের জন্য রাস্তা

প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের ট্রাক চলাচলের জন্য প্রবহমান ধলেশ্বরী নদীর মুখ ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ সারাবছর পানিপ্রবাহ চালু রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী খনন করা হয়েছে। কাজ শেষ হতে না হতেই বালুর ট্রাক চলাচলের জন্য ওই নদীর বুকে মাটিভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তা। এতে বর্ষা এলেই তীরবর্তী মানুষের ভাঙনের শিকার হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ও তিল্লি ইউনিয়ন সংলগ্ন রানাদিয়া এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত এ রাস্তাটির জন্য নদীটি এখন মৃত্যুর মুখে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত প্রায় ছয় মাস আগে রাস্তাটি বালুর ট্রাক চলাচলের জন্য নির্মাণ করেন বালু ব্যবসায়ীরা। রাতের বেলায় ওই রাস্তায় চলাচল করে ওই বালুর ট্রাকগুলো। তবে এখন স্থানীয়রাও ওই রাস্তাটি ব্যবহার করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, হ্যালোবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে ওই রাস্তার ওপর দিয়ে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্মিত রাস্তার দেড় কিলোমিটার উজান থেকে ধলেশ্বরী নদীর প্রবহমান মূল ধারা থেকে এই শাখা নদী এসেছে। শাখা নদীর মুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুম ছাড়া পানি ঢুকতো না। যে কারণে বছরে মাত্র দুই-তিন মাস পানি থাকতো। স্থানীয়রা আশা করেছিলেন, খননের ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমে পানি ঢোকার পর নদীতে সারাবছরই তা থাকবে। কিন্তু নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণের ফলে পানি ঢুকতে পারবে কিনা সেটি নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের নাম বলতে চাননি স্থানীয়রা। তারা বলেন, ‘এই বালু ব্যবসায়ীরা খুবই প্রভাবশালী। সরকারি দলের বড় বড় নেতাদের সঙ্গে তাদের চলাফেরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনও এর সঙ্গে জড়িত। তাদের ম্যানেজ করেই সদ্য খননকৃত নদীর ওপরে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।’

গড়পাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য আলাল হোসেন বলেন, ‘গতিপথ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করায় নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুই পাশে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’   

নদীটি মৃত্যুর মুখে পড়েছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খনন করা মাটি বিক্রি করা হয়েছে সরকারিভাবে। রানাদিয়া এলাকার খনন করা মাটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়্যালিটি দিয়ে কিনেছেন মুহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন। টেলিফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই মাটি পরিবহনের জন্য ওই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাস্তা নির্মাণের বিষয়টি জানেন না বলে জানান।  তিনি বলেন, ‘নদীর গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু করা যাবে না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Source link

Related posts

৬৮১ জনকে গণদুশমন আখ্যা দিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা

News Desk

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু

News Desk

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস শেষ করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত

News Desk

Leave a Comment