খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, সরকার কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের কথা চিন্তা করে ধান ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে। ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় কৃষকের ভিত শক্ত হচ্ছে। কৃষককে ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে গিয়ে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও, তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে নওগাঁর পোরশার সারাইগাছি খাদ্যগুদাম প্রাঙ্গণে দরিদ্র ও অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে হাউসহোল্ড সাইলো (পারিবারিক খাদ্যভান্ডার) ও সেচ লাইসেন্স বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদন করেই আমরা চাল খাই। তবে আমাদের আরও উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে চাষের বাইরে না থাকে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমিতে সেচ ও সারের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছেন।’
শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণের কথা ভাবেন বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এ জন্য কৃষকদের ভিত শক্ত হচ্ছে। চালের দাম ২০১৭-১৮ সালের মতো রাখলে কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পেতেন না। তখন কৃষকেরা হাহাকার করতেন। কৃষকদের কারণেই করোনাকালে দেশে খাদ্যসংকট হয়নি। কেউ না খেয়ে মারা যাননি। এই কৃষকদের বাঁচাতেও সরকারকে ভূমিকা রাখতে হয়।
একটি দলের নেতারা করোনার টিকা নিয়ে মিথ্যাচার করেছিলেন। তবে তাঁরা অনেকেই লুকিয়ে টিকা নিয়েছেন, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রাশ কর্মসূচির আওতায় গণটিকা দেওয়া হবে। নওগাঁ জেলায় সাড়ে তিন লাখ টিকা দেওয়া হবে। এ সময় তিনি সবাইকে নির্ধারিত টিকাদানকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।
খাদ্যমন্ত্রী হাউসহোল্ড সাইলোর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, খাদ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি কৃষকদের ধানের বীজ সংরক্ষণেও পারিবারিক সাইলো ভূমিকা রাখবে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় পারিবারিক সাইলো বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
অনুষ্ঠানে পোরশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হামিদ রেজার সভাপতিত্বে রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক জি এম ফারুক হোসেন পাটোয়ারি, পোরশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মনজুর মোরশেদ চৌধুরী বক্তব্য দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত দরিদ্র, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার জনগোষ্ঠীর নিরাপদ খাদ্য সংরক্ষণের জন্য হাউসহোল্ড সাইলো সরবরাহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের মধ্যে সাইলো বিতরণ করছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় দেশের আট বিভাগের ২৩ জেলার ৫৫টি উপজেলায় সর্বমোট তিন লাখ সাইলো বিতরণ করা হবে। নওগাঁয় মোট ২৮ হাজার সাইলো বিতরণ করা হবে। তার মধ্যে আজ পোরশা উপজেলায় ৬ হাজার সাইলো বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগকালে প্রতিটি পারিবারিক সাইলোতে ৪০ কেজি ধান বা ৫৬ কেজি চাল অথবা ৭০ লিটার পানি সংরক্ষণ করা যাবে।