দুই চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলা হাসপাতাল, রোগীদের ভোগান্তি
বাংলাদেশ

দুই চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলা হাসপাতাল, রোগীদের ভোগান্তি

চিকিৎসক সংকটে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। দুজন চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরাও। স্বাস্থ্য বিভাগকে বারবার বলার পরও কোনও সমাধান হচ্ছে না বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

রোগীরা বলছেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না। ৩০ শয্যার এই হাসপাতালে এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় জেলা সদরে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দিনাজপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার ভরসাস্থল এটি। প্রতিদিন চার শতাধিক রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে বন্ধ রয়েছে এর কার্যক্রম। বন্ধ আছে এক্স-রে সেবা। ১১ জন মেডিক্যাল অফিসারের স্থলে আছেন মাত্র একজন। ছয় জন কনসালট্যান্টের স্থলে আছেন একজন। এ ছাড়া চতুর্থ শ্রেণির অধিকাংশ পদই শূন্য। এতে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা আব্দুল গফুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতকাল বিকালে আমি রোগী ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু সকাল পর্যন্ত ডাক্তারের খবর নেই। খবর নিয়ে জেনেছি, ডাক্তার আছেন একজন। তাও তিনি সবাইকে চিকিৎসা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। এতে আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

চিকিৎসা নিতে আসা রেহেনা আকতার বলেন, ‘এখানে কোনও নারী ডাক্তার নেই। আমাদের সব সমস্যা পুরুষ ডাক্তারের কাছে বলা সম্ভব হয় না। ফলে চিকিৎসাও পাচ্ছি না। এ ছাড়া যদি এখানে সিজার করার ব্যবস্থা থাকতো তাহলে আমাদের মতো রোগীদের জেলা সদরে ছুটে যেতে হতো না।’

হাসপাতালে ভর্তি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু এখানে সমস্যা হলো শুধুমাত্র সকালবেলা ডাক্তার এসে দেখে যান। সারা দিনে আরও কোনও চিকিৎসক পাওয়া যায় না। কিন্তু এর মাঝে যদি আমার অসুস্থতা বেড়ে যায় তাহলে কাউকে পাই না। খুব ভোগান্তির মধ্যে পড়ে আছি।’

হাসপাতালের মেডিক্যাল কর্মকর্তা বলেন, ‌জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও আমিসহ মাত্র দুজন চিকিৎসক হাসপাতালে আছি। চিকিৎসক সংকটের কারণে আমাদের পক্ষে ২৪ ঘণ্টা কিংবা সপ্তাহজুড়ে সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। দিনে চার শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমরাও চাপে আছি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোলাইমান হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন মেডিক্যাল অফিসার ও ছয় জন কনসালট্যান্ট থাকার কথা। কিন্তু সেখানে বর্তমানে একজন মেডিক্যাল অফিসার ও একজন কনসালট্যান্ট দিয়ে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ আছে। আরও বেশ কিছু সংখ্যক স্টাফের পদশূন্য। যার কারণে হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে অন্যান্য সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। যদি আমরা চিকিৎসক ও কনসালট্যান্ট পাই তাহলে হাসপাতালের সব কার্যক্রম সেটি চালু করা সম্ভব হবে।’

Source link

Related posts

সড়কের পাশে নষ্ট হচ্ছে চামড়া  

News Desk

‘১২ বছর হলে নিবন্ধন ছাড়াই টিকা’

News Desk

‌‘এখনও ঘুমালে মনে হয় জলদস্যুরা এই বুঝি গুলি করলো’

News Desk

Leave a Comment