তিস্তার পানিতে ভাসছে ১৫ হাজার পরিবার
বাংলাদেশ

তিস্তার পানিতে ভাসছে ১৫ হাজার পরিবার

ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তার পানি ওঠানামা করছে। নদীর ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও তা কমেছে সকাল ৯টায়। তখন তিস্তায় পানি ছিল ৫২ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার থেকে ৩ সেন্টিমিটার কম। নদীর এ পয়েন্টে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার, সন্ধ্যা ৭টায় ১২ সেন্টিমিটার ও রাত ৮টায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এতে পাউবো রেড অ্যালার্ট জারি করতে বাধ্য হয়। তবে সোমবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও তা কমেছে সকাল ৯টায়। পাউবোর গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে এই এলাকায় গত দুই দিনে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৮ মিলিমিটার (সকাল ৯টা পর্যন্ত)। উজানের ঢল ও বৃষ্টিতে তিস্তা আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। এতে নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার পরিবার বন্যার পানিতে ভাসছে।

উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান (ভারপ্রাপ্ত) জানান, গতকাল তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড রেড অ্যালার্ট জারি করতে বাধ্য হয়। পানিতে ঘর ভেসে যাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী মানুষ দিশেহারা হয়ে উঁচু জায়গায় যেতে বাধ্য হন। চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চলের ১৫ হাজার পরিবার প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, জেলার ডিমলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ১০ গ্রামের প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এসব পরিবারের মধ্যে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে বলে জানান তিনি।

জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ও শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ৮ গ্রামের সাত হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, আমন ধান, শাকসবজি, পুকুরের মাছ ও ফসলি জমি। এতে ক্রমেই বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার, ৭টায় ১২ সেন্টিমিটার ও রাত ৮টায় ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়।

তিনি বলেন, সোমবার সকাল ৯টা থেকে তিস্তার পানি ৫২ দশমিক ১২ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছেন, যা বিপদসীমা থেকে ৩ সেন্টিমিটার কম। বন্যার পানি সামাল দিতে ব্যারাজে ৪৪টি জলকপাট (স্লুইস গেট) খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সতর্ক রয়েছে কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পানি বাড়ায় পাউবো রেড অ্যালার্ট জারি করতে বাধ্য হয়।

Source link

Related posts

৭ দফা দাবিতে রানা প্লাজার শ্রমিকদের সমাবেশ

News Desk

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে ময়মনসিংহের ৩০টি বধ্যভূমি-গণকবর

News Desk

বগুড়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৭ লাখ ৪৬ হাজার পশু

News Desk

Leave a Comment