Image default
বাংলাদেশ

তরুণদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, বই পড়েন-পড়ান

‘মন হোক ঋদ্ধ, জ্ঞানে হই সমৃদ্ধ’— এ স্লোগান নিয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সীমান্তবর্তী মঠবাড়ী ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি বাজারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া খালেদ হাসান স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। গড়ে তুলেছেন উন্মুক্ত পাঠাগার ও ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। যেখানে তরুণরা নিজেরা পড়েন এবং অন্যজনকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করছেন।

গ্রামের ছেলে শহরের কলেজে ভর্তি হয়েই পার্থক্যটা চোখে পড়ে খালেদ হাসানের। লক্ষ্য করেছিলেন, কলেজের বন্ধুরা একাডেমিক বইয়ের বাইরে নানা ধরনের বই পড়েছেন। এ জায়গাতেই পিছিয়ে আছে তার গ্রামের স্কুলের বন্ধুরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর কীভাবে এই দূরত্ব কমিয়ে আনা যায়, এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেন তিনি।

সেই ভাবনা থেকেই বন্ধুদের সঙ্গে ভাবনাটা ভাগাভাগি করার পর কেউ কেউ বুদ্ধি দিলেন, একটা লাইব্রেরি করার কথা। কিন্তু সে তো অনেক টাকার ব্যাপার। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেননি তিনি। বন্ধুদের নিয়েই খালেদ শুরু করেন বইবিনিময় কার্যক্রম। পোড়াবাড়ী স্কুলের পাশের একটি দোকানে বই রাখতে শুরু করেন তারা। ১২টি বই দিয়ে শুরু করা এই কার্যক্রমে ক্রমেই বাড়তে থাকে পাঠক। সাহস পান খালেদ হাসান। একসময় বয়োজ্যেষ্ঠদের চোখে পড়ে এ কার্যক্রম।

এই কার্যক্রমের নাম দেওয়া হয়েছে স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে ৫০০টি বই নিয়ে এখন চলছে উন্মুক্ত লাইব্রেরির কার্যক্রম। উন্মুক্ত লাইব্রেরিটির পাঠক সংখ্যা এখন ৪৫০। যাদের বেশিরভাগই স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী। এটি সম্ভব করেছে স্বপ্নবিলাসের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। নানা কারণে যারা উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে আসতে পারেন না, তারা সপ্তাহে একবার ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থেকে বই নেওয়ার সুযোগ পান। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরাই পরিচালনা করেন এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি।

বই পড়া কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশি সংস্কৃতি রক্ষায়ও কাজ করছে এই সংগঠন। মৃৎশিল্প, পিঠাপুলির মেলা, বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমও পরিচালনা করেন। স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশন এলাকার চিত্র পাল্টে দিয়েছে উন্মুক্ত পাঠাগার ও ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির মাধ্যমে। এ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার প্রবণতা এখন অনেকটাই বেড়েছে বলে আশা করেন তারা।

স্বপ্নবিলাস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা খালেদ হাসান বলেন, আমরা আমাদের প্রজন্মকে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করতে চাই। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা বাড়লেই সেটি সম্ভব। বই মনকে যেমন ঋদ্ধ করে, তেমন জ্ঞানেও করে সমৃদ্ধ। তাই বই নিয়ে আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে আমাদের গ্রামের শিক্ষার্থীদের ইংরেজির দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করার ইচ্ছে আছে বলেও জানান তিনি।

Related posts

টিকা চুরিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

News Desk

শিক্ষাবর্ষের সময় কমছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের

News Desk

দৌলতদিয়ায় অপেক্ষায় কয়েক হাজার যানবাহন, দুর্ভোগ

News Desk

Leave a Comment