জলাবদ্ধতার মধ্যেই চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম
বাংলাদেশ

জলাবদ্ধতার মধ্যেই চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম

বৃষ্টি হলেই নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকা তিন ফুট পানির নিচে চলে যায়। জমে থাকা পানি বের করার সুযোগ নেই। দিনের পর দিন হাসপাতাল চত্বরে জমে থাকা পানির কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসক, নার্স, রোগী, স্বজন ও কর্মচারীদের। সেই সঙ্গে সাপের উৎপাত বাড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মাঠে জমে থাকা পানি শুকাচ্ছে না। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাসপাতালের মূল ভবনসহ নতুন বিল্ডিং, স্টাফ কোয়ার্টার, মসজিদ, করোনা ইউনিটসহ পুরো এলাকা পানিতে টইটম্বুর। স্টাফ কোয়ার্টারের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টি হলেই হাসপাতালের প্রধান ফটক (গেট) থেকে জরুরি বিভাগ পর্যন্ত যেতে পানি মাড়িয়ে অতিকষ্টে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে নারী-শিশু-বয়ষ্কদের চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে এই সামান্য (৪০ ফুট) পথ পাড়ি দিতে রিকশা ভাড়া নিচ্ছেন। নার্স ও অন্যান্য কর্মী যারা স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন তারাও বাসা ও হাসপাতালে যাতায়াতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে রিকশা ব্যবহার করছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের মুশরত এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘দুই দিন ধরে হাসপাতালে এসে পানি ডিঙিয়ে চলাচল করছি। এত বড় হাসপাতালের এমন দুরবস্থা। এখানে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। পানি বের করার কোনও চেষ্টাই নেই। তার ওপর রাতে সাপ ঢুকছে। মশাও উৎপাত করছে।’

কোলের শিশুকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার গৃহিণী আরাফা বেগম বলেন, ‘অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে পানির কারণে আরেক ভোগান্তিতে পড়েছি। অটো থেকে নেমে দেখি, গেটের পরই হাঁটুপানি। বাধ্য হয়ে রিকশা নিতে হলো জরুরি বিভাগে যেতে। এ টুকুর জন্য অতিরিক্ত ৪০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। অনেকে পানি মাড়িয়েই যাচ্ছে। নোংরা পানিতে নামায় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে।’

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালটি সড়ক থেকে প্রায় ৩ ফুট নিচু হওয়ায় চারপাশের পানি এসে এখানে জমে। আর ড্রেন দিয়ে পানি বের হয়ে যে গর্তে পড়ে সেটা ভরাট হয়ে গেছে। তা ছাড়া শহরের ও হাসপাতালের ড্রেনগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানিপ্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে পানি জমেছে তাতে রোগী, স্বজন, চিকিৎসকসহ সবাই দুরবস্থার শিকার। এই পানি নিষ্কাশন না হয়ে উল্টো ড্রেন দিয়ে বাইরের পানি ভেতরে ঢুকে পড়েছে। যা সহজে বের করে দেওয়া যাচ্ছে না। তাৎক্ষণিক কোনও ব্যবস্থা করার সুযোগ নেই। রোগীরা বেশ কষ্ট করে আসছেন। আমরা চেষ্টা করছি, জরুরি বিভাগসহ ভর্তি রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দিতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাপের উৎপাতও বেড়েছে। ইতোমধ্যে নয়টি সাপ মারতে হয়েছে। জলবদ্ধতা স্থায়ী হলে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে।’

তিনি পৌর মেয়রসহ জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

Source link

Related posts

এক বাঘা আইড় মাছ ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি

News Desk

কয়রায় ১১ পয়েন্ট দিয়ে ঢুকেছে পানি, আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষ

News Desk

‘বিজয়ী হলে পোশাকশ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণ করবো’

News Desk

Leave a Comment