অধিক পুষ্টি ও ঔষধি গুণসম্পন্ন রঙিন মিষ্টি আলুর তিনটি জাত উদ্ভাবন করে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের একদল গবেষক। জাত তিনটি সাধারণ আলুর চেয়ে তিন গুণ বেশি ফলনশীল। প্রতিটি গাছে মিলবে এক থেকে দেড় কেজি আলু। ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া যাবে। চাষ করা যাবে সারা বছর। এসব আলু খাওয়ার ফলে ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কাজ করবে বলে জানালেন গবেষক ও চিকিৎসকরা।
নতুন উদ্ভাবিত আলুর জাতগুলোর নাম হলো- ‘বাউ মিষ্টি আলু-৭, ৮ ও ৯’। গবেষক দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আরিফ হাসান খান।
গবেষক দল জানায়, পেরু থেকে বীজ এনে পাঁচ বছরের গবেষণায় বাজারে পাওয়া মিষ্টি আলু থেকেও অধিক পুষ্টি ও ওষুধি গুণসম্পন্ন নতুন রঙিন আলুর তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছেন অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান ও তার সহযোগী নবীন গবেষকরা।
এ বিষয়ে গবেষক অধ্যাপক আরিফ হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের সদর দফতর পেরুর রাজধানী লিমা থেকে বীজ এনে পলিক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হয়। এরপর পাঁচ বছরের গবেষণায় মিষ্টি আলুর রঙিন তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়। সেগুলো চাষ করে সফলতা পাওয়া যায়। উদ্ভাবিত জাতের আলুতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্থোসায়ানিন, কেরাটিন ও ফাইবার রয়েছে। এসব আলু দেখতে বেগুনি, কমলা ও গোলাপি রঙের। এগুলো নিয়মিত খেলে ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। নতুন জাতের আলুগুলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
গবেষক দলের সহযোগীরা জানান, গবেষণাকাজের সঙ্গে জড়িত থেকে তারা অনেত ধারণা পেয়েছেন। সেইসঙ্গে গবেষণার প্রক্রিয়াও জেনেছেন। এই জাতের আলু সারা বছর চাষযোগ্য। ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। তিনগুণ বেশি ফলন পাওয়া যায়। এই আলুর চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন তারা। এই আলু চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনি ইউনিট-২-এর প্রধান ডা. খুরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উদ্ভাবিত নতুন জাতের মিষ্টি আলুগুলোতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্থোসায়ানিন, কেরাটিন ও ফাইবার থাকায় মানবদেহে ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’