কুড়িগ্রামে আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি, শঙ্কায় কৃষকরা
বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামে আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি, শঙ্কায় কৃষকরা

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে চরাঞ্চলের ফসল ডুবছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে জেলায় বন্যার পূর্বাভাস নেই।

পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত ধরলার পানি কিছুটা কমলেও, রাতে বেড়েছে। শুক্রবার (১০ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানিও বাড়ছে। একই সময়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। হু হু করে বাড়তে থাকা তিস্তার পানি কিছুটা স্লথ হয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। আগামী দুই-তিন দিন ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে।

এদিকে পানি বাড়তে থাকায় তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলের কৃষি আবাদ নিয়ে আবারও শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে বাদাম ও পাট নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের হায়বৎ খাঁ, গনাই, রামহরি মৌজার চাড়ির কোলা, রামহরির চর, গাবুর হেলানের চর ও চর তৈয়ব খাঁ’সহ রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চর ও নিম্নাঞ্চলের বাদাম ও পাট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে এখনও হুমকিতে শতাধিক বসতি

রাজাহাটের বিদ্যানন্দ ইউপির বাদাম চাষি আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘পানি খুব বাড়ন্ত। বাদামক্ষেত পানিতে তলায় গেছে। কী করবো বুঝতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে সামান্য বাদাম তুলতে পারছি। এখনও দেড় একর জমিতে বাদাম আছে। সামান্য কিছু জেগে আছে, বাকি জমিতে পানি উঠছে। পানিতে বাদাম তোলার জন্য লোক লাগায় দিছি। এলাকাত সব বাদাম চাষির একই অবস্থা।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত ও উজানে সীমান্তবর্তী ভারতীয় অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পূর্বাভাস নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী কয়েকদিন ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা থাকলেও, কুড়িগ্রামে এই নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস নেই। ব্রহ্মপুত্র নদেরও পানি বাড়বে, তবে বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই। ফলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বন্যারও কোনও পূর্বাভাস নেই।’

তিস্তা অববাহিকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও তা মেরামতে কাজ চলছে জানিয়ে পাউবো নির্বাহী প্রকৌশী বলেন, ‘জেলায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নদী ভাঙন রোধে কাজ চলছে। প্রচুর পরিমাণ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনও জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্ততি রয়েছে।’

Source link

Related posts

রসের লিচুতে রঙিন চিরিরবন্দর

News Desk

মধ্যরাতে ফাঁকা শহীদ মিনার এলাকা

News Desk

ডুবে গেছে বাড়িঘর, রাস্তায় চলছে নৌকা

News Desk

Leave a Comment