Image default
বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সীমান্তে ‘রেড অ্যালার্ট’

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করাই, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে নজরদারি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে । এর মধ্যে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের অনেকের শরীরেই সংক্রমণ ধরা পড়ছে। অধিক সংক্রমণশীল ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের রোগীও শানাক্ত হচ্ছে। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন বৈধ এবং অবৈধ পথে মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শংকা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন বৈধপথে যারা ফিরছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু যারা অবৈধপথে ফিরছেন তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। কাজেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এখনই সীমান্তে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা প্রয়োজন। বুধবারও ভারত ফেরত ১১ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। এগুলো ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট কি না তা নিয়ে পরীক্ষা চলছে।

দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বৈধ স্থলবন্দর ছাড়াও দুই দেশের বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকা। এখনও অনেক এলাকা আছে একটি বাড়ির ভেতর দিয়ে সীমান্ত রেখা গেছে। এর সব স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। এসব জেলায় স্থলবন্দর ব্যতীত অন্য পথে লোক ঢুকছে বলেও শুনেছি। তবে এ বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর সিভিল সার্জন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পরিচালকদের সঙ্গে বুধবার সভা করেছি। সভায় জেলাগুলোর প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়াতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন বলেন, সীমান্তে নিশ্ছিদ্র তদারকি বাড়াতে হবে। বিশেষ করে আসা-যাওয়ার বৈধ পথগুলো ছাড়া পুরো সীমান্ত এলাকায় ‘রেড অ্যালার্ট’জারি করতে হবে। যাতে সীমান্তরক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে কেউ দেশে আসতে না পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত ভারতে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার না কমছে ততদিন এটা অব্যাহত রাখা যেতে পারে। এছাড়া বৈধ প্রক্রিয়ায় যারা ভারত থেকে আসবে তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার পাশাপাশি নমুনা জিনোম সিকুয়েন্সিং করতে হবে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীন বলেন, দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং যশোর জেলায় ৩ থেকে ৪ জন ভারত ফেরত যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। যেকোনো সময় করোনার পূর্ণ সংক্রমণ শুরু হতে পারে। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি-১৬১৭ আমাদের দেশে এখন পাওয়া যাচ্ছে। এটা ভাবনার বিষয়।

শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, বৈধ বা অবৈধ যে পথেই ভারত থেকে মানুষ আসুক না কেন তাদের অবশ্যই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি যশোরে যে দুজনের শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তারা কোয়ারেন্টিনে ছিলেন এবং ৫ দিন পরে তাদের শরীরে লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেই সময়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করে তাদের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় এবং সঙ্গে জিনোম সিকুয়েন্সিং করে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিশ্চিত হয়। এ থেকেই বোঝা যায় যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন কতটা জরুরি।

Related posts

রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতি বছর ৩০ হাজার শিশুর জন্ম

News Desk

নারায়ণগঞ্জ অগ্নিকাণ্ডে ৪৯ মরদেহের একটিও শনাক্ত করা যায়নি

News Desk

৬ শতাধিক এলএসডি সেবনকারী ডিবির নজরে

News Desk

Leave a Comment