৩৮ মণের ‘মহারাজাকে’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আপেল
বাংলাদেশ

৩৮ মণের ‘মহারাজাকে’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আপেল

চলন, ভাবভঙ্গি, খাওয়া, আরাম ও পরিচর্যা সবই মহারাজার মতো। প্রতিদিন খাবার লাগে দেড় হাজার টাকার। দিনে চার বার গোসল করাতে হয়। গোসলে দামি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হয়। এসব কারণে আদর করে গরুটির নাম ‘মহারাজা’ রেখেছেন মালিক।

৩৮ মণ ওজনের মহারাজা জেলার সবচেয়ে বড় গরু, এমন দাবি মালিকের। দাম চাওয়া হয়েছে ২২ লাখ টাকা। গরুটি ঘিরে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। প্রতিদিন মহারাজাকে দেখতে আসছেন মানুষজন।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে মহারাজাকে লালনপালন করছেন চিরিরবন্দর উপজেলার ঘুঘুরাতলী বাজারের খামারি আপেল আহমেদ। গত বছর মহারাজাকে বিক্রির জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসায় তখন ক্রেতার সংকট ছিল। এ জন্য বিক্রি না করে বাড়িতে ফিরিয়ে  আনেন। বর্তমানে গরুটি লম্বায় ১০ ফুট এবং উচ্চতায় ছয় ফুট। 

প্রতিদিন সবুজ কাঁচা ঘাস, ভেজানো ছোলা, সরিষা, খৈল, মিষ্টি কুমড়া, খড়, কালাই ভুসি, গমের ভুসি, কুঁড়া ও আটাসহ নানা পুষ্টিকর খাবার খায় মহারাজা। দিনে চারবার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হয়। ঘরে সার্বক্ষণিক চলে ফ্যান। মশা যাতে না কামড়ায় সে জন্য স্প্রে করা হয়।

আপেল আহমেদ বলেন, ‘মহারাজার বয়স পাঁচ বছর পার হয়েছে। গত কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য অনলাইনে চেষ্টা করেছি। শেষমেষ ঢাকায় নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে ক্রেতা কম ছিল। ফলে প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বাড়িতে ফেরত আনতে হয়েছে। প্রতিদিন গরুটির খাবার ও যাবতীয় খরচ মিলে দেড় হাজার টাকা ব্যয় হয়। আগে ১২০০ টাকার মধ্যে হয়ে যেতো। কিন্তু কোরবানিকে কেন্দ্র করে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। ফলে খরচ বেড়েছে। গত এক বছরে গরুর পেছনে খরচ হয়েছে সাড়ে চার লাখ টাকা। এবার ২২ লাখ টাকা বিক্রি করতে চাই। কিন্তু এবার বিক্রি করতে পারবো কিনা সে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কারণ দিন দিন খরচ বাড়ছে।’

মহারাজাকে খাবার দেয়া, গোসল করানো, শুকনো কাপড় দিয়ে গা মুছে দেওয়াসহ বিভিন্ন পরিচর্যার জন্য নিয়োজিত আছেন নিতাই রায়। তিনি বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমি গরুটির সেবাযত্ন করে আসছি। সকাল, দুপুর, বিকাল ও রাত মিলে দিনে পাঁচ বার খাওয়াতে হয়। দুপুরের আগে, বিকালে, সন্ধ্যা ও রাতে গোসল করাতে হয়। সবসময় মশা-মাছিমুক্ত ও গোয়াল পরিষ্কার রাখতে হয়। গরুর যাতে গরম না লাগে সেজন্য সার্বক্ষণিক ফ্যান চালানো থাকে। গরুটি শান্ত প্রকৃতির।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দেখে শহর থেকে গরুটি দেখতে গেছেন প্রলয় কান্তি রায়। তিনি বলেন, ‘এত বড় গরু দেখার বড় ইচ্ছে ছিল। তাই দেখতে এলাম। আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী। বড় গরু দেখার ইচ্ছে ছিল খুব।’ 

চলতি বছর জেলার ১৩ উপজেলায় গরুর খামার আছে প্রায় ৬০ হাজার। পাশাপাশি ব্যক্তিগত বা পারিবারিকভাবে অনেক কৃষক গরু লালনপালন করেছেন। এবার দুই লাখ ৫৮ হাজার ১০০টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ও মহিষ রয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৮৬৯টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন, ‌‘সব উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা প্রাকৃতিকভাবে গরু মোটাতাজা করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এবার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকটি বড় গরু রয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত ৩৮ মণ ওজনের মহারাজা।

Source link

Related posts

ভালোবাসা দিবসে ফুল বিক্রি করায় দোকান ভাঙচুর, বসন্তবরণ অনুষ্ঠান স্থগিত

News Desk

নেত্রকোণায় খাবার রেখেই পালালেন বরসহ অতিথিরা

News Desk

ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশের মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু, উৎসবের আমেজ

News Desk

Leave a Comment