Image default
বাংলাদেশ

স্ত্রীকে টুকরো করে ডোবায় ফেলে স্বামী বললো করোনায় মারা গেছে

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অন্যজনের সঙ্গে প্রেমের সন্দেহে দ্বিতীয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মো. রাসেল। সেই সঙ্গে লাশ টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে রেখে বরফ করে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী হাসপাতালে মারা গেছে বলে প্রচার করে। কয়েকদিন পর মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে আত্মগোপনে চলে যায়।

ঘটনার ১০ মাস পর বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেখানো ডোবা থেকে কয়েক টুকরো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার রাসেল (২৯) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ঝুমুরগঞ্জ গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তার স্ত্রী নিহত তানজিনা আক্তার (২৮) একই উপজেলার বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের কথা জানিয়েছেন পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘গত ৫ এপ্রিল ফতুল্লার মাসদাইর বাড়ৈভোগ এলাকার ডোবা থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মস্তক উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করা হয়। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। দায়িত্ব পেয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করি আমরা।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলার আলামত বলতে আমাদের কাছে ছিল অজ্ঞাত এক নারীর খণ্ডিত মস্তক। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ওই নারীর স্বামী অর্থাৎ রাসেলের কথা জানতে পারি আমরা। ঘটনার পর থেকে রাসেল অনেকগুলো মোবাইল ও সিম পরিবর্তন করেছে। ফলে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে আমাদের ১০ মাস সময় লেগেছে। রাসেলকে গ্রেফতারের পর স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। সেই সঙ্গে লাশ টুকরো টুকরো করে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেওয়ার কথা জানায়। রাসেল দাবি করেছে তানজিনা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী সাভারে থাকে। তারা দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মাসদাইর বাড়ৈভোগ এলাকায় বসবাস করে আসছিল।’ 

গ্রেফতারের পর রাসেল পিবিআইকে জানিয়েছে, গত ২৯ মার্চ শবে বরাতের রাত ৩টার দিকে বাসায় এসে রাসেল দেখে তানজিনা মোবাইল ফোনে কথা বলছেন। ওই দিন রাসেলের মৃত বোনের জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তানজিনা। এ নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তানজিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে রাসেল। পরদিন বাসায় অবস্থান করে। ৩০ মার্চ রাতে বটি দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দেয়। ৪ এপ্রিল লাশের টুকরোগুলো বাড়ির ছাদ থেকে ডোবায় ফেলে দেয়।’

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাসেলের দেওয়া তথ্যমতে ফতুল্লার মাসদাইর বাড়ৈভোগ এলাকার ওই ডোবায় খোঁজাখুঁজি করে কয়েক টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। বাকি অংশগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটি, যে ফ্রিজে লাশের টুকরো রাখা হয়েছিল সেগুলো উদ্ধার করেছি আমরা।’

পিবিআইয়ের নারায়ণগঞ্জের উপপরিদর্শক (এসআই) শাকিল হোসেন বলেন, ‘রাসেল তার স্ত্রীর দেহ কয়েক টুকরো করে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। পরে বাড়িওয়ালা সিরাজ খানকে জানায় তানজিনা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে। এরপর বাসা ছেড়ে চলে যায়। রংপুর থেকে রাসেলকে গ্রেফতারের পর জানায়, মাথাটি যে ডোবায় পাওয়া গেছে সেখানে দেহের বাকি টুকরোগুলো রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডোবায় খোঁজাখুঁজি করে তানজিনার দেহের কয়েক টুকরো উদ্ধার করা হয়।’

Source link

Related posts

ঐতিহ্যবাহী ‘গুটিদাড়া’ খেলা দেখতে দর্শকদের ঢল

News Desk

‘আ.লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না’

News Desk

ছাদের শাকসবজি বেচে ফারহানার মাসে আয় ৩০ হাজার

News Desk

Leave a Comment